জার্মানিতে হিটলারের জন্মদিন পালন নিয়ে উত্তেজনা

অ্যাডলফ হিটলার। ছবি: সংগৃহীত
অ্যাডলফ হিটলার। ছবি: সংগৃহীত

জার্মান, পোল্যান্ড ও চেক প্রজাতন্ত্র—এই তিন দেশের নব্য নাৎসিরা সম্মিলিতভাবে অ্যাডলফ হিটলারের জন্মদিন পালনের উদ্যোগ নিয়েছে। জার্মানি ও পোল্যান্ড সীমান্তে অবস্থিত ছোট শহর অস্ট্রিৎজে ২০ এপ্রিল দুই দিনব্যাপী কনসার্ট, মার্শাল আর্ট, প্রচারণা ইত্যাদি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। অভিযোগ আছে, হিটলারের জন্মদিনের কথা আড়াল করে এ আয়োজন করা হয়েছে।

জার্মানির পূর্বাঞ্চলের সাক্সেন রাজ্যের অস্ট্রিৎজ শহরে দুই দিনের এ অনুষ্ঠান নিয়ে দেশটিতে সমালোচনার ঝড় বইছে। স্থানীয় অধিবাসীরা, বিভিন্ন সংগঠন ও রাজনৈতিক নেতৃত্ব এ আয়োজনের বিরুদ্ধে ‘শান্তির জন্য উৎসব’ নাম দিয়ে পাল্টা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। অস্ট্রিৎজ শহরের আশপাশের ৪০ জন মেয়র নব্য নাৎসিদের এ আয়োজনের বিরোধিতা করে এক বিবৃতি দিয়েছেন। তাতে বলা হয়েছে, ‘আমরা নিকটবর্তী অস্ট্রিৎজ শহরে বা অন্য কোথাও নব্য নাৎসিদের কোনো অনুষ্ঠান দেখতে চাই না। যাঁরা মানবাধিকার ও গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে পদদলিত করে অপরাধমূলক স্বৈরশাসনের পক্ষে কথা বলেন, আমরা তাঁদের ঘৃণার সঙ্গে প্রত্যাখ্যান করছি।’

৭৩ বছর আগে সংঘটিত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সূচনাকারী হিসেবে পরিচিত অ্যাডলফ হিটলার। ১৮৮৯ সালের ২০ এপ্রিল অস্ট্রিয়ার ইন নদীর তীরে ব্রাউনাউ শহরে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। ১৯৩৩ সালে চ্যান্সেলর পদে নিযুক্ত হওয়ার পর, জার্মানিতে বিরুদ্ধবাদী সব দলমতের মানুষদের ওপর হত্যা ও নির্যাতন শুরু করেছিলেন হিটলার।

১৯৩৯ সালে প্রতিবেশী দেশ পোল্যান্ড আক্রমণের মধ্য দিয়ে হিটলার দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু করেছিলেন। ১৯৪৫ সালের ৩০ এপ্রিল বার্লিনে তাঁর আত্মহত্যার মধ্য দিয়ে সেই মহাযুদ্ধ শেষ হয়েছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে প্রায় ছয় কোটি মানুষ নিহত হয়। বিশ্বযুদ্ধের সময় হিটলার ও তাঁর সহযোগীরা জার্মানি তথা ইউরোপে যে বর্বরতা ও হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিলেন, তা ইতিহাসের একটি নৃশংস অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত।

উল্লেখ্য, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তির পর থেকে প্রতীক ও পতাকাসহ নাৎসি দলটি নিষিদ্ধ রয়েছে। এই দলের এখনকার অনুসারীরা নব্য নাৎসি নামে পরিচিত। এ ছাড়া আরও নানা নামে জার্মানি ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশে নব্য নাৎসিরা কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

১৯৯০ সাল থেকেই সাবেক পূর্ব জার্মানির সাক্সেন রাজ্যের অস্ট্রিৎজ, গার্টলিস ও বাউটসেন অঞ্চলগুলো নব্য নাৎসিদের চারণভূমি বলে পরিচিত। ২০ এপ্রিলের অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে অস্ট্রিৎজ শহর ও আশপাশের অঞ্চলের পুলিশ সদস্যদের সতর্ক অবস্থায় রাখা হয়েছে। এ জন্য জার্মানির বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পুলিশ সদস্যদের সেখানে আনা হয়েছে।