কালো মেঘ কাটার লক্ষণ নেই!

জ্যাকব জুমা
জ্যাকব জুমা

দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট জ্যাকব জুমাকে নিয়ে চলমান রাজনৈতিক সংকট গতকাল শনিবার আরও জোরালো হয়েছে। তাঁকে পদত্যাগে রাজি করানো বা তাঁর ওপর চাপ সৃষ্টি করে পদত্যাগে বাধ্য করার বিষয়ে কয়েক দিন ধরে চলা চূড়ান্ত পর্যায়ের আলোচনা-সমঝোতা প্রচেষ্টায় এদিনও কোনো ফল আসেনি।

জ্যাকব জুমার ওপর পাহাড়সম চাপ সৃষ্টির অংশ হিসেবে দক্ষিণ আফ্রিকার ক্ষমতাসীন দল আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেসের (এএনসি) নেতা সিরিল রামাফোসাসহ দলটির সবচেয়ে প্রভাবশালী শীর্ষ ছয় নেতা গত শুক্রবার পূর্বনির্ধারিত জনকর্মসূচিগুলোতে অংশ নেননি। ভাইস প্রেসিডেন্ট রামাফোসার একজন মুখপাত্র আগেই বলেছেন, তিনি শনিবারও (গতকাল) কোনো জনকর্মসূচিতে অংশ নেবেন না।

এর আগে গত বুধবার রামাফোসা বলেছেন, প্রেসিডেন্ট জুমার সঙ্গে তাঁর গঠনমূলক আলোচনা হয়েছে এবং তা দেশ ও জনগণের স্বার্থে জুমার বিষয়ে ‘দ্রুত সমাধানে’ পৌঁছার ভিত্তি তৈরি করেছে। এরপর গতকাল এএনসি ও তাঁর পক্ষ থেকে বলা হয়, জুমার পদত্যাগের বিষয়ে সমঝোতা কয়েক দিনের মধ্যে প্রতিষ্ঠিত হতে পারে। তবে জুমাকে কীভাবে ক্ষমতা থেকে অপসারণ করা হবে, সে ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি।

ইতিমধ্যে, গত বৃহস্পতিবার পার্লামেন্টে জুমা তাঁর ‘স্টেট অব দ্য নেশন’ ভাষণ দেওয়ার কথা থাকলেও তা বাতিল করেন। তবে আজ রোববার দক্ষিণ আফ্রিকার স্বাধীনতার নায়ক বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনের কিংবদন্তি নেতা নেলসন ম্যান্ডেলার শততম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে রামাফোসার একটি সমাবেশে ভাষণ দেওয়ার কথা রয়েছে।

এ রকমই এক মুহূর্তে গতকাল দক্ষিণ আফ্রিকার একটি সংবাদ চ্যানেলের ওয়েবসাইটে কোনো সূত্রের বরাত না দিয়ে বলা হয়েছে, জুমার অপসারণ নিয়ে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে চলমান আলোচনাকে একটি শেষ পরিণতিতে নিয়ে যাবেন জুমা ও রামাফোসা। এরপর ফলাফল জাতির উদ্দেশে ঘোষণা করা হবে। 

জুমার পদত্যাগ নিয়ে এই অচলাবস্থা দক্ষিণ আফ্রিকার রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে খাদের কিনারে নিয়ে যাচ্ছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা। নানা অনিশ্চয়তা ও সম্ভাবনার মধ্যে জোহানেসবার্গের উইটস বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতির অধ্যাপক সুসান বুসেন বলেন, জুমা ক্ষমতায় থাকতে আরও কয়েক দিন নিজের মতো লড়াই চালাতে পারেন।

সুসান বলেন, জুমা শেষ পর্যন্ত লড়াই করে যাওয়ার পাত্র। তিনি পদত্যাগের দাবি প্রত্যাখ্যান করে আসছেন। এ ছাড়া রামাফোসাও চাইছেন না নিজেকে কোনো বিভাজনের মধ্যে ঠেলে দিতে। জুমা সমঝোতার দরজা কৃত্রিম পন্থায় খোলা রাখছেন। অথচ সমঝোতার সর্বনাশ ঘটিয়ে চলেছেন।