কৈশোরের শুরু আর শেষ কখন

ছবি: বিবিসির সৌজন্যে
ছবি: বিবিসির সৌজন্যে

কৈশোরকালের বয়সসীমা নিয়ে নতুন করে চিন্তাভাবনার সময় বুঝি চলে এসেছে। এত দিনের প্রতিষ্ঠিত ধারণা অনুযায়ী কৈশোর শুরু হয় ১৩ বছর বয়স থেকে। আর প্রাপ্তবয়সে পদার্পণ ঘটে ১৯ বছর বয়সে। কিন্তু বিজ্ঞানীরা এখন বলছেন, এই ধারণা পরিবর্তনের সময় চলে এসেছে।

যুক্তরাজ্যভিত্তিক সাময়িকী ল্যানসেট চাইল্ড অ্যান্ড অ্যাডলসেন্ট হেলথ-এ এ-বিষয়ক একটি গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, কৈশোর এখন শুরু হয় ১০ বছর বয়সে। আর তা ২৪ বছর বয়স পর্যন্ত স্থায়ী হয়। দেরিতে বিয়ে এবং বিলম্বে সন্তান নেওয়ার কারণে এমনটা হচ্ছে।  তবে এই তত্ত্ব অনুসরণ করলে প্রাপ্তবয়স্ক তরুণেরা অবমূল্যায়িত হতে পারেন বলে সতর্ক করে দিয়েছেন আরেক দল বিশেষজ্ঞ।

গবেষণায় বলা হয়েছে, যে বয়স থেকে মস্তিষ্কের হাইপোথ্যালামাস অংশ পিটুইটারি ও গনাডাল গ্রন্থিকে সক্রিয় করতে বিশেষ হরমোন নিঃসরণ শুরু করে, তখন থেকেই বয়ঃসন্ধির শুরু। সাধারণত ১৪ বছর বয়স থেকে এই হরমোন নিঃসরণ শুরু হওয়ার কথা। কিন্তু উন্নত স্বাস্থ্যব্যবস্থা আর পুষ্টির কারণে বেশির ভাগ উন্নত দেশে তা শুরু হচ্ছে ১০ বছর বয়স থেকে। বিশ্বের অর্ধেক নারীর ক্ষেত্রেই এখন ঋতুস্রাব শুরু হয় ১২ অথবা ১৩ বছর বয়সে।

বিজ্ঞানীরা দাবি করেছেন, মস্তিষ্কের পরিণত হওয়ার কার্যক্রম ২০ বছর বয়সের পরও চলতে থাকে। বহু মানুষের আক্কেলদাঁত ২৫ বছর বয়সের পর গজায়।

গবেষণা নিবন্ধটির মূল লেখক অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে অবস্থিত রয়্যাল চিলড্রেনস হসপিটালের কিশোর স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পরিচালক অধ্যাপক সুসান সয়ার। তাঁর মতে, বর্তমান প্রেক্ষাপটে কৈশোরের বয়সসীমা ১০ বছর থেকে ২৪ বছর হওয়াই যুক্তিযুক্ত।

তবে যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব কেন্টের সমাজবিজ্ঞানী জ্যান ম্যাকভারিশ এই তত্ত্বের সঙ্গে একমত নন। তিনি বলেন, কিশোর আর তরুণের কাছে সমাজের প্রত্যাশা আলাদা। এ ক্ষেত্রে তাদের সহজাত দৈহিক বৃদ্ধি অগ্রগণ্য নয়।