বিধানসভায় 'অশুভ আত্মার' হাত!

রাজস্থানের বিধানসভা। ছবি: সংগৃহীত
রাজস্থানের বিধানসভা। ছবি: সংগৃহীত

আকস্মিক মৃত্যু, অপরাধে জড়িত অভিযোগে কারাগারে যাওয়া, পদত্যাগে বাধ্য হওয়া—এমন শনির দশা বিধায়কদের লেগেই আছে। আর এর পেছনে বিধানসভায় ‘অশুভ আত্মার’ হাত রয়েছে বলে মনে করছেন কয়েকজন বিধায়ক। সেই বিধায়কদের দাবি পূরণ করতে গিয়ে বিধানসভার সামনে ‘ভূত’-এর আনাগোনা বন্ধে যজ্ঞ করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার ভারতের রাজস্থান রাজ্যের রাজধানী জয়পুরে বিধানসভা ভবনের সামনের সড়কে এই যজ্ঞ করা হয়।

রাজস্থান বিধানসভায় ২০০ বিধায়ক রয়েছেন। বিধায়কদের কয়েকজন দাবি করেন, রাজস্থান বিধানসভায় এখন অশরীরী আত্মা বা ভূতের আনাগোনা শুরু হয়েছে। এতে তাঁরা আতঙ্কিত। বিধানসভায় বিধায়কদের উপস্থিতি কমে গেছে। অকস্মাৎ মৃত্যু, অপরাধের সঙ্গে যুক্ত হয়ে কোনো বিধায়কদের কারাগারে যাওয়া বা হঠাৎ পদত্যাগ ইত্যাদি ঘটনার পেছনে অশরীরী আত্মার উপস্থিতিই কারণ।

আর এই দাবি নিয়ে রাজস্থানের বিজেপি-দলীয় মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজের দ্বারস্থ হন তাঁরা। দুই বিধায়ক কালুলাল গুজ্জর ও হাবিবুর রহমান মুখ্যমন্ত্রীকে এসব কথা বলে অশুভ শক্তির প্রভাব কাটাতে পুরোহিত ডেকে যাগযজ্ঞ এবং মওলানা ডেকে জায়গাটি শুদ্ধিকরণের পরামর্শ দেন। সেই লক্ষ্যে বৃহস্পতিবার পুরোহিত ডেকে যজ্ঞ করা হয় বিধানসভা ভবনের সামনের সড়কে।

যজ্ঞ করার পরামর্শদাতা বিধায়কেরা বলেছেন, গত মঙ্গলবার রাতে প্রয়াত হন বিজেপি বিধায়ক কল্যাণ সিং। তাঁর মৃত্যুর পরই বিধায়কদের মধ্যে অশরীরী আত্মা-আতঙ্ক জোরালো হয়ে পড়ে। এর আগে গত বছর সোয়াইন ফ্লুতে মারা যান বিজেপি বিধায়ক কীর্তি কুমারী। এরও আগে খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত হয়ে কারাগারে যান বহুজন সমাজ পার্টির বিধায়ক বি এল খুশওয়া। এরপর খুন, ধর্ষণের মতো মামলায় অভিযুক্ত হয়ে কারাগারে যান কংগ্রেস বিধায়ক মহিপাল মার্দেনা, মালখান সিং বিষ্ণু ও বাবুলাল নাগাড়। লাগাতার এসব ঘটনার পর বিধায়কদের একাংশ মনে করে, এর পেছনে রয়েছে অশরীরী আত্মার ভর। অশুভ আত্মার নজর পড়েছে বিধানসভা ভবনের দিকে।

বিধায়কেরা জানান, শ্মশান এবং শহরের ময়লা ফেলার জায়গা ও শিশুদের কবরস্থানের ওপর তৈরি করা হয়েছে এই বিধানসভা ভবন। আগে সেখানে ছিল শ্মশান লালকুঠি মোক্ষধাম। এখনো সেই শ্মশান রয়েছে বিধানসভা ভবনের ২০০ মিটার দূরে। ১৭ একর জায়গাজুড়ে পাঁচ কোটি রুপি ব্যয় করে এখানে গড়া হয়েছে বিধানসভা ভবন।

বিধানসভার মুখ্য সচেতক কালুলাল গুজ্জর বলেছেন, ‘এটা সত্যি যে এই বিধানসভার ২০০ আসন কখনো বেশি দিনের জন্য পূর্ণ থাকে না। সম্প্রতি দুই বিধায়কের মৃত্যুতে আমরা আতঙ্কিত। এখানে যে শ্মশান বা কবরস্থান ছিল, সেই ভাবনাই আমাদের বারবার মনে করিয়ে দিচ্ছে। মনে হচ্ছে, অতৃপ্ত আত্মারা এসব কাজ করছে।’