বাবার হত্যাকারীর মৃত্যুতে খুশি হতে পারিনি: রাহুল

রাহুল গান্ধী
রাহুল গান্ধী

শ্রীলঙ্কার বিচ্ছিন্নতাবাদী লিবারেশন টাইগার্স অব তামিল ইলমের (এলটিটিই) কর্মীর বোমায় ১৯৯১ সালে নিহত হন ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী। সেই এলটিটিইর প্রধান ভেলুপিল্লাই প্রভাকরণের মৃত্যুর খবরে খুশি হতে পারেননি রাজীব গান্ধীর ছেলে কংগ্রেসের প্রধান রাহুল গান্ধী। বরং কেমন যেন একটা খারাপ লাগা ভর করেছিল তাঁর ও বোন প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর ওপর।

সিঙ্গাপুরে গত শুক্রবার এক অনুষ্ঠানে ঘণ্টাব্যাপী প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশ নিয়ে এমন কথাই জানালেন রাহুল গান্ধী। গতকাল রোববার কংগ্রেসের টুইটারে এটি পোস্ট করা হয়।

১৯৮৪ সালে রাজীবের মা সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী নিহত হন নিজের দেহরক্ষীদের হাতে। রাহুল বলেন, ‘দাদি ও বাবা যে মারা পড়বেন, সেটা আমরা জানতাম। দাদি বলতেন, তিনি মারা পড়বেন। বাবাও একইভাবে বলতেন। রাজনীতিতে আপনি যখন অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে কিছু করবেন, ভালো কিছুর জন্য দাঁড়াবেন; তখন আপনাকে মরতে হবে।’

রাহুল বলেন, ২০০৯ সালে প্রভাকরণের মৃতদেহের ফুটেজ টেলিভিশনের পর্দায় দেখে তাঁর দুটি অনুভূতি হয়েছিল। তাঁর ভাষায়, ‘আমার মনে হয়েছিল লোকটার মৃতদেহকে এভাবে অপমান করা হচ্ছে কেন। এরপর তাঁর পরিবার ও বাচ্চাদের জন্য আমার ভীষণ খারাপ লাগছিল। আমি তখন বোনের সঙ্গে ফোনে কথা বললাম। বললাম, তিনি আমার বাবাকে মেরেছিলেন। তাঁর মৃত্যুতে আমার খুশি হওয়া উচিত, কিন্তু আমি খুশি হতে পারছি না। প্রিয়াঙ্কা তখন বললেন যে তাঁরও ঠিক একই অনুভূতি হচ্ছে।’

রাহুলের প্রতি প্রথম প্রশ্নটাই ছিল-গান্ধী-নেহরু পরিবারের একজন হিসেবে তো তিনি বাড়তি সুবিধা পান। উত্তরে তিনি বলেন, ‘আমি বিশেষ সুবিধা পাই। তবে কঠিন পথ পাড়ি দিতে হয়নি, তা নয়।’ তখন দাদি আর বাবার মৃত্যুর বিষয়টি নিয়ে তিনি কথা বলতে শুরু করেন। বলেন, তিনি ও তাঁর বোন প্রিয়াঙ্কা বাবার হত্যাকারীদের ক্ষমা করে দিয়েছেন। তাঁর ভাষায়, ‘বহু বছর আমরা হতাশ ও আহত ছিলাম। কিন্তু যেভাবেই হোক আমরা তাদের পুরোপুরি ক্ষমা করে দিতে পেরেছি।’ কথাটা শুনে উপস্থিত সবাই তখন তুমুল করতালি দেন।