শেখ হাসিনা আমাদের বড় বন্ধু: মমতা
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, এই বন্ধন এক্সপ্রেস দুই দেশের ঐক্য, সংহতি এবং ভাষার সংহতি আরও দৃঢ় করবে। বন্ধন আমাদের বন্ধন আরও দৃঢ় করবে। আজ বৃহস্পতিবার কলকাতা-খুলনার মধ্যে যাত্রীবাহী ট্রেন বন্ধন এক্সপ্রেসের উদ্বোধনী যাত্রার অনুষ্ঠানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ কথা বলেন।
মমতা বলেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের বড় বন্ধু। শেখ হাসিনাকে তিনি কলকাতায় আসারও আমন্ত্রণ জানান। জয়বাংলা এবং জয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলে মমতা তাঁর ভাষণ শেষ করেন।
ভারত-বাংলাদেশের মৈত্রী বন্ধন আরও দৃঢ় করতে কলকাতা-খুলনার মধ্যে ৫২ বছর পর আজ ৯ নভেম্বর থেকে ফের নিয়মিত চালু হলো যাত্রীবাহী ট্রেন বন্ধন এক্সপ্রেস। বেলা ১১টা ৫ মিনিটে কলকাতার আন্তর্জাতিক কলকাতা রেল স্টেশন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই ট্রেন যাত্রার উদ্বোধন করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরে সবুজ পতাকা নেড়ে এই ট্রেন যাত্রার সূচনা করা হয়। ১০ কামরার এই এক্সপ্রেস ট্রেনটি পুরোটাই শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত।
সকালে কলকাতা রেল স্টেশনে (সাবেক চিৎপুর রেলস্টেশন) এ উপলক্ষে এক বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন ভারতের লোকসভার রেলের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতায় বাংলাদেশের উপ হাইকমিশনার তৌফিক হাসান, বিধায়ক মালা সাহা, পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজার শ্রী হরেন্দ্র রাও, শিয়ালদহ ডিভিশনাল ম্যানেজার বাসুদেব পাণ্ডা, সহ রেলের অধিকর্তারা।
ভারতের লোকসভার রেলের স্থায়ী সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যান সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, এই ট্রেন যাত্রার মাধ্যমে আমাদের দুই দেশের বন্ধন আরও দৃঢ় হওয়ার বার্তা দিল। আমরা দুই দেশ আরও কাছে আসব। কলকাতায় বাংলাদেশের উপহাইকমিশনার তৌফিক হাসান বলেন, এই রেল যোগাযোগ ভারত ও বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার হবে। বন্ধুত্ব দৃঢ় করবে।
জেনারেল ম্যানেজার শ্রী হরেন্দ্র রাও বলেন, আজ থেকে নতুন যাত্রা শুরু হলো বন্ধন এক্সপ্রেসের। ট্রেনটি সপ্তাহে এখন একদিন বৃহস্পতিবার চলবে। এই ট্রেনের থাকছে ৪৫৬ আসন। এর মধ্যে ৩১২ এসি চেয়ার এবং ১৪৪ প্রথম শ্রেণী এসি। কলকাতা খুলনার মধ্যে দূরত্ব ১৭২ কিলোমিটার। এর মধ্যে বাংলাদেশে পড়েছে ৯৫ কিলোমিটার ও ভারতে পড়েছে ৭৭ কিলোমিটার। কলকাতা থেকে খুলনা যেতে বা খুলনা থেকে কলকাতায় আসতে সময় লাগবে ৪ ঘণ্টা ৫০ মিনিট। কলকাতা থেকে ট্রেনটি ছাড়বে সকাল ৭-১০ মিনিটে। আর খুলনা থেকে ছাড়বে দুপুর ১-২০ মিনিটে। এই ট্রেনের অভিবাসন এবং শুল্ক সংক্রান্ত কাজ হবে কলকাতা ও খুলনা স্টেশনে।
কলকাতা ও ঢাকার মধ্যে বর্তমানে চলাচলকারী’ মৈত্রী এক্সপ্রেস’ ট্রেনেরও শুল্ক ও অভিবাসন এখন থেকে হবে কলকাতা এবং ঢাকার ক্যান্টনমেন্ট স্টেশনে। আজ কলকাতা স্টেশনে নতুনভাবে তৈরি শুল্ক ও অভিবাসন দপ্তরেরও আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করা হয়। এতে আজ থেকে মৈত্রী এক্সপ্রেসের অভিবাসন ও শুল্ক সংক্রান্ত কাজ উঠে গেল ভারতের গেদে ও বাংলাদেশের দর্শনা স্টেশন থেকে।
১৯৬৫ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের পর খুলনা-কলকাতার মধ্যে চলাচলকারী যাত্রীবাহী ট্রেন বন্ধ হয়ে যায়। দীর্ঘ ৫২ বছর পর সেই ট্রেনই আজ সেই পথেই নতুন রূপে চালু চালু হয়েছে আজ।
গত ৮ এপ্রিল এক ইঞ্জিনযুক্ত ৫ কামড়ার বাতানুকুল এই ট্রেনটি খুলনার রেল স্টেশন থেকে পরীক্ষামূলক ভাবে কলকাতা পর্যন্ত চালানো হয়।
এর আগে ঢাকা-কলকাতার মধ্যে ২০০৮ সালের ১৪ এপ্রিল বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন থেকে চালু হয়েছিল যাত্রীবাহী আন্তর্জাতিক ট্রেন মৈত্রী এক্সপ্রেস। পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ কর্মকর্তা রবি মহাপাত্র জানিয়েছেন, কলকাতা-খুলনার মধ্যে চলাচলকারী এই বন্ধন এক্সপ্রেস ট্রেনটি বেনাপোল-পেট্রাপোল সীমান্ত হয়ে যশোর হয়ে খুলনা যাবে। যদিও কলকাতা-ঢাকার মধ্যে চলাচলকারী মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেনটি গেদে-দর্শনা সীমান্ত হয়ে যমুনা সেতু পার হয়ে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট রেল স্টেশনে যাচ্ছে।
প্রথম পর্যায়ে বন্ধন এক্সপ্রেস ট্রেনটি সপ্তাহে একদিন চলবে। ট্রেনটিতে মোট ১০টি এসি কোচ থাকছে। থাকছে এসি কেবিন ও চেয়ার কার। থাকছে ৪৫৬ যাত্রীর বসার ব্যবস্থা। ট্রেনটিতে প্যান্ট্রি কারও থাকবে।