জীবিত থাকার সব প্রমাণ আছে: ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট

মাইকেল তেমার
মাইকেল তেমার

বিষয়টা অনেক দিন মনে থাকবে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট মাইকেল তেমারের। তাঁর দেশের অবসর ভাতা প্রদানকারী কর্তৃপক্ষ মনে করেছিল, তিনি আর বেঁচে নেই। কেবল মনেই করেনি, তাঁর ভাতাও বন্ধ করে দিয়েছিল কর্তৃপক্ষ। শেষ পর্যন্ত গত শনিবার প্রেসিডেন্ট তেমার বলতে বাধ্যই হলেন, ‘আমি বেঁচে আছি।’

ঘটনার শুরু গত নভেম্বর মাসে। ওই মাসে প্রথমবারের মতো অবসর ভাতা বন্ধ হয়ে যায় ৭৭ বছর বয়সী এই নেতার। এরপর ডিসেম্বরেও ভাতা পাননি তিনি। কর্তৃপক্ষ বলেছে, মাইকেল তেমারের বেঁচে থাকার তথ্য তাদের কাছে না থাকায় ভাতা বন্ধ করে দেওয়া হয়।

ঘটনাটি ঘটেছে অবশ্য প্রেসিডেন্ট তেমারের ভুলেই। লাতিন আমেরিকার সবচেয়ে বড় দেশ ব্রাজিলে নিরবচ্ছিন্নভাবে অবসর ভাতা পেতে হলে প্রতিবছর নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে এই সুবিধাপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের প্রয়োজনীয় নথিপত্রসহ সশরীরে কর্তৃপক্ষের সামনে হাজির হতে হয়। এর ব্যত্যয় ঘটলে কর্তৃপক্ষ ধরে নেয়, অবসর ভাতাপ্রাপ্ত ব্যক্তিটি আর বেঁচে নেই। সে অনুযায়ী পদক্ষেপও নেয় তারা। বিষয়টা অনেকটা স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থার মতো। তথ্য সরবরাহ করতে ব্যর্থ হলে জীবিত ব্যক্তিকেও মৃত ধরে নেয় অবসর ভাতা প্রদানকারী কর্তৃপক্ষ। তেমার সশরীরে হাজির হতে না পারায় তাঁর ক্ষেত্রেও ব্যতিক্রম কিছু ঘটেনি। কিন্তু একজন প্রেসিডেন্টের ক্ষেত্রে ঘটনাটি অনাকাঙ্ক্ষিতই বলা যায়।

ব্রাজিলের টেলিভিশন নেটওয়ার্ক রেডেটিভিকে এক সাক্ষাৎকারে প্রেসিডেন্ট তেমার শনিবার বলেন, ‘আমার ক্ষেত্রে জীবিত থাকার প্রমাণ তো সুস্পষ্ট। আমি বলতে চাইছি, আমাকে তো প্রতিদিনই দেখা যায়।’ এরপর এই ত্রুটির জন্য আমলাতন্ত্রকে দায়ী করেন সহাস্য তেমার। তবে কর্তৃপক্ষের নেওয়া পদক্ষেপের পক্ষেও যুক্তি তুলে ধরেন তিনি। বলেন, ‘আমার ধারণা, সবার প্রতি সমান আচরণের অংশ হিসেবে এমনটা ঘটেছে।’ তেমারের এই কথার অর্থ ছিল, সাধারণ মানুষের ক্ষেত্রে যে পদক্ষেপ নেয় কর্তৃপক্ষ, তিনি প্রেসিডেন্ট হওয়া সত্ত্বেও তাঁর ক্ষেত্রে একই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

ব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট দিলমা রুসেফ ২০১৬ সালে অভিশংসিত ও অপসারিত হওয়ার পর দেশটির প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণ করেন মাইকেল তেমার। এর আগে তিনি দিলমার সরকারের ভাইস প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেন। সাম্প্রতিকতম জরিপের তথ্যমতে, তেমার তাঁর দেশের সবচেয়ে অজনপ্রিয় প্রেসিডেন্ট।

রেডেটিভিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তেমার তাঁর এই সংস্কার প্রস্তাবকে ব্রাজিলের অর্থনীতির জন্য জরুরি বলে উল্লেখ করেন।