আজীবন ক্ষমতায় সি চিন পিং!

সি চিন পিং
সি চিন পিং

আজীবনই প্রেসিডেন্ট পদে থাকার জন্য যা যা করা দরকার, তা-ই করতে চলেছেন চীনের বর্তমান প্রেসিডেন্ট  সি চিন পিং। প্রেসিডেন্টের কার্যকাল নির্দিষ্ট করা একটি আইন বাতিল করে ওই পদ সুরক্ষিত করতে পারে—এমন এক প্রস্তাব আজ রোববার পেশ করেছে দেশটির শাসক দল কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটি।

চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম সিনহুয়া রোববার এক খবরে জানায়, চীনের সংবিধানে প্রেসিডেন্টের মেয়াদ-সংক্রান্ত একটি ধারায় উল্লেখ আছে, ‘একজন প্রেসিডেন্ট ও ভাইস প্রেসিডেন্ট টানা দুই মেয়াদের বেশি সময় ক্ষমতায় থেকে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না।’ কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটি সংবিধানের এই ধারাটি বাদ দেওয়ার প্রস্তাব করেছে। আগামী মার্চে শুরু হবে চীনের জাতীয় আইনসভা ন্যাশনাল পিপলস কংগ্রেসের বার্ষিক পূর্ণ অধিবেশন। এ অধিবেশনেই সংবিধান সংশোধনের প্রস্তাবটি তোলা হবে বলে জানানো হয়েছে সিনহুয়ার খবরে।

গত বছরের অক্টোবরে সি চিন দ্বিতীয় দফায় দল এবং দেশের সামরিক প্রধান হন। প্রেসিডেন্টের পদই শুধু নয়, এই প্রস্তাবে ভাইস প্রেসিডেন্টের পদও আজীবনের জন্য সুরক্ষিত হয়ে যাবে। কেন্দ্রীয় কমিটির এ প্রস্তাব অবশ্য দেশটির পার্লামেন্টে অনুমোদন হতে হবে। পার্লামেন্ট সদস্যরা সবাই দলের অনুগত হওয়ায়, তা যে পাস হবে, তা বলাই যায়। এটি পাস হলে যত দিন ইচ্ছা বা ক্ষমতা থেকে সরে যাওয়ার কোনো বাধ্যবাধকতা থাকল না।

সি চিন পিং ২০১৩ সালের মার্চে চীনের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। দুই মেয়াদে ১০ বছর এ দায়িত্ব পালনের পর ২০২৩ সালে ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়ানোর বাধ্যবাধকতা রয়েছে ৬৪ বছর বয়সী এই নেতার। দলটির প্রস্তাব অনুযায়ী যদি সংবিধান সংশোধন করা হয়, তাহলে অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য সি চিন পিং চীনের প্রেসিডেন্ট রয়ে যাবেন। এর আগে বেইজিংয়ে গত অক্টোবর মাসে চীনা কমিউনিস্ট পার্টির ১৯তম জাতীয় কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হয়। ওই কংগ্রেসে দলের গঠনতন্ত্রে কমিউনিস্ট পার্টির প্রয়াত চেয়ারম্যান মাও সে তুংয়ের নামের পাশে ঠাঁই হয় দলটির বর্তমান সাধারণ সম্পাদক চিন পিংয়ের নাম। দেশটিতে মাওয়ের পর সি চিন পিংকেই সবচেয়ে ক্ষমতাধর শাসক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এর আগে গঠনতন্ত্রে মতাদর্শের পাশে মাও ছাড়া কেবল দেং জিয়াওপিংয়ের নাম যুক্ত হয়েছিল। তা-ও তা করা হয়েছিল জিয়াওপিংয়ের মৃত্যুর পর। ওই কংগ্রেসের আরেকটি উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো এতে দলের সাত সদস্যের শীর্ষ নীতিনির্ধারক একটি স্ট্যান্ডিং কমিটিও নির্বাচন করা হয়। তবে সি চিন পিংয়ের কোনো উত্তরসূরি নির্বাচন করা হয়নি।