পুতিনবিরোধী নেতা নাভালনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে নিষিদ্ধ

আলেক্সেই নাভালনিক
আলেক্সেই নাভালনিক

রাশিয়ায় সরকারবিরোধী রাজনৈতিক নেতা আলেক্সেই নাভালনিকে আগামী বছরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কট্টর সমালোচক নাভালনিকে নির্বাচনে রুখতে সব চেষ্টা করছে দেশটির কর্তৃপক্ষ।

কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের বক্তব্য, দুর্নীতি মামলায় নাভালনির কারাদণ্ড হয়েছে। যে কারণে তিনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার যোগ্য নন। তবে নাভালনি এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলছেন, রাজনৈতিক কারণে তাঁকে দণ্ড দেওয়া হয়েছিল।

সম্প্রতি রাশিয়ার মোট ২০টি শহরে নাভালনির সমর্থকেরা তাঁর পক্ষে স্বাক্ষর সংগ্রহ করেন। আর মস্কোতে সমর্থকদের সমাবেশে তিনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, পুতিন খুবই বাজে প্রেসিডেন্ট। এরপরই নির্বাচন কমিশন তাঁকে অযোগ্য ঘোষণা করে।

কমিশনের সদস্য বরিস এবজিভ বলেন, নাগরিকদের মধ্যে যিনি বা যাঁরা অপরাধের দায়ে কারাদণ্ড ভোগ করেছেন, তাঁরা রুশ ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট পদের জন্য নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না।

এই সিদ্ধান্ত অবশ্য অনেকখানি প্রত্যাশিত ছিল। কারণ পুতিনের অন্যতম এই সমালোচকে নির্বাচনে আটকে দেওয়া হবে, তা আগে থেকেই ধারণা করা হচ্ছিল।

কমিশনের এই সিদ্ধান্তকে প্রত্যাখ্যান করে দেশব্যাপী বিক্ষোভের ডাক দিয়েছেন নাভালনি। এর পাশাপাশি নির্বাচন বর্জনের আহ্বান জানিয়েছেন। কারণ যে প্রক্রিয়ার প্রতি জনগণকে আহ্বান জানানো হচ্ছে, তা আর যা-ই হোক নির্বাচন নয়।

আর নাভালনির প্রচারণা শিবিরের কর্মকর্তা রুসলান শাভেদ্দিনোভ বলেছেন, ওই সাজা ছিল রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য। তাঁরা কমিশনের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করবেন।

সরকারবিরোধী আন্দোলনের জন্য নাভালনিকে গত জুনে গ্রেপ্তার এবং কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। ২০১১-১২ সালে পুতিনবিরোধী বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেওয়ার কারণে নাভালনিকে তিনবার জেল খাটতে হয়েছে। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে পুতিনের প্রতি শক্ত চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেওয়ার সক্ষমতা একমাত্র নাভালনিরই রয়েছে বলে মনে করা হয়।

বিবিসি জানায়, নির্বাচনে পুতিনের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে আরেকজন প্রার্থী আছেন, টিভির অনুষ্ঠান উপস্থাপিকা কসেনিয়া সোবচাক। সমাজের ওপরের মহলে তাঁর যোগাযোগ। নাভালনিসহ অনেকের ধারণা, কসেনিয়া মূলত ক্রেমলিনেরই ঘুঁটি।

২০১৮ সালের মার্চে রাশিয়ায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে।

২০০০ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত টানা দুই মেয়াদে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেন পুতিন। সাংবিধানিক বাধার কারণে ২০০৮ সালের নির্বাচনে অংশ নিতে পারেননি পুতিন। সেবার তাঁর অন্যতম সহযোগী দিমিত্রি মেদভেদেভ প্রেসিডেন্ট হন এবং পুতিন প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেন।