দ্রুত সেরে উঠছেন স্ক্রিপাল ও ইউলিয়া

সের্গেই স্ক্রিপাল এবং তাঁর মেয়ে ইউলিয়া স্ক্রিপাল। রয়টার্স ফাইল ছবি
সের্গেই স্ক্রিপাল এবং তাঁর মেয়ে ইউলিয়া স্ক্রিপাল। রয়টার্স ফাইল ছবি

রাশিয়ার সাবেক গোয়েন্দা সের্গেই স্ক্রিপাল ‘দ্রুত সেরে’ উঠছেন। তাঁর শারীরিক অবস্থা ‘এখন আর জটিল নয়’। গতকাল শুক্রবার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানায় বলে সিএনএনের খবরে বলা হয়।

সলসবারি ডিস্ট্রিক্ট হাসপাতালের মেডিকেল ডিরেক্টর ক্রিস্টিন ব্ল্যানশার্ড বলেছেন, ৬৬ বছর বয়সী স্ক্রিপাল চিকিৎসায় ভালো সাড়া দিচ্ছেন।

গত ৪ মার্চ যুক্তরাজ্যের সলসব্যারি শহরে একটি রেস্তোরাঁর বাইরে অচেতন অবস্থায় পাওয়া যায় সের্গেই স্ক্রিপাল এবং তাঁর মেয়ে ইউলিয়া স্ক্রিপালকে। পরে জানা যায়, তাঁরা বিষাক্ত রাসায়নিকে আক্রান্ত। সের্গেই স্ক্রিপাল রাশিয়ার গোয়েন্দা ছিলেন। যুক্তরাজ্যের গোয়েন্দাদের কাছে রাশিয়ার গোপন তথ্য বিক্রি করে দিয়ে নিজ দেশের সঙ্গে প্রতারণা করেন তিনি। দ্বৈত প্রতিনিধি (ডাবল এজেন্ট) হিসেবে কাজ করার দায়ে ২০০৬ সালে রাশিয়ায় তাঁর সাজা হয়। ২০১০ সালে গোয়েন্দা বিনিময়ের মাধ্যমে ছাড়া পেয়ে যুক্তরাজ্যে আশ্রয় নেন সের্গেই স্ক্রিপাল।

এরই মধ্যে গত সপ্তাহে তাঁর মেয়ে ইউলিয়া স্ক্রিপালের চেতনা ফিরে আসে। এরপর তিনি বৃহস্পতিবার এক বিবৃতি দেন। এতে তিনি যেসব চিকিৎসক তাঁদের চিকিৎসা করেছেন, তাঁদের ধন্যবাদ জানান। একই সঙ্গে শুভানুধ্যায়ী সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।

গতকাল ক্রিস্টিন ব্ল্যানশার্ড বলেন, ইউলিয়া নিজেই বলতেন, প্রতিদিন তাঁর মনের জোর বাড়ছে। কবে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাবেন, সে অপেক্ষায় আছেন।

গত সপ্তাহে গোয়েন্দারা জানান, তাঁদের ধারণা, স্ক্রিপাল প্রথমে বিষাক্ত রাসায়নিকে আক্রান্তের শিকার হন।

এ ঘটনার পর দুই দেশের মধ্যে টানাপোড়েন শুরু হয়। এরই জের ধরে যুক্তরাজ্য এবং এর মিত্রদেশগুলো ১৩০ জনের বেশি রাশিয়ান কূটনীতিককে বহিষ্কার করেছে। জবাবে রাশিয়াও সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর সমানসংখ্যক কূটনীতিক বহিষ্কার করে।

তবে যুক্তরাজ্যের সামরিক গবেষণাগার (মিলিটারি ল্যাবরেটরি) পোর্টন ডাউন জানিয়েছে, যে রাসায়নিক দিয়ে যুক্তরাজ্যে আশ্রিত সাবেক রুশ গোয়েন্দা এবং তাঁর মেয়েকে হত্যার চেষ্টা হয়েছে, সেটির উৎস সম্পর্কে তারা কিছু জানে না। অথচ ওই রাসায়নিক রাশিয়ার তৈরি দাবি করে এত দিন তুলকালাম করল যুক্তরাজ্য।

রাশিয়া শুরু থেকে এ ঘটনায় নিজেদের সম্পৃক্ততা অস্বীকার করে আসছে। যুক্তরাজ্যের সঙ্গে যৌথভাবে ঘটনাটি তদন্তের প্রস্তাব দিয়ে আসছে। সর্বশেষ রাসায়নিক অস্ত্র বিষয়ে নজরদারি করা আন্তর্জাতিক সংস্থা ‘অর্গানাইজেশন ফর দ্য প্রোহিভিশন অব কেমিক্যাল ওয়েপন’-এর (ওপিসিডব্লিউ) মাধ্যমে যুক্তরাজ্যকে বৈঠকে ডাকে রাশিয়া।

গত বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে জাতিসংঘে রাশিয়ার কূটনীতিক ভ্যাসিলি নেবেনজিয়া বলেন, রাশিয়াকে দোষী করে যেসব অভিযোগ আনা হচ্ছে, তা ‘মিথ্যা গল্প’। যুক্তরাজ্য ‘আগুন নিয়ে খেলছে’ ওবং এর জন্য তাদের ‘অনুশোচনা’ করতে হবে।