পুরুষ কিসে সুখী হয়: গবেষণায় মিলেছে চমক জাগানিয়া ফল

মানুষের জীবন বহুমাত্রিক। একেকজনের জীবনদর্শনও একেক রকম। সেই অনুযায়ীই ওঠা-নামা করে সুখের সূচক। কেউ সুখ পান টাকা কামিয়ে। কেউ আবার পড়াশোনাতেই পান আনন্দ। কারও আবার দাম্পত্য সুখেই স্বস্তি। আবার নারী-পুরুষভেদেও সুখের সংজ্ঞা আলাদা। ঠিক এ বিষয়টি নিয়েই সম্প্রতি গবেষণা করেছে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা। আর তাতে পাওয়া গেছে চমক জাগানিয়া ফলাফল।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য টাইমসের খবরে বলা হয়েছে, পুরুষেরা সব সময়ই বাবা-মায়ের শিক্ষাগত যোগ্যতা ছাপিয়ে যেতে চান। তাতেই নিজেকে সফল বলে মনে করেন পুরুষ। আর সেটি না হলেই অসন্তুষ্টিতে ভোগেন তাঁরা। সেই অসুখী মনের প্রভাব পড়ে পুরুষের কাজে ও জীবনে। অন্যদিকে, নারীদের সুখী হওয়ার ক্ষেত্রে এসবের কোনো বালাই নেই। সুখী হওয়ার জন্য বাবা-মাকে ছাপিয়ে যাওয়ার ইচ্ছে জাগে না তাঁদের।

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা এ সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন। গবেষণার মাধ্যমে এই ফলাফল পেয়েছেন তাঁরা। এ জন্য ২৫ থেকে ৬৫ বছর বয়সীদের ওপর জরিপ চালানো হয়। ২৮টি দেশের মোট ৫২ হাজার ৭৭৩ জন মানুষ এই জরিপে অংশ নিয়েছেন। ২০১২ থেকে ২০১৪ সাল—এই তিন বছর ধরে চলে জরিপ। তাতে দেখা গেছে, উচ্চশিক্ষিত বাবা-মায়ের ছেলেরা সব সময় তাঁদের ছাড়িয়ে যেতে চান। আর যাঁরা ছাপিয়ে যেতে পারেন না, তাঁরা প্রচণ্ড মানসিক পীড়নে থাকেন। সে বিষয়টি ওই পুরুষদের অসুখী করে তোলে।

অন্যদিকে, যেসব ছেলে বাবা-মায়ের চেয়ে উচ্চশিক্ষিত, তাঁরা ৫০ শতাংশ কম হারে মানসিক পীড়নে ভোগেন। জরিপে আরও দেখা গেছে, নারীরা এ ধরনের কোনো মানসিক চাপে ভোগেন না। বাবা-মায়ের শিক্ষাগত যোগ্যতা ছাপিয়ে যেতে হবে বা তাঁর সমান হতে হবে—এমন উচ্চাকাঙ্ক্ষা নারীদের থাকে না। তাই এই বিষয়টি তাঁদের অসুখীও করে না।

গবেষক দলের প্রধান আলেক্সি গোগোশভিলি বলেন, ‘এর মূল কারণ এটি হতে পারে যে পুরুষেরা নিজেদের মেধা, সক্ষমতা ও প্রচেষ্টার ওপর বেশি নির্ভর করতে চায়।’

নর্থামব্রিয়া ইউনিভার্সিটির ব্রিটিশ সোশিওলজিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনে এই গবেষণাপত্রটি উপস্থাপিত হওয়ার কথা রয়েছে।