ঘৃণার বদলে সৌহার্দ্য: পানিশ আ মুসলিম ডে

ইস্ট লন্ডন মসজিদ আয়োজিত ঘৃণাবিরোধী সমাবেশে যোগ দেন বেথনাল গ্রিন অ্যান্ড বো আসনের এমপি রুশনারা আলী এবং টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের মেয়র মেয়র জন বিগস। মসজিদে মসজিদে হয় এমন সমাবেশ। ছবি: প্রথম আলো
ইস্ট লন্ডন মসজিদ আয়োজিত ঘৃণাবিরোধী সমাবেশে যোগ দেন বেথনাল গ্রিন অ্যান্ড বো আসনের এমপি রুশনারা আলী এবং টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের মেয়র মেয়র জন বিগস। মসজিদে মসজিদে হয় এমন সমাবেশ। ছবি: প্রথম আলো

মুসলিমদের প্রতি ঘৃণা প্রকাশে ৩ এপ্রিলকে ‘পানিশ আ মুসলিম ডে’ (মুসলিমদের ওপর হামলার দিবস) হিসেবে পালনের আহ্বান জানিয়ে যুক্তরাজ্যে বেনামি চিঠি বিলি হয়েছিল। ঘৃণার বদলে মুসলিমদের প্রতি সংহতি প্রকাশের মধ্য দিয়েই দিবসটি পার হলো। এই দিনে ঘৃণার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের লোকেরা পারস্পরিক সৌহার্দ্যের কথাই জানান দিল। বেনামি চিঠিতে ৩ এপ্রিলকে ‘পানিশ আ মুসলিম ডে’ হিসেবে পালনের আহ্বান জানিয়ে লিফলেট বিলি করা হয়। যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন শহরের বাসিন্দারা ডাকযোগে এমন লিফলেট পেয়েছেন। যুক্তরাজ্যের বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত দুই এমপি রুশনারা আলী, রূপা হকসহ চারজন মুসলিম এমপির সংসদীয় কার্যালয়েও বেনামি এই লিফলেট পাঠানো হয়। মুসলিমদের ওপর সম্ভাব্য হামলার তালিকা বাতলে দেওয়া হয় এই লিফলেটে। নারীদের হিজাব টেনে খুলে ফেলা, গালাগাল দেওয়া, শারীরিক আঘাত, এমনকি অ্যাসিড ছুড়ে মারার কথা উল্লেখ আছে এতে। পাশাপাশি সুনির্দিষ্ট স্কোর উল্লেখ করা আছে। হামলার ধরন বেঁধে হামলাকারী বিভিন্ন পয়েন্ট অর্জন করতে পারেন।

তবে শেষ পর্যন্ত গতকাল মঙ্গলবার অতিবাহিত হওয়া দিবসটিতে কোনো অঘটনের খবর পাওয়া যায়নি। যুক্তরাজ্য পুলিশ এদিন মুসলিমদের স্বাভাবিক চলাচল অব্যাহত রাখার পরামর্শ দিলেও বাড়তি সতর্কতা অবলম্বের আহ্বান জানায়। একই সঙ্গে ঘৃণাবিরোধী প্রচারে শামিল হতে বাসিন্দাদের অনুরোধ করে।

দিবসটিকে ঘিরে মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে উদ্বেগ বিরাজ করছিল। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকেই দিনটিতে প্রয়োজন ছাড়া মুসলিমদের বাইরে না যেতে পরামর্শ দেন। বাংলাদেশি সম্প্রদায়ের কয়েকজন প্রথম আলোকে জানান, তাঁরা এদিন ঘর থেকে বের হতে গেলে পরিবারের নারীরা তাঁদের বারণ করছিলেন। একজন জানালেন, নিরাপত্তার আশঙ্কায় তাঁর স্ত্রী এদিন সন্তানকে বিদ্যালয়ে যেতে দেননি।

এমন উদ্বেগের পাশাপাশি মুসলিম সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দ ঘৃণার বিরুদ্ধে মসজিদে মসজিদে সংহতি সমাবেশের আয়োজন করে। রাজনীতিক ও ধর্মীয় নেতৃবৃন্দের পাশাপাশি বিভিন্ন সম্প্রদায়ের লোকজন এসব সংহতি সমাবেশে যোগ দেন। ঘৃণার বিরুদ্ধে ঐক্যের বার্তায় সরব হয়ে ওঠে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। মুসলিমদের প্রতি সমর্থন জানিয়ে ‘লাভ আ মুসলিম ডে’ ‘প্রটেক্ট আ মুসলিম ডে’ এবং ‘উই স্ট্যান্ড টুগেদার’ শিরোনামের বার্তা ভাইরাল হয়। বিলি হয় ‘পানিশ আ মুসলিম ডে’র আদলে তৈরি ‘লাভ আ মুসলিম ডে’ প্রচারপত্র।