সুন্দরবনের বাঘ গণনায় যৌথ উদ্যোগ

বিশ্বের ঐতিহ্যবাহী সুন্দরবনের বাঘের সংখ্যা গণনায় এবার বাংলাদেশ ও ভারত যৌথভাবে বাঘশুমারির উদ্যোগ নিয়েছে।

গতকাল সোমবার পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার ব্যাঘ্র প্রকল্পের অধীনে সজনেখালি রেঞ্জ কার্যালয়ে এই যৌথ বাঘশুমারির প্রশিক্ষণ কর্মসূচি শুরু হয়েছে। তিন দিনব্যাপী আয়োজিত এই প্রশিক্ষণ কর্মসূচি শেষ হবে আগামীকাল বুধবার।

যৌথ বাঘশুমারির প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছেন বাংলাদেশের বন বিভাগের চারজন বন কর্মকর্তা (ডিএফও)। আর পশ্চিমবঙ্গ থেকে আছেন প্রধান বনপাল রবিকান্ত সিংহ, ওয়াইল্ড লাইফ ইনস্টিটিউশন অব ইন্ডিয়ার বিজ্ঞানী কামার কুরেশি, ব্যাঘ্র প্রকল্প দপ্তরের মাঠ পরিচালক নীলাঞ্জন মল্লিক ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার বন বিভাগের ডিএফও তৃপ্তি সাহা প্রমুখ।

চলতি মাসের ২৫ বা ২৬ তারিখ থেকে প্রথম পর্যায়ের বাঘশুমারির কাজ শুরু হবে। তিনটি পর্যায়ে চলবে এই গণনা। তবে এবারের গণনা হবে সম্পূর্ণ সর্বাধুনিক বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে। পায়ের ছাপ দেখে আর বাঘ গণনা করা হবে না। আগে বাঘের গলায় রেডিও কলার লাগিয়ে অথবা জঙ্গলে ক্যামেরা ট্র্যাকিং করে বাঘশুমারি করা হতো। এবার সেই পদ্ধতি পরিবর্তন করা হয়েছে। এর পরিবর্তে বাঘের মল, মূত্র, গাছের গায়ে আঁচড়সহ অন্যান্য চিহ্ন সংগ্রহ করা হবে। ১ হাজার ৪১০টি আধুনিক ক্যামেরা লাগিয়ে বাঘের গতিবিধি রেকর্ড করা হবে। ১১ ফেব্রুয়ারি থেকে সুন্দরবনে প্রথম পর্যায়ে ক্যামেরা লাগানোর কাজ শুরু হবে। ইনফ্রারেড রশ্মি চালিত স্বয়ংক্রিয় ক্যামেরার মাধ্যমে বাঘের ওপর নজরদারি চালানো হবে। আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে এই বাঘশুমারির কাজ।

জানা গেছে, বাঘশুমারির জন্য ৪০টি দল গঠন করা হবে। প্রতি দলে চার থেকে পাঁচজন করে সদস্য থাকবেন।

বাংলাদেশের ডিএফও সাদিনুল হাসান সাংবাদিকদের বলেন, আগে বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন পদ্ধতিতে বাঘের গণনা হতো। এতে অনেক সময় সঠিক তথ্য পাওয়া যেত না। এবার সেই পদ্ধতি বাতিল করে দুই দেশ সর্বাধুনিক পদ্ধতি ব্যবহার করে বাঘের সঠিক সংখ্যা নির্ণয়ের উদ্যোগ নিয়েছে। তিনি বলেন, ২০১৫-১৬ সালে বাংলাদেশে প্রথম বাঘ গণনা হয়। তখন ১০৬টি বাঘের হদিস মিলেছিল।

বিজ্ঞানী কামার কুরেশি বলেন, সারা বিশ্বে বাঘের সংখ্যা বিচারে ভারত-বাংলাদেশ বিশ্বে পঞ্চম স্থান দখল করে আছে।