ভারতে কিশোরী ধর্ষণ মামলায় স্বঘোষিত ধর্মগুরু আশারামের যাবজ্জীবন

গুরু আশারাম। ছবি: এএফপি
গুরু আশারাম। ছবি: এএফপি

ভারতের এক স্বঘোষিত গুরু আশারাম বাপুকে কিশোরী ধর্ষণের দায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ বুধবার রাজস্থানের যোধপুরের আদালত ৭৭ বছর বয়সী আশারামকে এ দণ্ড দেন।

গত বছরের ২৫ আগস্ট জোড়া ধর্ষণ মামলায় আদালত এক ধর্মগুরু গুরুমিত রাম রহিম সিং ইনসানকে ২০ বছর কারাদণ্ড দিয়েছিলেন। এই রায়ের প্রতিবাদে রাম রহিম সিংয়ের শিষ্যরা গত বছর ২৮ আগস্ট দিল্লিসহ চার রাজ্যে ব্যাপক সহিংসতার আশ্রয় নিয়েছিল। সেই সহিংসতায় ৩৬ জনের প্রাণ গিয়েছিল। ক্ষতি হয়েছিল ২০০ কোটি রুপির সম্পত্তি।

সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতে আজকের এই রায় এল।

রাম রহিম সিংয়ের মতো যাতে আইনশৃঙ্খলার অবনতি না ঘটে, সেই লক্ষ্যে আজ রাজস্থান, গুজরাট ও হরিয়ানা রাজ্যে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। যোধপুরের কেন্দ্রীয় কারাগারে বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়। নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয় বিচারপতি এবং অভিযোগকারী কিশোরী বাড়িতেও। এমনকি আশারামের পল রোডের আশ্রম ফাঁকা করে দেওয়া হয়, যাতে সেখানে তাঁর শিষ্যরা কোনো গন্ডগোল পাকাতে না পারে। ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত যোধপুর শহরে জারি করা হয় ১৪৪ ধারা। নজরদারি বাড়ানো হয় শহরের বিভিন্ন আবাসিক হোটেল, গেস্ট হাউস, ধর্মশালাসহ বিভিন্ন রেলস্টেশন ও বাস টার্মিনালে।

যোধপুর কারাগারে স্থাপিত বিশেষ আদালতে সকালে রায় ঘোষণা করেন বিচারক মধুসূদন শর্মা। রায়ে একই সঙ্গে এই মামলার অপর চার অভিযুক্ত ব্যক্তির মধ্যে দুজনের ২০ বছর করে সাজা দেন আদালত। বাকি দুজনকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়। ২০১৩ সালের ৬ নভেম্বর এই মামলার আশারামসহ চারজনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেওয়া হয়।

আশারামের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ২০১৩ সালে উত্তর প্রদেশের শাহজাহানপুরের ১৬ বছর বয়সী এক কিশোরীকে ধর্ষণ করেন। মানাই গ্রামে নিজের আশ্রমে নিয়ে গিয়ে কিশোরীকে ধর্ষণ করেন গুরু আশারাম। এ ছাড়া আরেকটি ধর্ষণ মামলায় দুই সহোদরা ধর্ষণের অভিযোগ আনেন আশারাম এবং তাঁর ছেলের বিরুদ্ধেও। যদিও আশারামের ধর্ষণ মামলা শুরু হওয়ার পর এই দুই মামলার নয়জন সাক্ষীর বিরুদ্ধে হামলা হয়েছে। মারাও গিয়েছেন তিনজন।

মামলার রায় ঘোষণার পর ধর্ষণের শিকার কিশোরীর বাবা বলেছেন, ‘এবার আশা করি আশারামকে চরম শাস্তি দেবে আদালত। একই সঙ্গে এই মামলার জেরে যাঁরা অপহৃত হয়েছে, তাদের ব্যাপারেও আমরা ন্যায্য বিচার পাব।’