মেঘালয় থেকেও ক্ষমতা হারাচ্ছে কংগ্রেস?

আইনি যুদ্ধে এবার উত্তর-পূর্ব ভারতের মেঘালয় থেকেও ক্ষমতা হারাতে পারে কংগ্রেস। বিষয়টি এখন রাজ্যপালের বিবেচনাধীন। উচ্চ আদালত জানিয়ে দিয়েছেন, রাজ্যপাল ইচ্ছে করলেই ১৭ জন বিধায়কের সদস্যপদ খারিজ করতে পারেন। তাহলে ৬০ সদস্যের মেঘালয় বিধানসভায় বর্তমানে ৩০ সদস্যের কংগ্রেস পরিষদীয় দল সংখ্যালঘু হয়ে পড়বে।

আগামী ফেব্রুয়ারিতে কমিউনিস্ট-শাসিত ত্রিপুরার সঙ্গে কংগ্রেস-শাসিত মেঘালয়েও বিধানসভার নির্বাচন। কিন্তু তার আগেই ক্ষমতা হারাতে পারে কংগ্রেস। পার্লামেন্ট সেক্রেটারি নিয়োগ নিয়ে মেঘালয় হাইকোর্টের নির্দেশে এমনই সম্ভাবনার সৃষ্টি হয়েছে। বরখাস্ত হতে পারেন ১৭ জন বিধায়ক। আর সেটা হলেই পতন ঘটবে মুকুল সাংমার নেতৃত্বাধীন কংগ্রেস সরকারের। তাই সবার চোখ এখন রাজভবনের দিকে।

গত সপ্তাহে মেঘালয় হাইকোর্টের এক রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে ঘটনার সূত্রপাত। মেঘালয় হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি দীনেশ মহেশ্বরী এবং বিচারপতি বেদপ্রকাশ বৈশ্য তাঁদের রায়ে বলেছেন, পার্লামেন্ট সেক্রেটারি পদটি অবৈধ এবং নিয়োগও অসাংবিধানিক। এই পদে থাকার ফলে বিধায়কদের সদস্য পদ থাকবে কি না, সেটা রাজ্যপালের বিচার্য বলেই তাঁরা মন্তব্য করেন। হাইকোর্টের এই নির্দেশের পরই পার্লামেন্ট সেক্রেটারিরা ইস্তফা দেন। কিন্তু তাঁদের সদস্য পদ থাকবে কি না, সে বিষয়ে এখনো রাজ্যপাল গঙ্গা প্রসাদ কোনো রুলিং দেননি।

রাজ্যপালের কার্যালয় রাজভবন সূত্রের খবর, মেঘালয় সরকার বা বিধানসভা থেকে এখনো এ বিষয়ে কোনো সুপারিশ রাজ্যপালের কাছে যায়নি। গেলে রাজ্যপাল নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত নেবেন।

প্রসঙ্গত, জনৈক মাদল সামেরের জনস্বার্থ মামলার পরিপ্রেক্ষিতেই হাইকোর্টের এই নির্দেশ। মাদল সামেরের মতে, এই বিধায়কদের সচিব পদে নিয়োগ অবৈধ, এটা প্রমাণিত। তাঁরা নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হয়েও লাভজনক পদে যোগ দিয়ে নিয়মভঙ্গ করেছেন। তাই তাঁদের অবিলম্বে বরখাস্ত করতে হবে। উচ্চ আদালতের নির্দেশমতো, সংবিধানের ১৯২ ধারা মতে রাজ্যপালেরই তাদের বরখাস্ত করা উচিত বলে মাদল সামারের দাবি।

অন্যদিকে বিতর্কিত বিধায়কদের আইনজীবী সুজি দে পাল্টা দাবি করেন, বিধায়ক পদ খারিজের দাবি হাস্যকর। কারণ, বিধায়কেরা আদালতের নির্দেশ মেনে নিজেরাই ইস্তফা দিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী মুকুল সাংমাও তাঁদের ইস্তফা গ্রহণ করেছেন।

মুখ্যমন্ত্রী মুকুল সাংমার দাবি, পার্লামেন্ট সেক্রেটারি পদ মোটেই লাভজনক পদের আওতায় পড়ে না। ফলে, সদস্য পদ খারিজের প্রশ্নই ওঠে না। কংগ্রেস আইনি লড়াই চালিয়ে যাবে বলে তিনি জানান।