'ট্রেন থেকে' প্রকাশককে তুলে নিল চীন

প্রকাশক গুই মিনহাই। ছবি: এএফপি
প্রকাশক গুই মিনহাই। ছবি: এএফপি

হংকংয়ের প্রকাশক ও সুইডিশ নাগরিক গুই মিনহাইকে চীনে ট্রেন থেকে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। বেইজিংগামী ওই ট্রেনে প্রকাশকের সঙ্গে থাকা দুজন সুইডিশ কূটনীতিকের সামনেই তাঁকে তুলে নেওয়া হয়েছে। চীনের কমিউনিস্ট নেতৃত্ব নিয়ে লেখা বইয়ের প্রকাশক ছিলেন তিনি। আজ মঙ্গলবার বিবিসি অনলাইনের খবরে এ তথ্য জানানো হয়।

খবরে বলা হয়, গত শনিবার ট্রেনটি হঠাৎ থামিয়ে সাদা পোশাকধারী কর্মকর্তারা তুলে নিয়ে যান প্রকাশককে। এর আগে ২০১৫ সালে থাইল্যান্ডে গুই মিনহাই উধাও হয়ে সংবাদ শিরোনামে আসেন। পরে তাঁকে হংকংয়ের আরও দুজন প্রকাশকের সঙ্গে চীনে দেখতে পাওয়া যায়। গত বছরের অক্টোবরে কারাগার থেকে মুক্ত হওয়ার পর তিনি চীনের নিংবো শহরে বসবাস শুরু করেন।

প্রকাশক গুই মিনহাইয়ের মেয়ে জানিয়েছেন, স্বাস্থ্য পরীক্ষার অংশ হিসেবে তাঁর বাবা সুইডিশ দূতাবাসে যাচ্ছিলেন। তাঁর বাবার স্নায়ুতান্ত্রিক রোগের কিছু উপসর্গ দেখা দিয়েছে এবং এ কারণে সুইডিশ চিকিৎসককে দেখাতে যাচ্ছিলেন। 

তবে প্রকাশকের ঘনিষ্ঠ এক সূত্র জানিয়েছে, নতুন সুইডিশ পাসপোর্টের জন্য গুই মিনহাইয়ের আবেদন করার কথা। এ-সংক্রান্ত কাজের জন্য হয়তো তিনি সুইডিশ দূতাবাসে যাচ্ছিলেন।

গুই মিনহাইয়ের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি। তবে এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সুইডেন সে দেশে চীনের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে পাঠিয়েছে।
ঘটনা সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু না জানালেও সুইডেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা বিষয়টি নিয়ে যথেষ্ট সতর্ক রয়েছে। এ ব্যাপারে উচ্চ রাজনৈতিক পর্যায় থেকে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। চীন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখা হয়েছে। তারা তাঁর অবস্থা সম্পর্কে জানাবে বলে আশ্বাস দিয়েছে।

এর আগে থাইল্যান্ড থেকে গুই মিনহাইয়ের উধাও হওয়ার ঘটনার সঙ্গেও চীনের জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠে। বলা হয়েছিল, আন্তর্জাতিক সীমানাজুড়ে নজর রাখা চীনের চরেরা বিচারবহির্ভূত কর্মকাণ্ডের আওতায় তাঁকে অপহরণ করে। যদিও চীন দাবি করে, গুই মিনহাইসহ চারজন স্বেচ্ছায় চীনে গিয়েছিলেন। এক দশকের বেশি সময় আগে এক সড়ক দুর্ঘটনায় জড়িত থাকার স্বীকারোক্তি জোর করে তাঁর কাছ থেকে আদায় করা হয় বলেও অভিযোগ রয়েছে।

এদিকে মানবাধিকার সংগঠনগুলোর মতে, ভিন্ন মতাবলম্বী শাসকগোষ্ঠীর কঠোর দমনের শিকার হয়েছেন ওই প্রকাশক।
যুক্তরাজ্যের কর্তৃত্ব থেকে হংকংকে ১৯৯৭ সালে চীনের কাছে হস্তান্তর করা হয়। হংকংয়ে স্বায়ত্তশাসনের ব্যবস্থা রয়েছে।