রাশিয়ার ভোটে যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ!

আর ক দিন পরেই রাশিয়ায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। পৃথিবীর বৃহত্তম এই দেশে এখন বইছে ভোটের হাওয়া। তবে এরই মধ্যে এ নির্বাচনে যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপের অভিযোগ উঠেছে। মস্কো দাবি করছে, তাদের কাছে যথেষ্ট তথ্য-প্রমাণ রয়েছে।

রুশ গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে মার্কিন সাপ্তাহিক ম্যাগাজিন নিউজউইকের অনলাইন সংস্করণে সোমবার এই চাঞ্চল্যকর খবর জানানো হয়।

২০১৬ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপ ছিল বলে জোরালো দাবি ওঠে যুক্তরাষ্ট্রে। সাবেক এফবিআই প্রধান রবার্ট মুলারকে মার্কিন নির্বাচনে রুশ হস্তক্ষেপের অভিযোগের তদন্ত দলের প্রধান হিসেবে নিয়োগ দেয় হোয়াইট হাউস। তবে বরাবরই ওই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে ক্রেমলিন। মস্কোর দাবি, আমেরিকার নির্বাচনে কোনো হস্তক্ষেপ করেনি রাশিয়া। এবার সেই একই অভিযোগের আঙুল উঠেছে খোদ ওয়াশিংটনের বিরুদ্ধে।

মার্কিন গণমাধ্যম সিএনবিসির বরাত দিয়ে নিউজউইকের খবরে বলা হয়, রাশিয়ার উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী সেরগেই রিয়াকোভ সম্প্রতি রুশ বার্তা সংস্থা রিয়া নোভাসতিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, রাশিয়ার অভ্যন্তরে একধরনের অরাজকতা তৈরির চেষ্টা করে যাচ্ছিল; যাতে করে চলতি মাসে হতে যাওয়া দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় একটা সংকটময় পরিস্থিতি তৈরি হয়।

রুশ উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী রাশিয়া-মার্কিন দুই দেশের চলমান নিষেধাজ্ঞা প্রসঙ্গ টেনে এনে বলেন, রাশিয়ার বিরুদ্ধে যে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে; তার নীলনকশায় ছিল দেশকে অস্থিতিশীল করে তোলা এবং নির্বাচনে প্রভাব খাটানো।

ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ার এফএসবের সাবেক পরিচালক ও নিরাপত্তা পরিষদের প্রধান নিকোলাই পাত্তরুশেভ জানান, আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে যুক্তরাষ্ট্র হ্যাকিং করার চেষ্টা চালাবে। এ কাজের জন্য রাজনীতি, অর্থনীতি ও তথ্যগত প্রচারণা কৌশল অবলম্বন করবে তারা।

নির্বাচনে বিদেশি হস্তক্ষেপ বন্ধে রুশ সরকারকে কঠোর হওয়ার আহ্বান জানান রাশিয়ার পার্লামেন্ট দুমার কমনওয়েলথ স্বাধীন রাষ্ট্রবিষয়ক কমিটির প্রধান ও আইনজীবী লিওনিদ কালাশনিকোভ।

এক প্রস্তাবে তিনি বলেন, রুশ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হস্তক্ষেপের দায়ে যদি কোনো বিদেশি দোষী সাব্যস্ত হন, তাহলে তাকে অবশ্যই মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করা হবে।

১৮ মার্চ রাশিয়ায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।  বর্তমান প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সহজভাবেই ওই নির্বাচনে জয়লাভ করে নতুন মেয়াদে ক্রেমলিনের অফিস নিশ্চিত করবেন বলেই মনে করছেন সবাই। এর আগে ২০০০ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত পুতিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। আর ২০০৮ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত তিনি ছিলেন প্রধানমন্ত্রী এবং ওই সময় প্রেসিডেন্ট ছিলেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী দিমিত্রি মেদভেদেভ।

প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রার্থীদের নিয়ে ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে রাশিয়ান পাবলিক অপিনিয়ন রিসার্চ সেন্টারের (ভিছেইওএম) প্রকাশিত সর্বশেষ এক জরিপে দেখা যায়, ৬৯ দশমিক ১ শতাংশ রুশরা ভ্লাদিমির পুতিনের পক্ষে ভোট দেবেন। তাঁর নিকটবর্তী প্রার্থী কমিউনিস্ট পার্টির পাভেল গ্রুদিনিইন। তাঁকে সমর্থন করছেন ৭ দশমিক ৮ শতাংশ মানুষ।