বিতর্কের মুখে সরে দাঁড়ালেন প্রীতি প্যাটেল

ইসরায়েল সংক্রান্ত বিতর্কের জেরে সরে দাঁড়িয়েছেন যুক্তরাজ্যর ডিএফআইডি মন্ত্রী প্রীতি প্যাটেল। ছবি: সংগৃহীত
ইসরায়েল সংক্রান্ত বিতর্কের জেরে সরে দাঁড়িয়েছেন যুক্তরাজ্যর ডিএফআইডি মন্ত্রী প্রীতি প্যাটেল। ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাজ্যের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন বিভাগ (ডিএফআইডি) সম্পর্কিত মন্ত্রী প্রীতি প্যাটেল পদত্যাগ করেছেন। বুধবার বিবিসি ও সিএনএনের খবরে বলা হয় ইসরায়েল সংক্রান্ত বিতর্কের জেরে নিজ পদ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন ডিএফআইডি মন্ত্রী প্রীতি প্যাটেল। গত সপ্তাহে প্রতিরক্ষামন্ত্রী মাইকেল ফ্যালনের পর গুরুত্বপূর্ণ এই মন্ত্রী সরে দাঁড়ালেন।

ইসরায়েলের লেজুড়বৃত্তি করার অভিযোগ উঠেছে ডিএফআইডি মন্ত্রী প্রীতি প্যাটেলের বিরুদ্ধে। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুসহ দেশটির গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক নেতা ও প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে তিনি গোপন বৈঠক করেন বলে অভিযোগ উঠেছে। গত সপ্তাহে প্রভাবশালী দৈনিক গার্ডিয়ানকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রীতি দাবি করেন, যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র দপ্তর বৈঠকগুলোর বিষয়ে জানত। কিন্তু পররাষ্ট্র দপ্তর জানায়, তারা এসব বৈঠকের বিষয়ে অবগত ছিল না। ইসরায়েলে নিযুক্ত যুক্তরাজ্যের দূতাবাসকেও এসব বৈঠকের বিষয়ে জানানো হয়নি।
প্যাটেলও নিজের ভুল স্বীকার করে বুধবার ক্ষমা চেয়েছেন। এতে বিতর্ক আরও জোরালো হয়েছে।

বিবিসি অনলাইনের খবরে বলা হয়, গত বছরে আগস্টে ছুটি কাটাতে পরিবার নিয়ে ইসরায়েলে যান প্রীতি প্যাটেল। ওই সময় দুই দিনে তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুসহ দেশটির প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সঙ্গে মোট ১২টি বৈঠক করেন। ওই সব বৈঠক থেকে ফিরে প্রীতি ইসরায়েলের সেনাবাহিনীর জন্য যুক্তরাজ্যের বৈদেশিক সাহায্যের অর্থ বরাদ্দ দেওয়ার সুপারিশ করেন। ১৯৮১ সালে সিরিয়ান ভূখণ্ড গোলান মালভূমি দখল করে নেয় ইসরায়েল। দখলকৃত এই ভূমিকে ইসরায়েলের বলে স্বীকার করে না যুক্তরাজ্য। প্রীতির সুপারিশ ওই সব গোপন বৈঠকের প্রভাব বলে মনে করা হচ্ছে।
এদিক আচরণবিধির চরম লঙ্ঘন দাবি করে বিষয়টিতে আনুষ্ঠানিক তদন্ত দাবি করেছে লেবার পার্টি। প্যাটেলকে পদত্যাগের আহ্বান জানিয়ে বিরোধী দল বলছিল, তিনি যা করেছেন তাতে পদত্যাগ করাটাই হবে যৌক্তিক পরিণতি।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসনকে নিয়েও চাপের মুখে আছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে। বেফাঁস মন্তব্য করে তুমুল বিতর্কের সৃষ্টি করেছেন বরিস জনসন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির কাছে তিনি বলেন, ইরানে আটক ব্রিটিশ নাগরিক নাজানিন জাগহারি-র‍্যাটক্লিফ সে দেশে সাংবাদিকতার প্রশিক্ষণ দিচ্ছিলেন। তাঁর এ মন্তব্যকে নাজানিনের বিরুদ্ধে বিচারে নতুন প্রমাণ হিসেবে হাজির করেছে ইরান। এ কারণে ক্ষুব্ধ হয়েছে নাজানিনের পরিবার। চাপের মুখে জনসন গত মঙ্গলবার সংসদে ক্ষমা চেয়েছেন।
ইরানি বংশোদ্ভূত নাজানিন জাগহারিকে সরকার পতনের ষড়যন্ত্রের দায়ে ২০১৬ সালের এপ্রিলে আটক করে তেহরান। নাজানিন থোমাস রয়টার্স ফাউন্ডেশন এবং বিবিসির আন্তর্জাতিক উন্নয়ন দাতব্য সংস্থা ‘মিডিয়া অ্যাকশন’-এর জন্য কাজ করতেন। এর আগে লিবিয়ার সমুদ্রসৈকতের লাশগুলো পরিষ্কার করা গেলে সেখানে বিনিয়োগের ভালো সুযোগ তৈরি হবে মন্তব্য করে সমালোচনার ঝড় তোলেন জনসন।