নারীর পোশাক নিয়ে অধ্যাপকের মন্তব্য, অতঃপর...

অধ্যাপকের আপত্তিকর মন্তব্যে দুই হাতে তরমুজের দুই খণ্ড নিয়ে প্রতিবাদ জানান এক নারী। ছবিটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে সংগৃহীত।
অধ্যাপকের আপত্তিকর মন্তব্যে দুই হাতে তরমুজের দুই খণ্ড নিয়ে প্রতিবাদ জানান এক নারী। ছবিটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে সংগৃহীত।

নারীদের শরীর নিয়ে এক অধ্যাপকের আপত্তিকর মন্তব্যে তোলপাড় শুরু হয়েছে ভারতের কেরালার কজহিকোদে শহরে। সেখানে একটি টিচার্স ট্রেনিং কলেজে রূপক অর্থে তরমুজ ব্যবহারের বিষয়ে ওই অধ্যাপক বলেছেন, ‘নারীদের শরীর ঠিকঠাকভাবে ঢাকতে তরমুজ প্রয়োজন।’

এমন মন্তব্যের প্রতিবাদে ফেটে পড়েছেন প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীসহ অন্যান্য জেলার শিক্ষার্থীরাও। ওই অধ্যাপকের নাম জোহর মোনাভভির। তিনি সম্প্রতি ফারুক ট্রেনিং কলেজে বক্তব্য দেওয়ার সময় আপত্তিকর মন্তব্যটি করেন। এতে ওই কলেজের শিক্ষার্থীসহ রাজ্যের পাশের জেলাগুলোর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রতিবাদ জানানো হচ্ছে।

নৈতিকতার প্রশ্ন তুলে রাজ্যজুড়ে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করছেন, ফারুক ট্রেনিং কলেজের ছাত্রীরা ঠিকঠাকভাবে হিজাব পরছিল না। ফলে ওই অধ্যাপক ইচ্ছাকৃতভাবে তাঁদের ‘কাটা তরমুজ’-এর সঙ্গে তুলনা করেছেন।

মঙ্গলবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, গত কয়েক দিনে অধ্যাপকের এ বক্তব্য ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। তাঁর মন্তব্যের প্রতিবাদে নারীরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উন্মুক্ত বক্ষ ও নগ্ন ছবি পোস্ট করা শুরু করেন। শিক্ষার্থীদের জন্য এমন অযাচিত পরামর্শে দেওয়ায় তাঁরা রাস্তায় নেমে এসেছেন।

জোহর মোনাভভির বলেছেন, ‘ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৮০ শতাংশ ছাত্রী। যার অধিকাংশ মুসলিম। তাঁরা পর্দা করে কিন্তু লেগিংস বের করে রাখে।’ তিনি বলেন, ‘নারীরা আর মুফতাহ পরার পরিবর্তে তাঁদের মাথা শাল বা স্কার্ফ দিয়ে ঢেকে রাখেন।...নারীদের অন্যতম একটি অংশ, যা পুরুষকে আকৃষ্ট করে। ইসলাম শিক্ষা দেয় যে তা ঢেকে রাখা উচিত।’

শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে জোহর মোনাভভির বলেন, ‘যখন তোমরা হিজাব পরছ, তখন তোমাদের শরীর দেখা যায়। কারণ সেখানে পুরুষেরা নারীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আকর্ষণীয় মনে করে। কিন্তু তোমরা কী করছ? তাঁরা শুধু তাঁদের মাথা ঢেকে রাখে এবং তাঁদের দেহের একটি অংশ প্রদর্শন করছ। তোমরা কী তরমুজ দেখেছ? দোকানগুলোতে তরমুজ কেটে রাখা হয়। কারণ, ক্রেতারা আসে এবং তারা যেটা চায়, সেটা পছন্দ করতে পারে। তোমরাও ঠিক একই রকম করছ।’

এ ঘটনায় ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওই বক্তব্যের একটি ভিডিও ক্লিপ সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। পরে ফারুক কলেজের শিক্ষার্থী ও কর্মচারীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটে এবং ওই শিক্ষকের ব্যাপক সমালোচনাও করা হয়েছে।