আঙ্গেলার হাতেআরও চার বছর জার্মানির শাসন

বার্লিনে জার্মান রাষ্ট্রপতি ফ্রাঙ্ক ভাল্টার স্টাইনমায়ারের কাছে শপথ গ্রহণের পর চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলসহ নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যরা। ছবি: সংগৃহীত
বার্লিনে জার্মান রাষ্ট্রপতি ফ্রাঙ্ক ভাল্টার স্টাইনমায়ারের কাছে শপথ গ্রহণের পর চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলসহ নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যরা। ছবি: সংগৃহীত

টানা চতুর্থবারের মতো আবারও জার্মানির চ্যান্সেলর পদে নির্বাচিত হলেন আঙ্গেলা ম্যার্কেল। জার্মানির পার্লামেন্ট ভবন বা রাইখস্ট্যাগে চ্যান্সেলর পদে তিনি সর্বমোট ৩৬৪ ভোট পেয়েছেন। জার্মানির পার্লামেন্টে এবারে আসনসংখ্যা ৬৮৮।

৬৩ বছর বয়স্ক আঙ্গেলা ম্যার্কেল এবার নিয়ে চতুর্থবার জার্মানির সর্বোচ্চ নির্বাহী পদে আসীন হলেন। আজকের এই দিনে ২০০৩ সালের ১৪ মার্চ তার পূর্বসূরি সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক দলের গেরহার্ড শ্রোয়েডার জার্মান পার্লামেন্টে জার্মান রাজনীতিতে যে উদার ও কল্যানমূখী রাজনীতির ঘোষণা দিয়েছিলেন, সে পথ ধরেই ক্রিশ্চিয়ান গণতান্ত্রিক দলের আঙ্গেলা ম্যার্কেল চতুর্থবারের মতো সফল রাজনীতিক হিসাবে আগামী চার বছরের জন্য জার্মানির রাজনীতির হাল ধরলেন।

২০০৫ সাল থেকে জার্মানির দুই বৃহৎ রাজনীতিক দল ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্রেটিক ইউনিয়ন, সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক দল ও ব্যাভেরিয়া রাজ্য অধ্যুষিত দল ক্রিশ্চিয়ান সোশ্যাল ইউনিয়ন দল এবার নিয়ে তৃতীয়বারের মতো জোট সরকার গঠন করলেন।

জার্মানিতে গত ২৪ সেপ্টেম্বর নির্বাচন হয়ে যাওয়ার প্রায় ছয় মাস পর এই জোট সরকার গঠিত হলো। জার্মানির ১৯ তম নির্বাচনের পর জোট সরকার গঠনের লক্ষ্যে ক্ষমতাসীন দুই জোট ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্রেটিক ইউনিয়ন দল ও ক্রিশ্চিয়ান সোশ্যাল ইউনিয়ন দল এবং আট বছর পর পুনরায় পার্লামেন্টে ফিরে আসা দল ফ্রি ডেমোক্রেটিক দল ও পরিবেশবাদী সবুজ দল অংশ নিয়েছিলেন। পরে বিভিন্ন কারণে সেই জোট সরকার গঠনের আলোচনা ভেস্তে যায়।

পরবর্তীতে জার্মানির রাষ্ট্রপতি ফ্রাঙ্ক ভাল্টার স্টাইনমায়ার রাজনৈতিক দলগুলোকে স্মরণ করিয়ে দিয়ে জার্মানির গণতন্ত্র ও সংবিধানকে সমুন্নত রাখতে সরকার গঠনের জন্য সকল সম্ভাব্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন। এ ছাড়া সকল দলগুলির নেতাদের সঙ্গে আলাদাভাবে আলোচনা করেছিলেন। এই প্রচেষ্টার অংশ হিসাবেই পুরোনো জোট সরকারের দলগুলি পুনরায় দীর্ঘ সময় নিজেদের দলের মধ্য আলোচনা করে নতুন জোট সরকারের রূপরেখা গঠন করেন।

গত ২৪ সেপ্টেম্বরের নির্বাচনে জার্মানির দুই বড় দল ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্রেটিক ইউনিয়ন দল সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক দল উভয়েই দলের পূর্বের তুলনায় কম ভোট প্রাপ্তি, আর কট্টরবাদী ডানপন্থী অলটারনেটিভ ফর জার্মানি নামের দলটি জার্মান পার্লামেন্টে প্রবেশের কারণে সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক দলটি পুনরায় জোট সরকারে যেতে অসম্মতি জানিয়েছিলেন। তদুপরি এই পর্যন্ত অন্য কোনো বিকল্পিত জোট সরকার গঠিত না হওয়ার কারণে ও রাষ্ট্রপতির অনুরোধে এবং গণতন্ত্র স্বার্থে তাদের পুনরায় জোট সরকার গঠন করতে হলো।

দীর্ঘ ছয় মাস অপেক্ষার পর জোট সরকার গঠনের পর আগামী ১০০ দিনে দ্রুততম সময়ে জরুরি বিষয়গুলি বাস্তবায়নের কথা জোট সরকার জানিয়েছে। পার্লামেন্টে জার্মানির চ্যান্সেলর নির্বাচনের পরপরই বুধবার বিকেলে চ্যান্সেলর আঙ্গেল ম্যার্কেল সহ ১৫ মন্ত্রী জার্মানির রাষ্ট্রপতি ফ্রাঙ্ক ভাল্টার স্টাইনমায়ারের কাছে শপথ গ্রহণ করেছেন।