অ্যাসাঞ্জের স্বাস্থ্য ঝুঁকির মুখে

সেন্ট্রাল লন্ডনে ইকুয়েডরের দূতাবাসের ব্যালকনিতে জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ। ২০১৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারিতে সেখান থেকে মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলেন তিনি। ফাইল ছবি: এএফপি
সেন্ট্রাল লন্ডনে ইকুয়েডরের দূতাবাসের ব্যালকনিতে জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ। ২০১৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারিতে সেখান থেকে মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলেন তিনি। ফাইল ছবি: এএফপি

যুক্তরাষ্ট্র সরকারের অতি গোপনীয় অনেক নথি ফাঁস করা ওয়েবসাইট উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ যদি লন্ডনের ইকুয়েডর দূতাবাসে আরও সময় থাকেন, তাহলে তা তাঁর স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হয়ে দাঁড়াবে। নতুন করে স্বাস্থ্য পরীক্ষায় এই সতর্ক বার্তা দেওয়া হয়েছে বলে এএফপির খবরে জানানো হয়।

গত অক্টোবরে দুজন চিকিৎসক তিন দিন ধরে তাঁর ২০ ঘণ্টা পরীক্ষা–নিরীক্ষা করেন। গতকাল বুধবার গার্ডিয়ানের খবরে বলা হয়, তাঁরা অ্যাসাঞ্জের ব্যাপক শারীরিক ও মানসিক অবস্থার মূল্যায়ন করেন।

ওই দুই চিকিৎসক পত্রিকায় লিখেছেন, স্বাস্থ্য পরীক্ষার এই ফল চিকিৎসক ও রোগীর মধ্যে গোপন রয়েছে। কিন্তু আমাদের পেশাগত মতামত হলো, তাঁর এই বন্দিদশা তাঁর জন্য শারীরিক ও মানসিক ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াবে। আর এটি তাঁর স্বাস্থ্যরক্ষা অধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।

এ দুই চিকিৎসক হলেন বোস্টন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব মেডিসিন অ্যান্ড পাবলিক হেলথের চিকিৎসক ও সহযোগী অধ্যাপক সন্দ্রা ক্রসবি। অপরজন হলেন লন্ডনভিত্তিক ক্লিনিকের সাইকোলজিস্ট ব্রক কিশলম।

চিকিৎসকেরা বলেন, ‘আমাদের পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, তাঁর (অ্যাসাঞ্জ) সূর্যালোকে যাওয়ার সুযোগ নেই। সাড়ে পাঁচ বছর ধরে  তিনি যেখানে থাকেন,  সেখানে ঠিকমতো বায়ু চলাচল করে না।’

২০১৬ সালে উইকিলিকস অ্যাসাঞ্জের মেডিকেল রেকর্ড প্রকাশ করেছিল। সেখানে বলা হয়েছিল, উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতার মানসিক অবস্থা ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এভাবে যদি দূতাবাসে তাঁকে আরও সময় থাকতে হয়, তাহলে তাঁর মানসিক স্বাস্থ্যের অনেক বেশি অবনতি হবে।

অস্ট্রেলীয় বংশোদ্ভূত অ্যাসাঞ্জ যুক্তরাষ্ট্র সরকারের অতি গোপনীয় অনেক নথি ফাঁস করে দিয়ে ঝড় তোলেন। এর কিছুদিন পর সুইডেনে তাঁর বিরুদ্ধে এক নারী ধর্ষণের মামলা করেন। ওই মামলায় বিচারের জন্য যুক্তরাজ্য সরকার ২০১০ সালে তাঁকে সুইডেনের কাছে হস্তান্তর করতে যাচ্ছিল। শেষ মুহূর্তে লন্ডনে ইকুয়েডরের দূতাবাসে আশ্রয় নেন অ্যাসাঞ্জ। তাঁর বিরুদ্ধে আনা ধর্ষণের অভিযোগ থেকে গত বছরের মে মাসে তিনি অব্যাহতি পেয়েছেন।

সম্প্রতি তিনি ইকুয়েডরের নাগরিকত্ব পেয়েছেন। কিন্তু যুক্তরাজ্য সরকার বলেছে, এর ফলে অ্যাসাঞ্জের আইনি অবস্থার কোনো পরিবর্তন হবে না। গত বছর মার্কিন অ্যাটর্নি জেনারেল জেফ সেশনস বলেন, অ্যাসাঞ্জকে গ্রেপ্তারের বিষয়টিকে যুক্তরাষ্ট্র ‘অগ্রাধিকার’ দিচ্ছে।