আসাম থেকে বাঙালি তাড়ালে আশ্রয় দেবেন মমতা

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রথম আলো ফাইল ছবি।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রথম আলো ফাইল ছবি।

আসাম থেকে বাঙালিদের বিতাড়িত করা হলে তাদের আশ্রয় দেবে পশ্চিমবঙ্গ। গতকাল মঙ্গলবার আলিপুরদুয়ার জেলার কামাখ্যাগুড়িতে এক সভায় এ ঘোষণা দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেছেন, এসব ব্যক্তিকে আসাম সীমান্তের আলিপুরদুয়ার ও জলপাইগুড়ি জেলায় আশ্রয় দেওয়া হবে।

আসামে বসবাসরত বাঙালিদের নাম নাগরিক তালিকায় না ওঠার ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘আসামে ৩ কোটি ৩৯ লাখ মানুষের নাগরিক পঞ্জি তৈরির কথা থাকলেও ১ কোটি ৩৯ লাখ মানুষের নাগরিক পঞ্জিতে নাম ওঠেনি। এটা আমরা মানব না, সেটা আগেই বলেছি। কারণ, এক রাজ্যের মানুষের আরেক রাজ্যে বসবাস করার অধিকার আছে। এটা তাঁদের স্বাধীনতা। তাই বলছি, আসাম থেকে কেউ এলে তাদের এই রাজ্যে আশ্রয় দেবেন।’

মমতা আলিপুরদুয়ার ও জলপাইগুড়ির বাসিন্দাদের উদ্দেশে বলেন, ‘আসাম থেকে কেউ অত্যাচারিত হয়ে এলে তাঁদের আশ্রয় দেবেন। তাঁদের ভালোবাসবেন। এটাই এই রাজ্যের সংস্কৃতি। মনে রাখবেন, আসাম ভালো থাকলে বাংলা ভালো থাকবে। বাংলা ভালো থাকলে আসাম ভালো থাকবে।’

ডুয়ার্সে হিন্দিভাষী প্রচুর মানুষের বাস। মমতা বলেছেন, আসাম থেকে বিতাড়নের ক্ষেত্রে যেন বাঙালি-বিহারিদের মধ্যে কোনো ভেদাভেদ না থাকে। আশ্রয় দেওয়ার ক্ষেত্রে যেন এর ব্যত্যয় না ঘটে।

পশ্চিমবঙ্গের পাশের রাজ্য আসামে সম্প্রতি প্রকাশ করা হয় আসামের রাষ্ট্রীয় নাগরিক পঞ্জির খসড়া। এতে উঠে এসেছে ১ কোটি ৯০ লাখ মানুষের নাম। যদিও আসামে নাগরিক পঞ্জির রাজ্য সমন্বয়ক প্রতীক হাজেলা সুপ্রিম কোর্টে আগেই জানিয়েছিলেন, দুই কোটি নাগরিকের আবেদনপত্রের যাচাই-বাছাই সম্পূর্ণ করা হয়েছে। ৩৮ লাখ মানুষের নথিপত্রে সামান্য ত্রুটি থাকার কারণে পুনঃপরীক্ষার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

এই নথি পেশের পর তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে ১ কোটি ৯০ লাখ মানুষের। ফলে এই খসড়া প্রকাশের পর তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে নওগাঁসহ বরাক উপত্যকার বাঙালিদের মধ্যে। দেখা যায়, বহু বাঙালির নাম ওঠেনি। বাদ পড়ে যাওয়া ব্যক্তিরা অভিযোগ তুলেছেন, বাঙালিদের আসাম থেকে বিতাড়নের পাঁয়তারা চলছে।