উনকে উৎখাত করবে উ. কোরিয়ার জনগণই

কিম জং-উন
কিম জং-উন

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বা চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং কিংবা রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন হয়তো উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উনের চিন্তার কারণ হতে পারেন। তবে পুরোনো একটি প্রবাদ আছে, আলোর নিচেই অন্ধকার। এ ক্ষেত্রেও কথাটা খাটে। উত্তর কোরিয়ার জনগণই দেশটির শাসকগোষ্ঠীর বড় মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠতে পারে।

উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক কর্মসূচির কারণে সৃষ্ট আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক উত্তেজনা নিরসনে সবাই পিয়ংইয়ংয়ের ওপর চাপ সৃষ্টির কথা বলছে। কিন্তু দেশটির ভেতরে কী ঘটছে, সেদিকে কারও নজর নেই।

চলতি বছরের শুরুর দিকে জাতিসংঘ জানায়, উত্তর কোরিয়ার ৪৪ লাখ মানুষ ক্ষুধাপীড়িত। এ সংখ্যা দেশটির মোট জনগোষ্ঠীর এক-পঞ্চমাংশ। দুই দশকের কম সময় আগে উত্তর কোরিয়ায় দুর্ভিক্ষে ৩০ লাখ মানুষ অনাহারে মারা যায়।

উত্তর কোরিয়া থেকে পালিয়ে যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমিয়েছেন জিহাইয়ুন পার্ক। বর্তমানে ম্যানচেস্টারে বসবাসকারী এই ব্যক্তি বলেন, সহ্যসীমার শেষ প্রান্তে দাঁড়িয়ে আছে সবাই। প্রিয় নেতা, মহান দেশের প্রতি ৬০ বছর ধরে আস্থা রেখে এসেছে উত্তর কোরিয়ার জনগণ। কিন্তু বিনিময়ে কিছুই পায়নি। এভাবে বেঁচে থাকতে থাকতে তারা এখন ক্লান্ত। জিহাইয়ুনের মতে, কিম জং-উন হয়তো কর্তৃত্বপরায়ণ শক্তিগুলো ও বাকি বিশ্বের হাত থেকে বেঁচে যাবেন। কিন্তু তিনি নিজের জনগণকেই ভুলে গেছেন।

কিম জং-উন পারমাণবিক শক্তিধর হয়ে ওঠায় ব্রতী হয়েছেন। তিনি হয়তো মনে করছেন, জনগণের মধ্যে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে এই অস্ত্রের খুব প্রয়োজন। কিন্তু তিনি খেয়ালই করছেন না, উত্তর কোরিয়ার জনগণ আগে যেমন বাধ্যগত ছিল, এখন আর তেমন নেই। বহির্বিশ্বের সঙ্গেও যোগাযোগ বাড়ছে দেশটির জনগণের। ফলে সরকারি প্রচারণা আর কাজে আসছে না।

ম্যানচেস্টারের জিহাইয়ুনের মতো গত দশকে হাজারো মানুষ উন্নত জীবনের আশায় উত্তর কোরিয়া থেকে পালিয়েছে। এই মানুষেরা ফাইটার্স ফর ফ্রি নর্থ কোরিয়ার মতো সংগঠন গড়ে তুলেছে। এই সংগঠন ইউএসবি ড্রাইভ, ডিভিডি ও গণতন্ত্রপন্থী লেখা স্লোগান বেলুনে বেঁধে উত্তর কোরিয়ায় ফেলে। আর অবৈধ চ্যানেলে বহির্বিশ্বের খবর পৌঁছে যায় সেখানে। কাজেই তাদের সক্রিয় হয়ে ওঠা সময়ের ব্যাপার।