পলাশী প্রান্তরে নির্মিত হচ্ছে পলাশী তোরণ

নবাব সিরাজের আবক্ষ মূর্তি। ছবি: অমর সাহা
নবাব সিরাজের আবক্ষ মূর্তি। ছবি: অমর সাহা

ঐতিহাসিক পলাশী যুদ্ধের স্মরণে এবার পলাশির সেই যুদ্ধ প্রান্তের অদূরে তৈরি হচ্ছে পলাশী তোরণ। পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলায় এ পলাশী প্রান্তরের। এখানেই নবাব সিরাজউদ্দৌলার সঙ্গে যুদ্ধ হয়েছিল ইংরেজ বাহিনীর। ২৬০ বছর আগে সেই ২৩ জুনে এ যুদ্ধ হয়। আজও ইতিহাসের পাতায় জ্বলজ্বল করে জ্বলছে পলাশী যুদ্ধে সিরাজের সেনাপতি মীরজাফরের বিশ্বাসঘাতকতার ছবি।

কলকাতা থেকে ১৭২ কিলোমিটার দুরে পলাশী। ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের স্টপেজে নেমে পাশের সড়ক ধরে ৩ কিলোমিটার দূরে এই পলাশি প্রান্তরের অবস্থান। জাতীয় সড়কের পলাশি স্টপেজের যে পথ ধরে পলাশি প্রান্তরে যেতে হয়, সেই পথের প্রবেশ মুখে তৈরি হচ্ছে পলাশি তোরণ। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগ এবং পর্যটন বিভাগের যৌথ উদ্যোগে নির্মিত হচ্ছে এ বিশাল তোরণ। তোরণ নির্মাণ করছে নদীয়া জেলা পরিষদ। পলাশি যুদ্ধে নবাব সিরাজের আত্মত্যাগের স্মরণে নির্মিত হচ্ছে তোরণটি। এটি নির্মাণে খরচ হচ্ছে এক কোটি রুপি।

এই তোরণের নির্মাণকাজ এখন শেষ পর্যায়ে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গত মঙ্গলবার কৃষ্ণনগরের এক জনসভায় যোগ দিয়ে এই পলাশি তোরণ নির্মাণের কথাও ঘোষণা করেন।

পলাশির প্রান্তরে এর আগে যে স্মৃতিসৌধ বা মনুমেন্ট তৈরি হয়েছে তার উচ্চতা ১৫ মিটার। ইংরেজরা পলাশীর যুদ্ধের বিজয়ের স্মারক হিসাবে তৈরি করেছিল এ মনুমেন্ট। আর পলাশীর প্রান্তরের শেষ আমগাছটির শুকনো গুঁড়িটি ১৮৭৯ সালে পলাশীর বিজয়ের স্মারক হিসাবে ইংরেজরা নিয়ে যায় লন্ডনে।

পলাশীর এ মনুমেন্টের গায়ে এখনো লেখা আছে, ‘ব্যাটল ফিল্ড অফ পলাশী, জুন ২৩, ১৭৫৭’। যদিও ইংরেজদের কাছে এটি বিজয়ের স্মারক হলেও সিরাজভক্ত দেশপ্রেমিকেরা এখনো এই স্মৃতিস্তম্ভকে চিহ্নিত করেন ’বিশ্বাসঘাতকতার প্রতীক’ হিসেবে। এ স্মৃতিস্তম্ভের পাশে ছোট্ট আরেকটি স্মৃতিস্তম্ভ তৈরি করে লেখা হয়েছে, ‘পরদেশগ্রাসীদের বিজয়স্তম্ভ নয়; সিরাজ, মীর মদন, মোহন লালের নাম হোক অক্ষয়’। এই স্মৃতিস্তম্ভ তৈরি করেছে বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান পিপলস ফোরাম।
একটু দুরে মনুমেন্টে ঢোকার বাঁপাশে দাঁড়িয়ে আছে নবাব সিরাজের একটি আবক্ষ মূর্তি। এই মূর্তির নিচে লেখা রয়েছে ’বিদেশি বেনিয়া বিরোধী জেহাদি নায়ক সিরাজউদৌল্লা’। এখান থেকে একটু দূরেই রয়েছে মীর মদনের সমাধিস্থল।