ট্রাম্পের শান্তি পরিকল্পনা 'শতকের সেরা চড়'

মাহমুদ আব্বাস
মাহমুদ আব্বাস

জেরুজালেম প্রশ্নে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অবস্থানের পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিক্রিয়া কী হতে পারে, তা নির্ধারণে গতকাল সোমবার বৈঠকে বসেছিলেন ফিলিস্তিনের নেতারা। গত রোববার এই বৈঠক শুরু হয়। ওই দিন ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস বলেন, মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠায় ট্রাম্পের প্রচেষ্টা আসলে ‘শতকের সেরা চড়’।

বৈঠকে বসা নেতারা সবাই প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশনের (পিএলও) উচ্চ পর্যায়ের কমিটি প্যালেস্টিনিয়ান সেন্ট্রাল কাউন্সিলের সদস্য। ফিলিস্তিনের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে প্রতিনিধির সমন্বয়ে কাউন্সিলটি গঠিত। গত ৬ ডিসেম্বর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে একতরফা ঘোষণা দেওয়ার পর ওই বৈঠক ডাকা হয়। পিএলওর এই উচ্চ পর্যায়ের সদস্যরা বিশেষ কোনো ইস্যু ছাড়া সচরাচর বৈঠকে মিলিত হন না বলে এবারের বৈঠককে ‘বিরল’ বলা হচ্ছে।

ফিলিস্তিনিরা জেরুজালেমের দখলকৃত পূর্বাঞ্চলকে নিজেদের ভবিষ্যৎ সার্বভৌম রাষ্ট্রের রাজধানী হিসেবে চায়। বৈঠক শুরুর দিনে প্রেসিডেন্ট আব্বাস বলেন, ট্রাম্পের অবস্থানের অর্থ হলো, ইসরায়েলের সঙ্গে শান্তি আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্র আর মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকায় নেই। তিনি বলেন, ‘আমরা ট্রাম্পকে “না” বলেছি। আমরা আপনার (ট্রাম্পের) প্রকল্প গ্রহণ করব না।’

মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠায় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনকে আলোচনার টেবিলে নিয়ে আসারও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। শুধু তা-ই নয়, একটা ‘চূড়ান্ত চুক্তিতে’ পৌঁছানোর ব্যাপারেও তিনি প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। ২০১৪ সাল থেকে এই আলোচনা ঝুলে আছে। ট্রাম্প বলেছিলেন, এই চুক্তি হবে শতকের সেরা চুক্তি। এ ব্যাপারে মাহমুদ আব্বাস বলেন, ‘শতকের সেরা ওই চুক্তি আসলে শতকের সেরা চড়। আমরা তা গ্রহণ করব না।’ এ সময় তিনি শান্তিপ্রক্রিয়ায় আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতার আহ্বান জানান।

রোববার সন্ধ্যায় বৈঠকের উদ্বোধন করা হলেও প্যালেস্টাইন সেন্ট্রাল কাউন্সিলের প্রতিনিধিরা মূল আলোচনা শুরু করেন গতকাল সকালে। সন্ধ্যায় যৌথ বিবৃতি দেওয়ার মাধ্যমে এই বৈঠক শেষ হওয়ার কথা ছিল। এর আগে সর্বশেষ ২০১৫ সালে এই কাউন্সিল বৈঠক করে।

২০১৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় থেকেই ফিলিস্তিনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের অবনতি হচ্ছে। সর্বশেষ জেরুজালেম ঘোষণার পর ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে বন্ধন ছিন্ন করে। আগামী সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স এই অঞ্চল সফর করবেন। ধারণা করা হচ্ছে, মাহমুদ আব্বাস সে সময় পেন্সকে এড়িয়ে যাবেন।