মুগাবের স্ত্রীকে বহিষ্কার

জিম্বাবুয়ের প্রেসিডেন্ট রবার্ট মুগাবে ও তাঁর স্ত্রী গ্রেস। ছবি: রয়টার্স
জিম্বাবুয়ের প্রেসিডেন্ট রবার্ট মুগাবে ও তাঁর স্ত্রী গ্রেস। ছবি: রয়টার্স

জিম্বাবুয়ের প্রেসিডেন্ট রবার্ট মুগাবের স্ত্রী ফার্স্ট লেডি গ্রেস মুগাবেকে দেশটির ক্ষমতাসীন দল জিম্বাবুয়ে আফ্রিকান ন্যাশনাল ইউনিয়ন-প্যাট্রিয়টিক ফ্রন্ট (জানু-পিএফ) থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তিনি দলের পলিটব্যুরোর সদস্য ছিলেন; পাশাপাশি জানু-পিএফ ওমেনস লিগের প্রধান ছিলেন।

বিবিসি অনলাইনের প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশটির চলমান সংকট নিয়ে স্থানীয় সময় আজ রোববার বৈঠক করে জানু-পিএফের কেন্দ্রীয় কমিটি। ওই বৈঠকেই দল থেকে ফার্স্ট লেডি গ্রেসকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, জনগণের বিক্ষোভের মুখে আজকের বৈঠকে প্রেসিডেন্ট মুগাবেকে জানু-পিএফের প্রধানের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। দলীয় প্রধানের নতুন দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে দেশটির সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট এমারসন নানগাগওয়াকে। ১৯৮০ সাল থেকে জিম্বাবুয়ের ক্ষমতায় রয়েছেন ৯৩ বছর বয়সী প্রেসিডেন্ট রবার্ট মুগাবে।

বৈঠক শেষে দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ওবার্ট পফু বলেন, ‘আজ আমাদের ঐতিহাসিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রেসিডেন্ট মুগাবের স্ত্রী হওয়ার সুবাদে গ্রেস ও তাঁর সহযোগীরা দেশের বিপুল পরিমাণ সম্পদের অপব্যবহার করেছেন। তাঁরা সব সময় অবৈধ সুযোগ-সুবিধা নিয়েছেন। আজকের এ বৈঠক একটি নতুন যুগের সূচনা করবে; যা দেশ ও দলের জন্যও মঙ্গলের।’

এদিকে জানু-পিএফের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ অনলাইন ইনডিপেনডেন্টের প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রেসিডেন্ট মুগাবের স্ত্রী ফার্স্ট লেডি গ্রেস ও তাঁর সহযোগীদের বিরুদ্ধে সম্পদের অপব্যবহারের অভিযোগে মামলা করবে দল।

জিম্বাবুয়ে ওয়ার ভ্যাটেরানস অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান ও মুগাবের পদত্যাগের দাবিতে দেশব্যাপী শুরু হওয়া শোভাযাত্রার আয়োজক ক্রিস মুতসভাঙওয়া বলেছেন, প্রেসিডেন্ট মুগাবেকে জানু-পিএফের প্রধানের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। ফার্স্ট লেডি গ্রেসকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। ফার্স্ট লেডিসহ তাঁর সহযোগীদের বিরুদ্ধে সম্পদের অপব্যবহারের অভিযোগে মামলার পরিকল্পনা করছে দল।

ক্রিস মুতসভাঙওয়া আরও বলেন, জিম্বাবুয়ের প্রেসিডেন্টের পদ থেকে রবার্ট মুগাবেকে সরিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে জানু-পিএফ।

৯৩ বছর বয়সী মুগাবের দ্বিতীয় স্ত্রী গ্রেস মুগাবে। মুগাবের চেয়ে ৪০ বছরের ছোট গ্রেস ধীরে ধীরে ক্ষমতার প্রায় কেন্দ্রে চলে আসেন। ধারণা করা হচ্ছিল, মুগাবের অনুপস্থিতিতে কিংবা মারা গেলে দেশটির প্রেসিডেন্ট হওয়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে এগিয়ে ছিলেন গ্রেস মুগাবে।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, দুই সপ্তাহ আগে প্রেসিডেন্ট মুগাবে তাঁর ভাইস প্রেসিডেন্ট এমারসন নানগাগওয়াকে বরখাস্ত করলে চলমান সংকটের সূচনা হয়। ভাইস প্রেসিডেন্ট নানগাগওয়াকে তাঁর সম্ভাব্য উত্তরসূরি মনে করা হচ্ছিল। কিন্তু ভাইস প্রেসিডেন্টকে বরখাস্ত করায় মুগাবে তাঁর স্ত্রী গ্রেসকে ক্ষমতায় বসানোর পরিকল্পনা করেন। এরপরই হয় রক্তপাতহীন ‘অভ্যুত্থান’। গত মঙ্গলবার মধ্যরাতে জিম্বাবুয়ের সেনাবাহিনী ক্ষমতার নিয়ন্ত্রণ নিলেও সেনাশাসন জারি করেনি। সংবিধান স্থগিত কিংবা প্রেসিডেন্টকেও পদচ্যুত করেনি। এমনকি সেনাবাহিনী শুরু থেকেই দাবি করছে, এই পদক্ষেপ কোনোভাবেই সরকারের নিয়ন্ত্রণ নেওয়া নয়।