হিসাবে ভুল করলেই সংঘাত

জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেফরি ফেল্টম্যান
জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেফরি ফেল্টম্যান

উত্তর কোরিয়ার পরমাণু সংকটকে বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে ভয়ানক নিরাপত্তা হুমকি হিসেবে অভিহিত করে জাতিসংঘ বলেছে, এ নিয়ে ‘হিসাব-নিকাশে’ কোনো ভুল করলে বড় ধরনের সংঘাত অনিবার্য হয়ে পড়তে পারে। এই সংঘাতের ঝুঁকি কমাতে যোগাযোগের দরজা উন্মুক্ত রাখতে হবে।

জাতিসংঘের রাজনৈতিক বিষয়ের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল জেফরি ফেল্টম্যান উত্তর কোরিয়া সফরে গিয়েছিলেন। গত মঙ্গলবার থেকে শুক্রবার তিনি পিয়ংইয়ংয়ে অবস্থান করেন। ২০১০ সালের পর এটি প্রথম কোনো জাতিসংঘ কর্মকর্তার উত্তর কোরিয়া সফর। তিনি এমন সময় সফরে যান, যখন যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়া কোরীয় উপদ্বীপে সামরিক মহড়া চালাচ্ছে।

সফর শেষে গত শনিবার জাতিসংঘের পক্ষ থেকে বিবৃতি দেওয়া হয়েছে। এতে ফেল্টম্যান বলেন, তিনি সফরকালে উত্তর কোরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী রি ইয়ং ও উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী পাক এমইয়ংয়ের সঙ্গে বৈঠক করেন। তাঁদের মূল আলোচনা হয়েছে পিয়ংইয়ংয়ের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে। আলোচনা থেকে তাঁর উপলব্ধি হচ্ছে, কোনো ‘ভুল হিসাব’ সংঘাতের কারণ হয়ে উঠতে পারে। তা এড়াতে যোগাযোগের দুয়ার সব সময় উন্মুক্ত রাখার জন্য উত্তর কোরিয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ফেল্টম্যান।

জাতিসংঘের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ফেল্টম্যান এবং রি ইয়ং একমত হয়েছেন, উত্তর সংকট এখন বিশ্বের সবচেয়ে বড় নিরাপত্তাঝুঁকি।

এর আগে উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা কেসিএনএ জানিয়েছিল, উত্তর কোরিয়ার পক্ষ থেকে জাতিসংঘ কর্মকর্তাকে বলা হয়, মার্কিন নীতি উত্তর কোরিয়ার প্রতি শত্রুভাবাপন্ন। তারা উত্তর কোরিয়াকে পরমাণু ব্ল্যাকমেল করতে চাইছে। এর কারণেই কোরীয় উপদ্বীপে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। তবে পিয়ংইয়ংও স্বীকার করেছে, বর্তমান পরিস্থিতি সবচেয়ে উত্তেজনাময়। জাতিসংঘের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ অব্যাহত রাখা এবং বিভিন্ন পর্যায়ের সফরের ব্যাপারে একমত হয়েছে উত্তর কোরিয়া।

নতুন নিষেধাজ্ঞা আসছে

উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে এককভাবে নতুন নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার পরিকল্পনা করছে দক্ষিণ কোরিয়া। দেশটির বার্তা সংস্থা ইয়োনহ্যাপ গতকাল রোববার এক প্রতিবেদনে বলেছে, আজ সোমবার উত্তর কোরিয়ার ব্যাংক, কোম্পানি, ১২ ব্যক্তিসহ প্রায় ২০টি প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা দেওয়া হতে পারে। বিতর্কিত পরমাণু কর্মসূচিতে অর্থের জোগান ও সহায়তা করছে এসব প্রতিষ্ঠান।

জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে সাম্প্রতিক সময়ে একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র ও পরমাণু পরীক্ষা চালিয়েছে উত্তর কোরিয়া। এ থেকে তাদের রুখতে জাতিসংঘও বিভিন্ন সময়ে দেশটির ওপর দফায় দফায় নিষেধাজ্ঞা-অবরোধ দিয়ে রেখেছে।

ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধের মহড়া

উত্তর কোরিয়া নিয়ে উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে জাপানের নৌ-প্রতিরক্ষা বাহিনী গতকাল জানিয়েছে, ক্ষেপণাস্ত্র রোখার প্রক্রিয়া রপ্ত করতে আজ সোমবার তারা যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে একটি যৌথ মহড়া চালাবে। এর আগে গত সপ্তাহে বড় ধরনের সামরিক মহড়া চালায় দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র। ওই মহড়াকে উসকানিমূলক অভিহিত করে উত্তর কোরিয়া বলেছিল, এতে যুদ্ধ এড়ানো কঠিন হতে পারে।