অবশেষে হানিপ্রীত গ্রেপ্তার

হানিপ্রীত ইনসান
হানিপ্রীত ইনসান

অবশেষে ৩৮ দিন পর ধরা পড়লেন ধর্ষণের মামলায় সাজা পাওয়া ভারতের হরিয়ানার স্বঘোষিত ধর্মগুরু রাম রহিম ইনসানের ‘দত্তক কন্যা’ হানিপ্রীত। আজ মঙ্গলবার হরিয়ানা পুলিশ চণ্ডীগড় থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে।

হানিপ্রীতের বিরুদ্ধে পুলিশ দেশদ্রোহিতার অভিযোগ এনেছে। অভিযোগ, দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর রাম রহিমকে নিয়ে দেশ ছাড়ার চক্রান্তও করেছিলেন তিনি। আর অভিযোগ, হরিয়ানা, পাঞ্জাব ও দিল্লির বিস্তীর্ণ এলাকায় যে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে, এর পেছনেও ছিল হানিপ্রীতের হাত।

হানিপ্রীত ধরা পড়লেন, নাকি ধরা দিলেন, আজ সারা দিন এটাই ছিল আলোচনার বিষয়। জল্পনার কারণ, ধরা পড়ার আগে দিনভর বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে দেওয়া তাঁর সাক্ষাৎকার। এই সাক্ষাৎকারগুলোয় তিনি বিস্ময় প্রকাশ করে বলেছেন, বাবা ও মেয়ের পবিত্র সম্পর্ককে কেউ কেউ কীভাবে নোংরা চোখে দেখে। তিনি বলেন, তাঁদের সম্পর্ক সম্পূর্ণ স্বাভাবিক।

সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতের বিচারপতির রায়ে রাম রহিম যেদিন দোষী সাব্যস্ত হন, সেদিন হানিপ্রীত হরিয়ানার পাঁচকুলা আদালতে ছিলেন। সেদিনই উত্তর ভারতের বিস্তীর্ণ এলাকায় সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। অভিযোগ, সেই তাণ্ডবের নির্দেশ নাকি হানিপ্রীতেরই দেওয়া। এ অভিযোগ অস্বীকার করে রাম রহিমের পালিত কন্যা সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘যেভাবে আমাকে উপস্থাপিত করা হচ্ছে, তাতে আমি নিজেই দুশ্চিন্তাগ্রস্ত। প্রবল মানসিক চাপে রয়েছি।’ তিনি বলেন, প্রশাসনের অনুমতি নিয়েই তিনি আদালত চত্বরে গিয়েছিলেন। অনুমতি নিয়েই রাম রহিমের সঙ্গে হেলিকপ্টারে উঠেছিলেন। আদালতের রায় শুনে ভেঙে পড়েছিলেন। হিংসাত্মক ঘটনার নির্দেশ দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।

৩৬ বছরের হানিপ্রীতের আসল নাম প্রিয়াঙ্কা তানেজা। বিশ্বাস গুপ্ত নামে একজনের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়েছিল। স্বামী ছিলেন রাম রহিমের ভক্ত ও ডেরা সচ সউদার একনিষ্ঠ কর্মী। রাম রহিমের নজরে পড়তে প্রিয়াঙ্কার দেরি হয়নি। এরপর ক্রমে ক্রমে তিনি রাম রহিমের ঘনিষ্ঠতম হয়ে ওঠেন। নতুন নাম হয় হানিপ্রীত। রাম রহিমের তৈরি মোট ছয়টি সিনেমার তিনিই ছিলেন নায়িকা। বিশ্বাস গুপ্তর অভিযোগ, ডেরায় তিনি নিজে রাম রহিমের সঙ্গে প্রিয়াঙ্কাকে ঘনিষ্ঠ অবস্থায় দেখেছেন। রাম রহিমের চাপেই জোর করে তাঁদের বিবাহবিচ্ছেদ ঘটানো হয়। এরপর থেকেই হানিপ্রীত স্বঘোষিত ধর্মগুরুর চব্বিশ ঘণ্টার সঙ্গী।