ত্রিপুরা ভেঙে তুইপ্রাল্যান্ড হচ্ছে না, জানালেন মুখ্যমন্ত্রী

বিপ্লব দেব
বিপ্লব দেব

ত্রিপুরা ভেঙে আলাদা রাজ্য গড়ার বিষয়টি বিবেচনায় রাখছেন না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন ত্রিপুরার নতুন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব। ২৫ বছরের বাম শাসনের অবসান ঘটিয়ে ৯ মার্চ ভারতের উত্তর-পূর্বের রাজ্য ত্রিপুরায় জয় পায় বিজেপি। মুখ্যমন্ত্রী হন বিজেপি নেতা বিপ্লব দেব (৪৮)। এবারের নির্বাচনের আগে ত্রিপুরার বিজেপি নির্বাচনী জোট গড়ে ক্ষুদ্র জাতিসত্তার সংগঠন আইপিএফটির সঙ্গে। আইপিএফটি মূলত ত্রিপুরার আদিবাসী এলাকায় বিস্তৃত।


আইপিএফটি ত্রিপুরার ক্ষুদ্র জাতিসত্তা-অধ্যুষিত এলাকা নিয়ে পৃথক তুইপ্রাল্যান্ড বা ত্রিপরাল্যান্ড রাজ্যের জন্য দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছিল। তবে তাতে সায় দেয়নি ত্রিপুরার সাবেক বামফ্রন্ট সরকার। এবার ত্রিপুরায় বিজেপি ক্ষমতায় আসে আইপিএফটির সঙ্গে নির্বাচনী জোট করে। আইপিএফটির পৃথক রাজ্যের দাবি মেনে নিয়ে বিজেপি-আইপিএফটি জোট করে নির্বাচনে লড়ে। ফলাফলেও দেখা যায়, আদিবাসী এলাকায় প্রচুর ভোটে জয়ী হন আইপিএফটির প্রার্থীরা।

এদিকে ত্রিপুরার ক্ষমতা গ্রহণের পর নতুন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব রাজধানী দিল্লিতে গতকাল সোমবার সংসদ ভবনে গিয়ে দেখা করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে। তিনি প্রধানমন্ত্রীর কাছে ত্রিপুরার উন্নয়নের লক্ষ্যে বিশেষ আর্থিক প্যাকেজ প্রদানের আবেদনের জানান। লোকসভার স্পিকার সুমিত্রা মহাজনের সঙ্গেও দেখা করেন তিনি।

এ সময় মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব সাংবাদিকদের বলেন, ‘ত্রিপুরা ভেঙে আলাদা রাজ্য গড়ার বিষয়টি আমরা বিবেচনার মধ্যে রাখছি না। তবে আমরা রাজ্যের আদিবাসীদের উন্নয়নের জন্য সার্বিক ব্যবস্থা গ্রহণ করব। সেই লক্ষ্যে আমরা একটি কমিটিও গঠন করেছি।’

হঠাৎ করে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রীর ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে যাওয়ায় বিস্মিত হয়েছে আইপিএফটির সমর্থকেরা। তারা এখন কী করবে, তা জানা যায়নি।

এই ঘটনার পর রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠেছে, তবে কি পশ্চিমবঙ্গের ধাঁচে ত্রিপুরায় পা ফেলার উদ্যোগ নিয়েছে বিজেপি? কারণ, পশ্চিমবঙ্গেও দীর্ঘদিন ধরে পৃথক গোর্খাল্যান্ড রাজ্যের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। আর ২০০৯ এবং ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি ঘোষণা দেয়, দার্জিলিং লোকসভা আসনে বিজেপি প্রার্থী জিতলে তারা পৃথক গোর্খাল্যান্ড রাজ্য গড়ার ব্যাপারে উদ্যোগী হবে। এই ঘোষণার পর গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা বিজেপি প্রার্থীকে জিতিয়ে আনে। দুই দফায় জয়ের পর বিজেপির সাংসদ যশোবন্ত সিনহা, সুরেন্দ্র কুমার আলুওয়ালিয়াহ পৃথক গোর্খাল্যান্ড রাজ্য গড়ার ব্যাপারে তেমন উদ্যোগী হননি। তবে কি সেই ঘটনারই পুনরাবৃত্তি হলো এবার ত্রিপুরা রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে!