যুক্তরাষ্ট্রও আলোচনায় আগ্রহী

ডোনাল্ড ট্রাম্প
ডোনাল্ড ট্রাম্প

উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রও আলোচনায় আগ্রহী। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, সঠিক পরিস্থিতিতে পিয়ংইয়ংয়ের সঙ্গে আলোচনায় বসতে রাজি আছে ওয়াশিংটন। দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জে-ইনের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলার সময় তিনি এই আগ্রহ প্রকাশ করেন। মুন জে-ইন অবশ্য তার আগেই আলোচনার আগ্রহ প্রকাশ করেন।

দক্ষিণ কোরিয়ায় অনুষ্ঠেয় শীতকালীন অলিম্পিকে উত্তর কোরিয়ার অংশ নেওয়ার ব্যাপারে সিউল ও পিয়ংইয়ং মঙ্গলবার একটি চুক্তিতে পৌঁছায়। এরপর ডোনাল্ড ট্রাম্পের পক্ষ থেকে ওই ইতিবাচক সংকেত আসে। অথচ তিন মাস আগেও উত্তর কোরিয়ার কারণে সৃষ্ট সংকট নিরসনে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসনের তৎপরতার বিষয়ে ট্রাম্প বলেছিলেন, তিনি (টিলারসন) সময় অপচয় করছেন।

হোয়াইট হাউস গত বুধবার বলেছে, দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মঙ্গলবার টেলিফোনে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যকার আলোচনার অগ্রগতির বিষয়ে সংক্ষেপে অবহিত করেন। এ সময় ট্রাম্প বলেন, ‘সঠিক সময় ও সঠিক পরিস্থিতিতে’ উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে আলোচনায় তিনি রাজি। হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি সারাহ স্যান্ডার্স পরে এক বিবৃতিতে বলেন, টেলিফোনে কথোপকথনের সময় উত্তর কোরিয়ার ওপর সর্বোচ্চ চাপ বজায় রাখার বিষয়েও গুরুত্বারোপ করেন দুই নেতা।

উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক ও ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে গত বছরের পুরোটা সময় কোরীয় উপদ্বীপসহ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে উত্তেজনা চরমে ছিল। একই সঙ্গে কিম জং-উন ও ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাগ্‌যুদ্ধ আরও উত্তাপ ছড়ায়। এ ক্ষেত্রে আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে অনুষ্ঠেয় শীতকালীন অলিম্পিক কিছুটা হলেও উত্তেজনা নিরসনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। বিশেষ করে এই অলিম্পিকে উত্তর কোরিয়ার অংশগ্রহণের ইচ্ছা এবং দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের অপেক্ষাকৃত নমনীয় অবস্থান পরিস্থিতি উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে বলে মনে করছেন অনেক বিশ্লেষক। মঙ্গলবার এ–বিষয়ক আলোচনাটি ছিল দুই কোরিয়ার মধ্যে দুই বছরের মধ্যে প্রথম আলোচনা।

ওই চুক্তির পর গত বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘এটা কেবল শুরু। গতকালের (মঙ্গলবার) পদক্ষেপটা ছিল প্রথম। আমার ধারণা, আমরা একটা খুব ভালো সূচনা করতে পেরেছি।’ তিনি বলেন, ‘পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণের আলোচনায় উত্তর কোরিয়াকে আনতে হবে আমাদের। এটা হবে পরবর্তী পদক্ষেপ।’

তবে উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে আলোচনা অনুষ্ঠিত হওয়ার আগেই এর কৃতিত্ব দাবি করে বসেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। তিনি বলেন, ‘আমরা যদি সংশ্লিষ্ট না থাকতাম, তাহলে অলিম্পিক বিষয়ে তারা (উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়া) আলোচনায় বসত না।’ দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট অবশ্য ট্রাম্পের এই দাবিকে অস্বীকার করেননি। বুধবার তিনি বলেন, ‘আমার ধারণা, আন্তকোরীয় আলোচনার গুরুত্ব উপলব্ধিতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ভূমিকা অনেক বড় ছিল।’

এদিকে, আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির (আইওসি) প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বুধবার আলোচনায় বসেছিলেন আইওসিতে উত্তর কোরিয়ার সদস্য চ্যাং উং। এই আলোচনার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র বলেছে, উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়ার কর্মকর্তারা ২০ জানুয়ারি আইওসির সদর দপ্তরে সাক্ষাৎ করবেন পরবর্তী করণীয় নির্ধারণে।