নতুন আইনে আশার আলো

স্বামীর নির্যাতনে মানসিকভাবে ভেঙে পড়ার পর মনোবিদের শরণাপন্ন হন সামেহ।  ছবি: এএফপি
স্বামীর নির্যাতনে মানসিকভাবে ভেঙে পড়ার পর মনোবিদের শরণাপন্ন হন সামেহ। ছবি: এএফপি

দুই কিশোরীর মা সামেহ (৪৫)। শিক্ষকতা করেন। তবে বিয়ের পর থেকে গত ১৫ বছরে বেতন কখনো নিজের কাছে রাখতে পারেননি। স্বামীর হাতে তুলে দিতে হতো। এরপরও সইতে হতো শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন। কিন্তু দেশের আইনের দৃষ্টিতে এগুলো অপরাধ ছিল না। ফলে আইনের আশ্রয় নেওয়ার কোনো সুযোগই তাঁর ছিল না। সম্প্রতি দেশটিতে আইনে পরিবর্তন আনা হয়েছে। এটি সামেহর মতো অনেক নারীর জীবনে আলো হয়ে দেখা দেবে বলে মনে করা হচ্ছে।

নারীর প্রতি সহিংসতার সংজ্ঞায় ব্যাপক পরিবর্তন এনে তিউনিসিয়া গত বছরের জুলাই মাসে আইন পাস করে। চলতি মাসের ১ তারিখ থেকে এটি কার্যকর হয়েছে। শারীরিক, নৈতিক ও যৌন হয়রানির পাশাপাশি অর্থনৈতিক নিপীড়নের বিষয়টিও আইনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। দেশটির মানবাধিকারকর্মীদের গত ২৫ বছরের লড়াইয়ে এটা সম্ভব হয়েছে।

সম্প্রতি সামেহ বিবাহবিচ্ছেদ চেয়ে আবেদন করেছেন। দুই বছর আগেই তিনি এটা করতে চেয়েছিলেন উল্লেখ করে বলেন, মেয়েদের সামনে নির্যাতন করতেন স্বামী। মানসিকভাবে তখন ভেঙে পড়েছিলেন। অর্থনৈতিক নিপীড়ন তো ছিলই। তবে স্বামী অনুমতি দেননি বলে সেটা করতে পারেননি। তাঁর ভাষায়, ‘নতুন আইনের কথা জেনে মনে হলো, এই আইন আমার জীবনে ন্যায়বিচার আনবে।’ এরপরই তিনি নৈতিক ও অর্থনৈতিক কারণ দেখিয়ে বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন করেন।

নতুন আইন সামেহর মতো পারিবারিক নির্যাতনের শিকার নারীদের জীবন বদলে দেবে বলে আশা করা হচ্ছে। নারীদের সহায়তার জন্য গঠিত তিউনিসিয়ান অ্যাসোসিয়েশন অব ডেমোক্রেটিক উইমেনের (এএফটিডি) আহলেফ বেলহাজ বলেন, এটা সত্যিকারের অগ্রগতি। নারীর জীবন বদলে দিতে পারে।