নাগাল্যান্ডের ভোটে অর্থ আর মাদকের রমরমা

নাগাল্যান্ডে ভোট সামনে রেখে তৎপর আইন–শৃঙ্খলা রক্ষাকারীবাহিনী। ছবি: প্রথম আলো
নাগাল্যান্ডে ভোট সামনে রেখে তৎপর আইন–শৃঙ্খলা রক্ষাকারীবাহিনী। ছবি: প্রথম আলো

ভারতের নাগাল্যান্ডে ভোট মানেই দেদার মদ আর অর্থের ছড়াছড়ি। নির্বাচন কমিশনের নজরদারি, এমনকি চার্চের ফতোয়া উপেক্ষা করেই রাজনৈতিক দলগুলো ভোট কিনতে ব্যস্ত। ধরাও পড়ছে প্রচুর অর্থ, মদসহ নেশার সামগ্রী।

নাগারা প্রকৃত যোদ্ধার জাত। কিন্তু যুব সম্প্রদায়ের একটা বড় অংশ শেষ হয়ে যাচ্ছে মাদকের নেশায়। ভোটের নজরদারিতে ধরা পড়ছে মাদক চোরাকারবারিদের কেউ কেউ।

২৭ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমার সীমান্তবর্তী রাজ্যটির বিধানসভা ভোট। সরব প্রচার শেষ হচ্ছে আজ বিকেল চারটায়। এরপরই শুরু হবে মদ আর অর্থ বিলির রীতিমতো উৎসব। প্রশাসন অবশ্য তৎপর ভোটে বেআইনি কাজ রুখতে। ইতিমধ্যেই খ্রিষ্টান অধ্যুষিত রাজ্যটির নাগাল্যান্ড ব্যাপ্টিস্ট চার্চ কাউন্সিল (এনবিসিসি) ফতোয়া জারি করে ভোটে কোনো ধরনের বেআইনি কাজ থেকে খ্রিষ্টানদের দূরে থাকতে বলেছে। কিন্তু কে শোনে, কার কথা!

নির্বাচন দপ্তর প্রায় ১২ লাখ ভোটারের জন্য নিয়োগ করেছে ১৮০টি ফ্লাইং স্কোয়াড। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, এই স্কোয়াডের হাতে ধরা পড়েছে ১ কোটি ৭ লক্ষ ৩৬ হাজার ৯৮০ ভারতীয় রুপি। ভারতে তৈরি বিদেশি মদ উদ্ধার হয়েছে ৩২ হাজার লিটার। একই সঙ্গে আট হাজার লিটার ক্যান বিয়ার এবং ৯০ লিটার দেশি মদও বাজেয়াপ্ত হয়েছে।

মদ আর টাকার পাশাপাশি অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনাও রয়েছে তল্লাশি অভিযানে। মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক অভিজিত সিনহা প্রথম আলোকে জানান, ১১টি অস্ত্র, ৯০টি কার্তুজ, ৮টি বিস্ফোরক ও ১১টি ডেটনেটর তাঁরা উদ্ধার করেছেন।

মদ, অর্থ ও অস্ত্র উদ্ধারের পাশাপাশি ফ্লাইং স্কোয়াড বাজেয়াপ্ত করেছে প্রচুর পরিমাণে মাদক। এর মধ্যে ব্রাউন সুগার থেকে শুরু করে রয়েছে গাঁজা, আফিম, নিষিদ্ধ ওষুধ প্রভৃতি।

নির্বাচন দপ্তর সূত্রের খবর, অভিযান চলবে। অন্যদিকে, রাজনৈতিক দলগুলোও পুরোনো প্রথা মেনেই নিজেদের কারবার চালিয়ে যেতে প্রস্তুত। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রতিটি দলের নেতারাই এ বিষয়ে নিজেদের অসহায় বলে বর্ণনা করেন। ভোটে জিততে গেলে মদ আর অর্থ জরুরি, এই প্রথার বিরোধিতা করলেও ভোটযুদ্ধে এর থেকে বেরিয়ে আসার ঝুঁকি নিতে নারাজ কোনো পক্ষ।