দার্জিলিং আবারও অশান্ত

পুলিশের নিহত উপপরিদর্শক অমিতাভ মালিকের মরদেহে সম্মান জানাচ্ছেন তাঁর সহকর্মীরা। ১৪ অক্টোবর, উত্তর চব্বিশ পরগনা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত। ছবি: আইএএনএস
পুলিশের নিহত উপপরিদর্শক অমিতাভ মালিকের মরদেহে সম্মান জানাচ্ছেন তাঁর সহকর্মীরা। ১৪ অক্টোবর, উত্তর চব্বিশ পরগনা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত। ছবি: আইএএনএস

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের পার্বত্য এলাকা দার্জিলিংয়ে ১০৭ দিন পর অনির্দিষ্টকালের বন্‌ধ্‌ প্রত্যাহারের ঘোষণা দিলেও আবারও অশান্ত হয়ে উঠেছে অঞ্চলটি।

গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার নেতা বিমল গুরুংকে গ্রেপ্তার করতে গিয়ে তাঁর সমর্থকদের হাতে পুলিশের এক উপপরিদর্শকের মৃত্যু ও মোর্চার পাঁচ সমর্থকের বাড়িতে আগুন দেওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে আবারও অশান্ত হয়ে উঠল দার্জিলিং।

গতকাল শনিবার দিবাগত রাতে পাতলেবাসে জনমুক্তি মোর্চার কার্যালয়ের কাছে পাঁচ সমর্থকের বাড়িতে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে।

জনমুক্তি মোর্চার অভিযোগ, আন্দোলন দমানোর জন্য সমর্থকদের বাড়ি পুলিশ আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে।

এদিকে পুলিশের দাবি, সমর্থকদের বাড়িতে রাখা তথ্য নষ্ট করতেই জনমুক্তি মোর্চা নিজেরা আগুন দিয়েছে। রাজ্যের পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেবও বলেছেন, মোর্চার সমর্থকেরাই তথ্য লোপাটের জন্য বাড়িঘর পুড়িয়ে দিয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার মোর্চা নেতা বিমল গুরুংকে গ্রেপ্তার করতে দার্জিলিং পুলিশের একটি দল লেপচা বস্তি এলাকার সিংলা জঙ্গলে অভিযান চালায়। পরদিন শুক্রবার সকাল ছয়টার দিকে পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে গুরুংপন্থীরা। পুলিশও গুলির পাল্টা জবাব দিলে বন্দুকযুদ্ধ শুরু হয়। এ সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে পুলিশের উপপরিদর্শক অমিতাভ মালিক (২৭) নিহত হন। আহত হন পুলিশের আরেক সদস্য। ঘটনাস্থল থেকে নদী সাঁতরে পালিয়ে যান বিমল গুরুং। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে নয়টি একে-৪৭ রাইফেল, ১ হাজার ১০০টি গুলি ও এক হাজার ডেটোনেটর উদ্ধার করে।

এদিকে পুলিশের উপপরিদর্শক অমিতাভের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে তাঁর পরিবারকে ১০ লাখ রুপি আর্থিক অনুদান দেওয়ার কথা ঘোষণা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি নিহত অমিতাভের স্ত্রীকে পুলিশে চাকরি ও তাঁর বাবাকে স্কুলে চাকরি দেওয়ার কথাও ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার।

পুলিশের উপপরিদর্শক অমিতাভ মালিক নিহত হওয়ার ঘটনার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে লেবং, পাতলেবাস ও লেপচা বস্তি এলাকায় পুলিশের টহল জোরদার করা হয়েছে। আজ রোববার সিআইডি ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত শুরু করেছে।

গত ১২ জুন থেকে বিমল গুরুংয়ের ডাকে পৃথক গোর্খাল্যান্ড রাজ্যের দাবিতে দার্জিলিংয়ে একটানা বন্‌ধ্‌ শুরু হয়। এ সময় হত্যা, যানবাহন ও সরকারি দপ্তরে আগুন দেওয়াসহ বিভিন্ন সহিংস ঘটনায় বিমল গুরুংসহ একাধিক নেতার বিরুদ্ধে মামলা করেছে রাজ্য সরকার। এরপর থেকেই আত্মগোপনে বিমল গুরুং। গত ২৭ সেপ্টেম্বর ১০৭ দিন বন্‌ধ্‌ শেষে দার্জিলিং থেকে অনির্দিষ্টকালের বন্‌ধ্‌ প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন তিনি।