ক্ষমতা ছাড়তে জুমার ওপর আরও চাপ

জ্যাকব জুমা
জ্যাকব জুমা

দক্ষিণ আফ্রিকার ক্ষমতাসীন দল আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেসের (এএনসি) নেতা সিরিল রামাফোসাসহ দলটির শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তারা গতকাল শুক্রবার পূর্বনির্ধারিত কিছু কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেননি। এ ঘটনায় এমন ধারণা আরও দানা বেঁধেছে যে প্রেসিডেন্ট জ্যাকব জুমাকে গদি থেকে সরাতে তাঁর ওপর চূড়ান্ত পর্যায়ের চাপ সৃষ্টি করতেই এমন পদক্ষেপ নিয়েছেন তাঁরা।

২০০৯ সাল থেকে ক্ষমতায় থাকা প্রেসিডেন্ট জ্যাকব জুমার ওপর দুর্নীতির অভিযোগে জড়িয়ে পড়ার পর থেকে পদত্যাগের চাপ বাড়ছে। নিজ দল এএনসির ভেতর থেকেই এখন প্রচণ্ড রকম চাপের মুখে তিনি। এরই মধ্যে গত ডিসেম্বরে তাঁর স্থলে দলীয় প্রধানের দায়িত্ব পেয়েছেন ভাইস প্রেসিডেন্ট রামাফোসা।

গতকাল কেপটাউনে ইমেরিটাস আর্চবিশপ ডেসমন্ড টুটু এবং দলীয় সমর্থকদের সঙ্গে পৃথক অনুষ্ঠানে যোগদানের কথা ছিল এএনসির সবচেয়ে ক্ষমতাধর ‘শীর্ষ ছয়’ নেতার। তবে রামাফোসাসহ এ নেতারা তাতে যোগ দেননি। এ প্রসঙ্গে দলের ওয়েস্টার্ন কেপ প্রদেশের একজন কর্মকর্তা বলেন, ক্ষমতা ছাড়তে প্রেসিডেন্ট জুমার ওপর দলীয় চাপ বাড়ানোর পদক্ষেপের সঙ্গে তাঁদের এ অনুষ্ঠানে যোগদান না করার বিষয়টি সম্পৃক্ত।

এএনসির প্রভিন্সিয়াল সেক্রেটারি ফাইয়েজ জ্যাকব ইএনসিএ টেলিভিশন চ্যানেলকে বলেন, ‘আমরা সবাই জানি ও এই ধারণা করি, বর্তমানে আমাদের দেশ যে সংকটের সম্মুখীন, তা মোকাবিলা করতে তাঁরা (এই নেতারা) সচেষ্ট রয়েছেন।’

জুমাকে পদত্যাগে রাজি করাতে চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন রামাফোসা। তিনি বলেছেন, দেশের স্বার্থে ক্ষমতার সুষ্ঠু হস্তান্তরে আগামী দিনগুলোতে জুমার সঙ্গে আলোচনা একটি পরিণতিতে গড়াবে বলে তাঁর প্রত্যাশা। রামাফোসার একজন মুখপাত্র বলেন, এএনসির এই নেতা গতকাল (শুক্রবার) বা শনিবার (আজ) কোনো পাবলিক ইভেন্টে অংশ নিচ্ছেন না। 

দক্ষিণ আফ্রিকার স্বাধীনতার নায়ক ও বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনের কিংবদন্তি নেতা নেলসন ম্যান্ডেলার শততম জন্মবার্ষিকী উদ্‌যাপন উপলক্ষে আগামীকাল রোববার ভাইস প্রেসিডেন্ট রামাফোসার এক ভাষণ দেওয়ার কথা রয়েছে। এর আগের দিন আজ কেপটাউনে একটি কূটনৈতিক পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রেসিডেন্ট জুমার সভাপতিত্ব করার কথা থাকলেও অনুষ্ঠানটি বাতিল করা হয়েছে বলে তাঁর কার্যালয় জানিয়েছে।

এরও আগে গত বৃহস্পতিবার পার্লামেন্টে জুমার ‘স্টেট অব দ্য নেশন’ ভাষণ দেওয়ার কথা ছিল। এই ভাষণে বছরের সামনের দিনগুলোতে সরকারের অগ্রাধিকারমূলক বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়ে থাকে। পূর্বনির্ধারিত এই ভাষণও জুমা নিজেই বাতিল করেছেন। ধারণা করা হয়, প্রেসিডেন্ট হিসেবে আবারও তিনি এ ভাষণ দিলে তা তাঁর নিজ দলের কিছু আইনপ্রণেতা ও একই সঙ্গে বিরোধী দলগুলোকে আরও খেপিয়ে তুলতে পারে, এমন আশঙ্কা থেকে এটি বাতিল করেন তিনি। ভাষণ বাতিল করার ঘটনায় এ ধারণা আরও জোরালো হয় যে শেষমেশ জুমা পদত্যাগই করতে যাচ্ছেন।