আবার ফসকে গেল মেলানিয়ার হাত!

এক পর্নো তারকার সঙ্গে ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘যৌন কেলেঙ্কারি’র জেরে নাকি মার্কিন ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্প নাখোশ। এর জেরে ট্রাম্পের ঘর ছেড়েছেন মেলানিয়া—এমন কথাও শোনা যাচ্ছিল। গৃহদাহের পর ট্রাম্পের সংসার ভাঙার উপক্রমও নাকি হয়েছিল। সেই টানাপোড়েনের পর মুখ খোলেন মেলানিয়া। তবে এবার আবার ট্রাম্প-মেলানিয়া আলোচনায়। কারণ হলো হাঁটার সময় মেলানিয়ার হাত ধরতে গিয়ে ব্যর্থ হন ট্রাম্প। কারণ হাত সরিয়ে নেন মেলানিয়া। অপ্রস্তুত হয়ে পড়েন সব সময় নানা কারণে আলোচনায় থাকা মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এমন দৃশ্য সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

এবিসির খবরে বলা হয়, হোয়াইট হাউস থেকে ওহাইও যাবেন ট্রাম্প দম্পতি। সেখানে যাবেন মেরিন ওয়ানে চড়ে। মেরিন ওয়ানে ওঠার জন্য লম্বা হলুদ ওভারকোট দুই কাঁধে চাপিয়ে ট্রাম্পের সঙ্গে একসঙ্গে হাঁটছিলেন ফার্স্ট লেডি। এ সময় কোটের মধ্যে থাকা স্ত্রীর হাত ধরার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। কিন্তু খুঁজে পাচ্ছিলেন না মেলানিয়ার হাত। ওভারকোট দুই কাঁধে চাপানো মেলানিয়া হাত সরিয়ে নেন। মুহূর্তেই অপ্রস্তুত হয়ে পড়েন ডোনাল্ড ট্রাম্প। আর এ অপ্রস্তুত হয়ে পড়া ঠেকাতেই জনতার উদ্দেশে হাত নাড়তে থাকেন তিনি। কিন্তু এ দৃশ্য ধরা পড়ে যায়।

ট্রাম্প দম্পতির এমন অপ্রস্তুত হওয়ার দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি করেছে এনবিসি নিউজ চ্যানেলের ফটোসাংবাদিক। এনবিসি নিউজ চ্যানেলের সাংবাদিক স্বাভাবিকভাবেই খবরের জন্যই সেখানে অপেক্ষা করেছিলেন। তিনি ট্রাম্পের এম অপ্রস্তুত হওয়ার ভিডিও টুইটারে পোস্ট দেন। এরপরই খবরটি ছড়িয়ে পড়ে। কেন এমন হলো, এর নানান ব্যাখ্যা দাঁড় করাতে শুরু করেন সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ব্যবহারকারীরা।

তবে ট্রাম্পের হাত ফসকে যাওয়া এবারই প্রথম নয়। হাত ধরতে গিয়ে ফসকে যাওয়া বা বিভ্রান্তি এর আগেও হয়েছে। গত বছর মে মাসে প্রকাশ্যে মেলানিয়ার হাত ধরতে গিয়ে অপ্রস্তুত হয়ে পড়েছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইতালি সফরে বিমান থেকে নামার সময় তখনো মেলানিয়ার হাত ধরতে গিয়ে ‘ফসকে’ যায় ট্রাম্পের। সেদিন মেলানিয়া নিজের চুল ঠিক করতে ব্যস্ত ছিলেন।

গণমাধ্যমে খবর বের হয়, ২০০৬ সালে স্টর্মি ডেনিয়েলস নামে অভিনয় করা স্টেফানি ক্লিফোর্ড নামের এক পর্নো তারকার সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করেছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। কিন্তু ওই পর্নো তারকা যাতে বিষয়টি নিয়ে মুখ না খোলেন, সে জন্য গত বছর মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের মাস খানেক আগে এক আইনজীবীর মাধ্যমে তাঁকে ১ লাখ ৩০ হাজার ডলার দিয়েছিলেন ট্রাম্প। ২০০৬ সালে ক্লিফোর্ডের সঙ্গে ট্রাম্পের শারীরিক সম্পর্ক ছিল। এর এক বছর পরই ট্রাম্প মেলানিয়াকে বিয়ে করেন।

স্টর্মি ডেনিয়েলস নামে অভিনয় করা স্টেফানি ক্লিফোর্ড নামের ওই পর্নো তারকার দাবি, ট্রাম্পের আইনজীবী মাইকেল কোহেন ও হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে অস্বীকার করা হয়েছে।

মার্কিন ওই পর্নো তারকা দাবি করেন, তাঁর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক ছিল ট্রাম্পের। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে মুখ বন্ধ করার জন্য তাঁকে মোটা অঙ্কের অর্থ দেন ট্রাম্প। এ অর্থের পরিমাণ ১ লাখ ৩০ হাজার ডলার। ক্লিফোর্ড আরও দাবি করেন, যুক্তরাষ্ট্রের একটি নামী গলফ টুর্নামেন্টে তাঁর সঙ্গে ট্রাম্পের পরিচয় হয়েছিল। ২০০৬ সালে তাঁর সঙ্গে ডোনাল্ড ট্রাম্পের শারীরিক সম্পর্ক হয়। সেখানেই ওই কাণ্ড করেন ট্রাম্প।

ওই খবরকে শুধু রটনা বলে উড়িয়ে দিয়েছে হোয়াইট হাউস। হোয়াইট হাউসের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ওই ধরনের বহু খবর নির্বাচনের আগে প্রকাশিত হয়েছিল। সেসব গল্পেরই একটি আবার ছাপা হয়েছে।

ট্রাম্পের এ যৌন কেলেঙ্কারি প্রকাশের পর ফার্স্ট লেডির কার্যালয় থেকে ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল, সুইজারল্যান্ডের দাভোসে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামে (ডব্লিউইএফ) ট্রাম্পের সঙ্গে উপস্থিত থাকবেন মেলানিয়া ট্রাম্প। সে অনুযায়ী ২৫ জানুয়ারি তাঁর দাভোসে পৌঁছানোর কথা। ট্রাম্প দম্পতির ১৩তম বিবাহবার্ষিকীর দিনে সফরে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা দেন মেলানিয়া। এ নিয়েও গুজব ওঠে বিভিন্ন মহলে। শেষ মুহূর্তে ফার্স্ট লেডির কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে, ‘সময়সূচি আর যৌক্তিক কারণে’ ওয়াশিংটন ডিসিতেই থাকতে হচ্ছে মেলানিয়াকে।
বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামে ট্রাম্পের সঙ্গে যোগ না দিয়ে মেলানিয়া ফ্লোরিডায় অবকাশ যাপনে যান। তিনি এ জন্য অবশ্য ব্যস্ততাকে অজুহাত হিসেবে দেখান। অবকাশ যাপনের ২৮ ঘণ্টা পর হোয়াইট হাউসে ফেরেন মেলানিয়া। মেলানিয়া এসব খবরে বিরক্তও ছিলেন।
সম্প্রতি ক্যাপিটল হিলে স্টেট অব দ্য ইউনিয়ন ভাষণে প্রথা ভেঙে একাকী মেলানিয়াকে আসতে দেখা যায়।