কলকাতায় আধ্যাত্মিক ঈশ্বরীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে অভিযান, নারী উদ্ধার

কলকাতার সল্টলেকের আধ্যাত্মিক বিশ্ববিদ্যালয়। ছবি: সংগৃহীত
কলকাতার সল্টলেকের আধ্যাত্মিক বিশ্ববিদ্যালয়। ছবি: সংগৃহীত

রাম রহিম-সচ্চিদানন্দের পর এবার পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় স্বঘোষিত আরেক ‘বাবা’র আশ্রম পাওয়া গেল। সেখান থেকে উদ্ধার হলেন ১৫ নারী।

কলকাতার সল্টলেকের ওই ডেরার নাম ঈশ্বরীয় আধ্যাত্মিক বিশ্ববিদ্যালয়। গতকাল শনিবার এখানে তল্লাশি অভিযান চালিয়ে নারীদের উদ্ধার করা হয়।

স্বঘোষিত ওই বাবার নাম বীরেন্দ্রদেব দীক্ষিত। এই আধ্যাত্মিক বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকা এক কিশোরীর সন্ধান না পাওয়ায় পুলিশের দ্বারস্থ হন ওই কিশোরীর অভিভাবকেরা। এরপর সল্টলেকের পূর্ব বিধাননগর থানা গতকাল অভিযান চালায়। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ আধ্যাত্মিক বিশ্ববিদ্যালয়টি সিল করে দিয়েছে। উদ্ধার করা হয়েছে মোবাইল, হার্ডডিস্কসহ বিভিন্ন আলামত।

অভিযোগ পাওয়া গেছে, এই ভণ্ড বাবার শাগরেদেরা কিশোরীদের নিয়ে আসত আশ্রমে। তাদের অভিভাবকদের বলা হতো, এখানে ধর্মশিক্ষা দেওয়া হবে। এ জন্য কিশোরীদের অভিভাবকদের কাছ থেকে নেওয়া হতো স্ট্যাম্পে লিখিত অনুমতি। কিশোরীদের আশ্রমে ধর্মশিক্ষার নামে চালানো হতো যৌন নির্যাতন, ধর্ষণ। আটকে রাখা হতো এই নাবালিকাদের। তাদের দেখা করতে দেওয়া হতো না পরিবারের সঙ্গে।

সূত্র জানায়, এই আশ্রমের বাবা দীক্ষিত দেশের বিভিন্ন স্থানে গড়ে ওঠা তাঁর বিভিন্ন আশ্রমে যেতেন। আসতেন কলকাতাতেও। বলতেন, তিনি একই সঙ্গে ভগবান শিব ও রামের আত্মা। জন্ম-মৃত্যু তাঁকে ছুঁতে পারবে না। যে নারী তাঁর সাধনসঙ্গিনী হবেন, তাঁরাও আধ্যাত্মিকতার সর্বোচ্চ শিখরে পৌঁছাবে।

তবে দীক্ষিত বাবা ডিসেম্বরের পর থেকে গা ঢাকা দিয়ে আছেন। বাবার এই আধ্যাত্মিক বিশ্ববিদ্যালয় আছে ভারতের বিভিন্ন স্থানে। গত ডিসেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহে দিল্লিতে বাবার আধ্যাত্মিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পুলিশ উদ্ধার করেছিল ৪০ জন কিশোরীকে। এরপরেই গা ঢাকা দেন বাবা দীক্ষিত।

এর আগে গ্রেপ্তার করা হন ভারতের হরিয়ানা রাজ্যের কথিত সাধু ও ডেরা সাচা সৌদার প্রধান গুরুমিত রাম রহিম সিং ইনসানকে। তাঁর বিরুদ্ধেও অভিযোগ ছিল, তিনি তাঁরই আশ্রমের দুই সাধ্বীকে ধর্ষণ করেছিলেন। গত ২৫ আগস্ট গুরুমিত রাম রহিম সিং ইনসান গ্রেপ্তার হন। এরপর উত্তর প্রদেশের বস্তি জেলায় স্বঘোষিত আরেক ধর্মগুরু বাবা সচ্চিদানন্দের সন্ধান মেলে। তাঁর বিরুদ্ধে ওই আশ্রমেরই চার সাধ্বী অভিযোগ তুলে বলেছেন, ওই আশ্রমের স্বামীজি বাবা এবং তাঁর সঙ্গী সাধুরা আশ্রমের সাধ্বীদের যৌন নির্যাতন করতেন।