লন্ডনে সেই হামলার বিস্তারিত জানালেন উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়

পূর্ব লন্ডনে গতকাল শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে হামলার ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরেন ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়। ছবি: প্রথম আলো
পূর্ব লন্ডনে গতকাল শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে হামলার ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরেন ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়। ছবি: প্রথম আলো

বাংলাদেশের ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয় লন্ডনে কমনওয়েলথ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে গিয়ে গত মঙ্গলবার বিএনপি কর্মীদের হামলার শিকার হন। সংবাদ সম্মেলনে জয় অভিযোগ করেন, সম্মেলন থেকে তিনি গাড়িতে উঠতে গেলে কয়েকজন এসে তাঁর উদ্দেশে অশালীন মন্তব্য করতে থাকে। একপর্যায়ে তাঁকে শারীরিকভাবে হেনস্তা করে।

উপমন্ত্রী আরিফ খান জয় বলেন, ব্রিটিশ সরকারের আমন্ত্রণে তিনি কমনওয়েলথ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে যুক্তরাজ্যে আসেন। ঘটনার দিন দ্বিতীয় এলিজাবেথ সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত সম্মেলনের ইয়ুথ ফোরামের আলোচনায় তিনি অংশ নেন। সেখান থেকে বের হয়ে নিরাপত্তাবেষ্টনী পার হয়ে কাজেই রাখা গাড়িতে উঠতে যাচ্ছিলেন তিনি। এমন সময় হুট করে এক লোক এসে সম্মেলনে তাঁর যোগ দেওয়া নিয়ে অশালীন কথা বলতে শুরু করে। উপমন্ত্রী তাঁকে বোঝানোর চেষ্টা করেন, বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করার জন্য তিনি এখানে এসেছেন। বাংলাদেশের মানুষ হয়ে তাঁর প্রতি অবমাননাকর আচরণ নিজ দেশের জন্যই লজ্জার। এর মধ্যে আরও কয়েকজন এসে জড়ো হয়। তারাও তাঁর উদ্দেশে অশালীন মন্তব্য করে। একপর্যায়ে তাঁকে শারীরিকভাবে আক্রমণ করতে শুরু করে। তিনি আশ্রয়ের জন্য পাশের বারক্লেস ব্যাংকের সামনে ছুটে যান।

বিএনপির সবাই খারাপ লোক নন মন্তব্য করে আরিফ খান জয় বলেন, বিএনপির অনেকেই দৌড়ে এসে তাঁকে হামলা থেকে রক্ষা করেছেন। বিএনপির কিছু লোক যখন তাঁকে ঘিরে ধরে আশ্রয় দিচ্ছিলেন, তখনো হামলাকারীরা তাঁর দিকে নানা কিছু ছুড়ে মারছিল। কিছুক্ষণ পর পুলিশ এসে তাঁকে উদ্ধার করে।

উপমন্ত্রী বলেন, বিদেশের মাটিতে বিএনপির এই আচরণ বাংলাদেশকেই খাটো করেছে।

যুক্তরাজ্য স্বেচ্ছাসেবক লীগ উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়ের ওপর হামলার প্রতিবাদ জানাতে ওই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। সংগঠনের সভাপতি সায়েদ আহমদের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সামসুল ইসলাম। লন্ডনে অবস্থানরত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানের নির্দেশে যুক্তরাজ্য বিএনপির নেতা-কর্মীরা একের পর এক আক্রমণ করছেন বলে লিখিত বক্তব্যে অভিযোগ করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সভাপতি সুলতান মাহমুদ শরীফ ও সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাজিদুর রহমান ফারুক এই হামলার নিন্দা জানিয়ে বক্তব্য দেন।

যোগাযোগ করা হলে যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি এম এ মালেক বলেন, তাঁরা শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ করছিলেন। উপমন্ত্রী আরিফ খান জয় তাঁদের কাছে গিয়ে কয়েকজনের সঙ্গে তর্কে জড়ান। বিএনপি বিক্ষোভ করে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে বলে হুমকি-ধমকি দেন। শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে অশান্তি সৃষ্টির দায়ে তিনি আরিফ খান জয়ের বিরুদ্ধে মামলা করবেন বলে জানান। তিনি জানান, আরিফ খান জয়ের ওপর হামলার ঘটনায় পুলিশ তিনজনকে আটক করেছিল। তাঁরা তিনজনই এখন জামিনে আছেন।