১৩ বছরে মারা যাবে ৩ কোটি নবজাতক

বিশ্বে পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুমৃত্যুর হার অন্য যেকোনো সময়ের তুলনায় সবচেয়ে কম। জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফের প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে। ২০০০ সালে বিশ্বে বছরে প্রায় এক কোটি পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশু মারা যেত। ২০১৬ সালে এটি ৫৬ লাখে নেমে এসেছে।

তবে এ নিয়ে উচ্ছ্বাসিত হওয়ার কিছু নেই। কারণ আফ্রিকার সাব-সাহারা এবং দক্ষিণ এশিয়ায় পরিস্থিতির এখনো আশানুরূপ উন্নতি হয়নি। প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্বে দৈনিক গড়ে ১৫ হাজার শিশু মারা যায় এমন সব রোগে, যা প্রতিরোধ করা সম্ভব।

প্রতিবেদনে বলা হয়, শিশুমৃত্যুর বর্তমান হার অব্যাহত থাকলে ২০১৭ থেকে ২০৩০ সাল পর্যন্ত ১৩ বছরে বিশ্বে ৩ কোটি নবজাতক মারা যাবে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, এক থেকে পাঁচ বছরের শিশুর মৃত্যুর হার যে হারে কমেছে, নবজাতকের (জন্মের পর প্রথম ২৮ দিন) মৃত্যু সে হারে কমেনি। এখনো বিশ্বে দৈনিক গড়ে সাত হাজার নবজাতক মারা যায়।

১৯৯০ সালে বিশ্বে ১ কোটি ২৬ লাখ শিশু মারা গিয়েছিল। ২০০০ সালে বছরে প্রায় এক কোটি পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশু মারা গেছে। ২০১৫ সালে  বিশ্বে ৫৯ লাখ শিশু মারা গেছে। ২০১৬ সালে তা আরও কমে ৫৬ লাখে নেমে এসেছে। এদের বেশির ভাগ অপুষ্টি, নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া বা ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মারা যায়।

সাহায্য সংস্থাগুলো বলছে, এখনো অনেক কাজ বাকি রয়ে গেছে। কারণ শিশুমৃত্যুর হার দুই-তৃতীয়াংশের নিচে নামিয়ে আনার জাতিসংঘের লক্ষ্য এখনো অর্জিত হয়নি।

ইউনিসেফের জ্যেষ্ঠ জনসংখ্যাবিদ ড্যানজেন ইউ বলেন, সুখবর হচ্ছে, শিশুমৃত্যুর হার কমানোর ক্ষেত্রে ১৯৯০ সালের পর বিশ্বের অর্জন অসাধারণ। গত দশকগুলোতে বিনিয়োগের ফলে এই ফলাফল পাওয়া গেছে। তবে আরও অনেক কিছু অর্জন বাকি আছে। টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রার আওতায় অনেক দেশ প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী শিশুমৃত্যুর হার কমাতে পারেনি।

শিশুমৃত্যুর হারের দিক থেকে সবচেয়ে শোচনীয় অবস্থায় আছে সোমালিয়া। সেখানে জীবিত ভূমিষ্ঠ হওয়া প্রতি এক হাজার শিশুর মধ্যে ১৩৩টি শিশু মারা যায়। যুক্তরাজ্যের অবস্থা বেশ ভালো। সেখানে জীবিত ভূমিষ্ঠ হওয়া প্রতি এক হাজার শিশুর মধ্যে চারটি শিশু মারা যায়।

শিশুমৃত্যুর হার সবচেয়ে বেশি দক্ষিণ এশিয়ায় (৩৯ শতাংশ)। এরপর আছে যথাক্রমে আফ্রিকার সাব-সাহারা অঞ্চল (৩৮ শতাংশ)।