বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অঙ্গীকার সিপিএমের ২২তম পার্টি কংগ্রেসে

ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্ক্সবাদী) বা সিপিআইএমের ২২তম পার্টি কংগ্রেস গতকাল রোববার শেষ হয়েছে ভারতের অন্ধ্র প্রদেশের রাজধানী হায়দরাবাদে। পাঁচ দিনব্যাপী আয়োজিত এই পার্টি কংগ্রেস শুরু হয়েছিল গত বুধবার।

গতকাল সমাপ্তি দিনে ঘোষণা করা হয় সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটি এবং পলিটব্যুরো সদস্যদের নাম। এবার কেন্দ্রীয় কমিটির দ্বিতীয়বারের মতো সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন সীতারাম ইয়েচুরি। সীতারাম ইয়েচুরি এর আগে ২০১৫ সালের এপ্রিল মাসে বিশাখাপট্টনামে আয়োজিত পার্টি কংগ্রেসে প্রথম সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন। এদিন ৯৫ সদস্যবিশিষ্ট কেন্দ্রীয় কমিটির নামও ঘোষণা করা হয়। আগে কেন্দ্রীয় কমিটি ছিল ৯১ সদস্যের। এবার বেড়ে হয়েছে ৯৫। এই ৯৫ সদস্যবিশিষ্ট কমিটিতে পশ্চিমবঙ্গ থেকে এসেছেন নতুন চারটি মুখ। তাঁরা হলেন সুজন চক্রবর্তী, রবীন দেব, আভাষ রায়চৌধুরী ও অমিয় পাত্র। মোট নতুন মুখের সংখ্যা ১৫।

এ ছাড়া এদিন ঘোষণা করা হয় ১৭ সদস্যের পলিটব্যুরোর সদস্যদের নাম। আগে পলিটব্যুরো ছিল ১৫ সদস্যের। এবার করা হয়েছে ১৭ সদস্যের। এবারে এই পলিটব্যুরোয় নতুন দুজন সদস্যকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। আর এই দুজন হলেন পশ্চিমবঙ্গ থেকে নীলোৎপল বসু ও তপন সেন। ফলে, এই পলিটব্যুরোতে এখন বাঙালি সদস্যসংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭। এবার পার্টি কংগ্রেসে দেখা গেছে বাংলার রাজনৈতিক লাইনের জয়জয়কার।

তবে এবার বাংলা থেকে কেন্দ্রীয় কমিটিতে বাদ পড়েছেন গৌতম দেব, মদন ঘোষ ও দীপক দাশগুপ্ত। তা ছাড়া আমন্ত্রিত সদস্য পদ থেকে এবার সরে দাঁড়িয়েছেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। তবে বিশেষ আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে আনা হয়েছে মদন ঘোষকে। কেন্দ্রীয় কমিটিতে রয়েছেন ত্রিপুরার মানিক সরকার। রয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান ৭৭ বছর বয়সী বিমান বসু। আর পলিটব্যুরোতে রয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের সিপিএম নেতা ও সাংসদ মহম্মদ সেলিম।

গতকাল পার্টি কংগ্রেস শেষে হায়দরাবাদে আয়োজিত বিশাল সমাবেশে দলের নতুন সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি বলেছেন, ‘সিপিএম আজ ঐক্যবদ্ধ। এই মুহূর্তে দলের আশু লক্ষ্য বিজেপি-আরএসএসের হাত থেকে দেশ ও দেশবাসীকে রক্ষা করা। এদের হারানোই আমাদের প্রধান লক্ষ্য।’

ইয়েচুরি বলেন, ‘এই পার্টি কংগ্রেসের মাধ্যমে আমাদের জাতীয় স্তরে বিজেপিবিরোধী লড়াই এক নতুন মাত্রা পেয়েছে। আমাদের পার্টির বড় সম্পদ ঐক্য। সামনেই আমাদের বড় যুদ্ধ। সেই যুদ্ধের জন্য এই ঐক্য আরও বাড়াতে হবে। কংগ্রেসের সঙ্গে কোনো রাজনৈতিক জোট হবে না। তবে সংসদের ভেতরে-বাইরে সাম্প্রদায়িকতার মতো মারাত্মক বিপদ রুখতে কংগ্রেসসহ সব ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক দলের সঙ্গে সমঝোতা হবে।’