সাংবিধানিক বেঞ্চে নাম নেই সেই চার বিচারপতির

চার জ্যেষ্ঠ বিচারপতি কুরিয়েন জোসেফ, জে চেলামেশ্বর, রঞ্জন গগৈ ও মদন লোকুর l এনডিটিভির সৌজনে্য
চার জ্যেষ্ঠ বিচারপতি কুরিয়েন জোসেফ, জে চেলামেশ্বর, রঞ্জন গগৈ ও মদন লোকুর l এনডিটিভির সৌজনে্য

ভারতের প্রধান বিচারপতির সঙ্গে বিরোধে জড়িয়ে পড়া সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ চার বিচারপতিকে বাদ দিয়ে সাংবিধানিক বেঞ্চ গঠনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। গত সোমবার পাঁচজন বিচারপতির সমন্বয়ে এ বেঞ্চ গঠনের কথা ঘোষণা করা হয়।

এর এক দিন আগে সর্বোচ্চ আদালতের বিচারপতিদের বিরোধ নিয়ে বিচার বিভাগে সৃষ্ট নজিরবিহীন সংকট দু-তিন দিনেই মিটে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেছিলেন ভারতের বার কাউন্সিলের সভাপতি মনন কুমার মিশ্র। প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রর সঙ্গে ওই দিন সন্ধ্যায় বার কাউন্সিলের সাত সদস্যের একটি প্রতিনিধিদলের সাক্ষাৎ শেষে তিনি এ আশা ব্যক্ত করেন। বিরোধ নিষ্পত্তির উদ্যোগের অংশ হিসেবে প্রতিনিধিদল প্রধান বিচারপতির সঙ্গে ওই সাক্ষাৎ করে। তাঁরা সর্বোচ্চ আদালতের অন্য বিচারপতিদের সঙ্গেও দেখা করেছেন।

গত শুক্রবার চার জ্যেষ্ঠ বিচারপতি জে চেলামেশ্বর, রঞ্জন গগৈ, মদন লোকুর ও কুরিয়েন জোসেফ প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করে তাঁর বিরুদ্ধে নিরপেক্ষতা রক্ষা না করা ও পক্ষপাতের অভিযোগ তোলেন। সেই সঙ্গে মামলা বণ্টনে স্বচ্ছতা অবলম্বন না করারও অভিযোগ করেন। এ ছাড়া সুপ্রিম কোর্টের আরেক বিচারপতি বি এইচ লয়ার মৃত্যুর ঘটনায় জনস্বার্থে দায়ের করা মামলার বিষয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন তাঁরা। 

আদালত সূত্র জানায়, প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে সংবাদ সম্মেলন করে অসন্তোষ জানানো জ্যেষ্ঠ চার বিচারপতিকে বাদ দিয়ে যে সাংবিধানিক বেঞ্চ গঠন করা হলো তা দেশের অনেক গুরুত্বপূর্ণ মামলার ভাগ্য নির্ধারণ করবে।

রোববার প্রধান বিচারপতির সঙ্গে বার কাউন্সিলের প্রতিনিধিদলের বৈঠকের পরদিন সোমবার সকালে এক অনানুষ্ঠানিক বৈঠকে অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে ভেনুগোপাল দাবি করেন, বিচারপতিদের মধ্যকার নজিরবিহীন ওই দ্বন্দ্ব ‘মিটে গেছে’। অথচ গতকাল মঙ্গলবার নিজ বক্তব্যে ১৮০ ডিগ্রি মোড় নিয়ে তিনি বললেন, ‘আমি মানছি, বিচারপতিদের দ্বন্দ্বের সুরাহা হয়নি।’

প্রধান বিচারপতির পরপরই জ্যেষ্ঠ ওই চারজন বিচারপতিকে বাদ দিয়ে গঠিত সাংবিধানিক বেঞ্চের সদস্যরা হলেন প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্র, বিচারপতি এ কে সিক্রি, এ এম খানউইলকার, ডি ওয়াই চন্দ্রচুড ও অশোক ভূষণ।

সোমবার ঘোষিত সূচি অনুযায়ী, ১৭ জানুয়ারি অর্থাৎ আজ থেকে নতুন সাংবিধানিক বেঞ্চ সিদ্ধান্ত নেবে আধারের সাংবিধানিক বৈধতা নিয়ে, সমকামিতায় নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হবে কি না, সাবারিমালা মন্দিরে নারী প্রবেশে বাধানিষেধ থাকবে কি না এবং আইনপ্রণেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন হলে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার আগেই পদে অযোগ্য ঘোষণা করা হবে কি না, এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ মামলাগুলোর।

চার বিচারপতির সঙ্গে বৈঠক

এদিকে চলমান সংকট নিরসনে গতকাল মঙ্গলবার সেই চার বিচারপতির সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্র। মাত্র ১৫ মিনিটের ওই বৈঠকে কি ফলাফল হয়েছে তা জানা যায়নি। তবে বৈঠক সূত্রে বলা হয়েছে, সংকট নিরসনের উদ্যোগ শুরু হয়েছে।