দিল্লিতে মঙ্গল শোভাযাত্রা করতে চায় বাংলাদেশ

দিল্লির চাণক্যপুরীতে প্রবাসী ভারতীয় কেন্দ্রে আয়োজিত বাংলা নববর্ষ উদযাপন অনুষ্ঠানে ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সৈয়দ মুয়াজ্জেম আলী ও তাঁর স্ত্রী তুফা জামান আলীর সঙ্গে সৃষ্টি কালচারাল সেন্টারের শিল্পীরা। নয়াদিল্লি, ভারত, ১৪ এপ্রিল। ছবি: সংগৃহীত
দিল্লির চাণক্যপুরীতে প্রবাসী ভারতীয় কেন্দ্রে আয়োজিত বাংলা নববর্ষ উদযাপন অনুষ্ঠানে ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সৈয়দ মুয়াজ্জেম আলী ও তাঁর স্ত্রী তুফা জামান আলীর সঙ্গে সৃষ্টি কালচারাল সেন্টারের শিল্পীরা। নয়াদিল্লি, ভারত, ১৪ এপ্রিল। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকার মতো দিল্লির রাজপথেও আগামী বছর পয়লা বৈশাখের দিন মঙ্গল শোভাযাত্রা বের করতে চাইছে বাংলাদেশ। ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সৈয়দ মুয়াজ্জেম আলী গতকাল শনিবার বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে এ কথা জানান। তিনি বলেন, রাজধানী দিল্লিতেও বর্ণাঢ্য মঙ্গল শোভাযাত্রা বের করার প্রস্তাব কোনো কোনো মহল থেকে এসেছে। বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।

দিল্লির চাণক্যপুরীতে প্রবাসী ভারতীয় কেন্দ্রে গতকাল সন্ধ্যায় আয়োজিত বাংলা নববর্ষ উদ্‌যাপন অনুষ্ঠানে মুয়াজ্জেম আলী এ বিষয়ে সমবেত অতিথিদের অভিমত জানতে চান। সেসময় গোটা প্রেক্ষাগৃহ তুমুল হাততালির মধ্য দিয়ে প্রস্তাবটি সমর্থন করে।

এবারই প্রথম হাইকমিশনের উদ্যোগে দিল্লিতে এত বড় আকারে বাংলা বর্ষবরণের অনুষ্ঠান উদ্‌যাপিত হলো। এর উদ্যোগ প্রধানত হাইকমিশনারের স্ত্রী তুফা জামান আলীর। তাঁরই ভাবনা অনুযায়ী মঙ্গল শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। নতুন পোশাকে সেজে পুরুষ-নারী, কিশোর-কিশোরীরা হাতে মুখোশ নিয়ে বাজনার সঙ্গে আগমনী গান গাইতে গাইতে দুই দিক দিয়ে মঞ্চে ওঠেন। গোটা প্রেক্ষাগৃহ তখন এক টুকরো বাংলা।

অনুষ্ঠানে আসার কথা ছিল ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের। কিন্তু বিশেষ কারণে আসতে না পারায় তিনি একটি লিখিত বার্তা পাঠান। ইন্ডিয়ান সেন্টার ফর কালচারাল রিলেশনসের (আইসিসিআর) ডিরেক্টর জেনারেল রিভা গাঙ্গুলি দাস সেই বার্তা পাঠ করেন। বার্তায় সুষমা বলেন, ‘ভারত ও বাংলাদেশের চিরন্তন সম্পর্ককে দৃঢ় করেছে দুই দেশের শিল্প, সংস্কৃতি ও সংগীত। আমরা দুই দেশই একে অন্যের সাফল্যে খুশি হই। প্রয়োজনের সময় একে অন্যের পাশে দাঁড়াই।’

অতিথিদের মধ্যে ছিলেন বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও কূটনীতিকরা। হাইকমিশনার মুয়াজ্জেম আলী বলেন, পয়লা বৈশাখ উদ্‌যাপনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতার চেতনা ও ধর্মনিরপেক্ষ সমাজের প্রতিফলন ঘটে। জাত, ধর্ম, বর্ণ, শ্রেণি নির্বিশেষে সব বাঙালি এ উৎসবে শামিল হন। এটাই বাংলাদেশের শক্তি।

অনুষ্ঠানের মূল আকর্ষণ ছিল ঢাকার সৃষ্টি কালচারাল সেন্টারের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। বিশিষ্ট নৃত্য শিল্পী ও কোরিওগ্রাফার আনিসুল ইসলাম ও তাঁর সহযোগীরা এক ঘণ্টা ধরে বিভিন্ন ধারার বাংলা গান ও নাচে মোহিত করে রাখেন দর্শকদের। অনুষ্ঠান শেষ হয় শরিফ মহম্মদ, বর্ণা বৃষ্টি বান্টি, মৃত্তিকা রহমান, মো. এমবাদুল হক, নাফিসা ফারিয়া সাদাত প্রমি, হৃদিকা সামরোজ সাবা মোহাম্মদ, রুহুল আমিন বাবু ও প্রতীক দেবের অনুপম সৃষ্টির মধ্য দিয়ে, যেখানে লাল-সবুজ রঙের বাহারে ও নৃত্য-গীতের আবহে হাতে হাতে উঠে আসে বাংলাদেশের পতাকা।