মারা গেল নিঃসঙ্গ পাখিটি

পৃথিবীর নিঃসঙ্গতম পাখি নাইজেল মারা গেছে। মানা দ্বীপে পাথরের সঙ্গীর সঙ্গে। ছবিটি নিউজিল্যান্ডের বন্য প্রাণী সংরক্ষণ বিভাগের টুইটার থেকে নেওয়া।
পৃথিবীর নিঃসঙ্গতম পাখি নাইজেল মারা গেছে। মানা দ্বীপে পাথরের সঙ্গীর সঙ্গে। ছবিটি নিউজিল্যান্ডের বন্য প্রাণী সংরক্ষণ বিভাগের টুইটার থেকে নেওয়া।

নিউজিল্যান্ডের ওয়েলিংটন উপকূলের নির্জন দ্বীপ মানা। এখানে বাস করত গ্যানিট প্রজাতির এক সামুদ্রিক পাখি। ভালোবেসে তার নাম দেওয়া হয় নাইজেল। তার কোনো সঙ্গী ছিল না। এ জন্য তাকে বলা হতো পৃথিবীর নিঃসঙ্গতম পাখি। মৃত্যুতে তার সেই নিঃসঙ্গতার অবসান হলো।

মানায় সামুদ্রিক পাখির অভয়ারণ্য গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয় সত্তরের দশকে। সেখানে পাথরের তৈরি অনেকগুলো পাখি রাখা হয়। ব্যবস্থা করা হয় কৃত্রিম পাখির ডাকের। আশা ছিল, এসব দেখে সামুদ্রিক পাখিরা এখানে বসতি গড়ে তুলবে। হবে স্বপ্নের অভয়ারণ্য। পাখির ঝাঁক সেখানে আসেনি, তবে এসেছিল গ্যানিট প্রজাতির নাইজেল।

২০১৩ সালের দিকে নাইজেল এখানে আসে, একেবারে একা। তবে সঙ্গী হিসেবে পায় ৮০টি পাথরের পাখি। এদের সঙ্গেই সে থাকত, খেলা করত। এভাবে একদিন নিথর পাখির একটির প্রেমে পড়ে সে। সারাক্ষণ তার আশপাশে ঘুরঘুর করত। বাসাও বাঁধে পাশেই। এমনকি তার সঙ্গে অন্তরঙ্গ হওয়ার চেষ্টাও ছিল তার। সঙ্গীর কাছ থেকে সাড়া মেলেনি। তাতে কী! হাল ছাড়েনি সে। সঙ্গীর মন পাওয়ার চেষ্টা চালিয়ে গেছে আমৃত্যু। নাইজেলের নিথর দেহটা পড়ে ছিল পাথরের সঙ্গীর পাশেই।

নিউজিল্যান্ডের বন্য প্রাণী সংরক্ষণ বিভাগের রেঞ্জার ক্রিস বেল গভীর দুঃখের সঙ্গে নাইজেলের মৃত্যুর সংবাদ জানান। বলেন, ‘গত মাসের শেষের দিকে নাইজেলের মৃতদেহ পাওয়া যায়। বয়সের কারণে সে মারা গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে ময়নাতদন্তের পর এ ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যাবে।’ মানায় নাইজেলের কাটানো জীবন সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘সে যে এসেছিল, আর যায়নি। এখানেই থেকে গিয়েছিল। সুখ পেয়েছিল বলেই হয়তো সে এখান থেকে চলে যায়নি।’

ক্রিস বেল বলেন, গ্যানিট প্রজাতির পাখিগুলো বেশ সামাজিক হয়। তারা কীভাবে আর কোথায় বেঁচে থাকবে, সে সিদ্ধান্ত তারা নিজেরাই নেয়। নাইজেলও তার ব্যতিক্রম ছিল না।

পৃথিবীর নিঃসঙ্গতম পাখিটির মৃত্যুতে নিউজিল্যান্ডের বাসিন্দারা শোক ও দুঃখ প্রকাশ করছেন।