'আবা পরার প্রয়োজন নেই সৌদি নারীদের'

পরিবারের সদস্য নয়—এমন পুরুষদের সামনে ‘আবা’ পরে বের হন সৌদি নারীরা। ছবি: এএফপি
পরিবারের সদস্য নয়—এমন পুরুষদের সামনে ‘আবা’ পরে বের হন সৌদি নারীরা। ছবি: এএফপি

সৌদি আরবের একজন শীর্ষ ধর্মীয় নেতা বলেছেন, ‘পরিবারের সদস্য নয়—এমন পুরুষদের সামনে যে নারীদের “আবা” পরতেই হবে, এমন কোনো বিষয় নেই। তবে অবশ্যই আবরু বজায় রেখে পোশাক পরতে হবে। কিন্তু তার মানে এই নয় যে তাঁদের “আবা” পরতে হবে।’

সৌদি আরবে মেয়েরা মাথা থেকে পা পর্যন্ত পুরো শরীর ঢাকতে ঢিলেঢালা একধরনের পোশাক পরেন, যাকে আবা বলা হয়। এটি পরা সৌদি আরবে আইনত বাধ্যতামূলক।

বিবিসি অনলাইনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, সৌদি আরবের কাউন্সিল অব সিনিয়র স্কলারসের জ্যেষ্ঠ সদস্য শেখ আবদুল্লাহ আল মুতলেক বলেছেন, ‘এটি পরার কোনো দরকার নেই।’

সাম্প্রতিক সময়ে সৌদি সমাজে সংস্কার শুরু হয়েছে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হচ্ছে। চলতি বছরের মার্চে সেখানে প্রথম সিনেমা হল খুলবে। গত ডিসেম্বরে গানের কনসার্টে অংশ নেন প্রথম কোনো নারী সংগীতশিল্পী। সম্প্রতি স্টেডিয়ামে গিয়ে মেয়েদের খেলার দেখারও অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এত সব সংস্কারের মধ্যে এবার আবা নিয়ে ধর্মীয় ব্যাখ্যা দিলেন দেশটির শীর্ষ ধর্মীয় নেতা।

গত শুক্রবার শেখ আবদুল্লাহ আল মুতলাক বলেন, ‘মুসলিম বিশ্বের ৯০ শতাংশ নারীই আবা পরেন না। কাজেই আমাদেরও উচিত হবে না মেয়েদের এটা পরতে বাধ্য করা।’

তবে ধর্মীয় নেতার এই মন্তব্য ঘিরে ইতিমধ্যে অনলাইনে তীব্র বিতর্ক ও আলোচনা শুরু হয়েছে। অনেকেই তাঁকে সমর্থন দিলেও বিরোধিতাও করছেন কেউ কেউ।

মাশারি ঘামদি নামের এক ব্যক্তি টুইট করেন, ‘আবা আমাদের অঞ্চলের একটা ঐতিহ্য। এটি কোনো ধর্মীয় ব্যাপার নয়।’

তবে এক নারী তীব্র বিরোধিতা করে লিখেছেন, ‘যদি এক শ ফতোয়াও জারি করা হয়, তারপরও আমি আমার আবা ছাড়ব না। মরলেও না। মেয়েরা, তোমরা এই ফতোয়ায় কান দিয়ো না।’

সৌদি আরবে যেসব নারী আবা না পরে বাইরে যান, তাঁরা ধর্মীয় পুলিশের ভর্ৎসনার শিকার হন। ২০১৬ সালে রিয়াদের রাস্তায় এক নারী তাঁর আবা খুলে ফেললে পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে। তবে নারীরা এখন কেবল কালো রঙের নয়, বিভিন্ন উজ্জ্বল রঙের আবা পরেন। লম্বা স্কার্ট বা জিনসের সঙ্গে খোলা আবা পরা বেশ জনপ্রিয় ফ্যাশন আধুনিক তরুণীদের।