কারাগারেই স্থান হচ্ছে লুলার

লুলা ডি সিলভা
লুলা ডি সিলভা

দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত ব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা ডি সিলভা কারাগারে ঢুকতে চলেছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার দেশটির সুপ্রিম কোর্ট তাঁর বিরুদ্ধে ইতিপূর্বে দেওয়া ১২ বছর কারাদণ্ডের বিরুদ্ধে করা আপিল খারিজ করে দেন। আদালতের রায় দেশটিকে বিভক্তির দিকে ঠেলে দিয়েছে।

লুলার মুক্ত থাকার বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ আদালতের এ আদেশের পর ধারণা করা হচ্ছে, ব্রাজিলের দুর্নীতি দমনবিষয়ক প্রধান বিচারপতি সার্গিও মোরো লুলাকে কারাবন্দী করার ব্যাপারে শিগগিরই আদেশ জারি করবেন। লুলা দেশটিতে দুই মেয়াদে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেছেন। তাঁকে ঠিক কবে কারাগারে ঢোকানো হবে, সে বিষয়টি এখনো অস্পষ্ট। তবে আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ সময় দু-এক দিনের বেশি হবে না।

কারাগারে ঢোকা থেকে বাঁচতে লুলার করা আপিলের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে সুপ্রিম কোর্টের ১১ বিচারপতির বেঞ্চ গত বুধবার থেকে গতকাল পর্যন্ত ১০ ঘণ্টার বেশি সময় নেন। আপিলের পক্ষে ও বিপক্ষে সমানসংখ্যক বিচারপতি (৫-৫) মত দেন। তবে আদালতের সভাপতি বিচারপতি কারমেন লুসিয়ার সিদ্ধান্তে এ সমতা ভেঙে যায়। তিনি বলেন, কারাদণ্ড ভোগ করা থেকে লুলাকে অব্যাহতি দেওয়া হলে তা একধরনের দায়মুক্তি হতে পারে।

আপিলের ওপর রায় দেওয়ার ঘটনা সরাসরি স্থানীয় টেলিভিশনে সম্প্রচার করা হয়। লুলার কারাভোগ নিয়ে শীর্ষ বিচারপতিরা যেমন বিভক্ত হয়ে পড়েন, তেমনি তা দেখে জনগণও বিভক্তির মধ্যে পড়েন। দেশের গণতন্ত্রের অবস্থা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তাঁরা। ওয়ার্কার্স পার্টির প্রধান গ্লেইসি হফম্যান বলেন, এটি গণতন্ত্র ও ব্রাজিলের জন্য একটি দুঃখের দিন।

সরকারি কাজ পাইয়ে দেওয়ার বিনিময়ে ঘুষ হিসেবে ব্রাজিলের একটি বড় নির্মাণপ্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে এক বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্ট নেন লুলা। এ ঘটনায় গত বছর তাঁকে ১২ বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত। এর বিরুদ্ধে তিনি আদালতে আপিল করেন।

লুলাকে কারাগারে ঢোকানো ও আগামী নির্বাচনে তাঁকে অংশগ্রহণ করতে না দেওয়ার দাবিতে গত মঙ্গলবার সাওপাওলোতে বিক্ষোভ করে প্রায় ২০ হাজার মানুষ। বিপরীতে গত বুধবার ব্রাসিলিয়ায় ছোট আকারে সমাবেশ করেন লুলাপন্থীরা।