কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে ডি-লিট নেবেন শেখ হাসিনা

জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়িতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানানো হয়। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি
জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়িতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানানো হয়। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি


ভারতের পশ্চিমবঙ্গে আজ শনিবার বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মদিন উদ্‌যাপন করা হচ্ছে। নজরুলজয়ন্তীতে বর্ধমানের আসানসোল শহরে কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজন করা হয়েছে বিশেষ সমাবর্তন উৎসবের। এতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেওয়া হবে বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানজনক ডি–লিট।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুদিনের সফরে গতকাল শুক্রবার পশ্চিমবঙ্গে এসেছেন। গতকাল কলকাতার নেতাজি সুভাষচন্দ্র আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামেন। পরে বিশেষ হেলিকপ্টারে চলে যান কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিবিজড়িত বীরভূমের শান্তিনিকেতনে। সেখানে তিনি প্রথমে যোগ দেন বিশ্বভারতীর সমাবর্তন উৎসবে। এরপর শান্তিনিকেতনের পূর্বপল্লিতে বাংলাদেশ সরকারের অর্থানুকল্যে নির্মিত ‘বাংলাদেশ ভবনে’ যান। শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ ভবন। বাংলাদেশ সরকার-প্রদত্ত ২৫ কোটি রুপি ব্যয়ে নির্মিত হয়েছে এই ভবন। বাংলাদেশ সরকার আরও ১০ কোটি রুপি দিয়েছে এই ভবনের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এরপর গতকাল বিকেলেই চলে আসেন কলকাতায়। বিকেলে তিনি কবিগুরুর স্মৃতিবিজড়িত কলকাতার জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়িতে যান। ঘুরে দেখেন ঠাকুরবাড়ি। সঙ্গে ছিলেন শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানা, শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সব্যসাচী বসু রায় চৌধুরী, পশ্চিমবঙ্গের নগর উন্নয়নমন্ত্রী ফরহাদ হাকিম, পর্যটনমন্ত্রী ব্রাত্য বসু প্রমুখ।

সন্ধ্যায় শেখ হাসিনা কলকাতার শিল্পপতিদের সঙ্গে দেখা করেন। ভারতীয় শিল্পপতিদের বাংলাদেশের শিল্পে বিনিয়োগ এবং বাংলাদেশের শিল্পপতিদের ভারতের শিল্পে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এতে দুদেশ শিল্প আরও উন্নত হতে পারে। রাতে তিনি পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠির রাজভবনে দেওয়া নৈশভোজে অংশ নেন।

জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়িতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি
জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়িতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি


জন্মদিনে বিদ্রোহী কবির জন্মভিটা বর্ধমানের চুরুলিয়া গ্রামে শুরু হয়েছে নজরুল মেলা। আজ সকালেই কলকাতা থেকে আসানসোল এসে শেখ হাসিনা যোগ দেবেন কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত বিশেষ সমাবর্তন উৎসবে। উৎসব শুরু হবে দুপুর পৌনে ১২টার দিকে। দুপুর সোয়া ১২টার দিকে শেখ হাসিনাকে সম্মানজনক ডি–লিট দেওয়া হবে। ডি–লিট দেবেন কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য ও পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠি। অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষণ দেবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সাধন চক্রবর্তী।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রথম আলোকে বলেন, এবার এই বিশ্ববিদ্যালয়ে এটি তৃতীয় সমাবর্তন উৎসব। এই বিশেষ সমাবর্তন উৎসবে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে তুলে দেওয়া হবে সম্মানজনক ডি–লিট। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বর্ণপদক পাওয়া ২০ জন কৃতী শিক্ষার্থীকে সংবর্ধনা দেওয়া হবে।

ডি–লিট নেওয়ার পর শেখ হাসিনা ভাষণ দেবেন। এরপর তিনি ফিরে যাবেন কলকাতায়। বিকেলে তাঁর স্বাধীনতাসংগ্রামী নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর দক্ষিণ কলকাতার এলগ্রিন রোডের বাসভবনে যাওয়ার কথা। তারপর রাতে বাংলাদেশে ফিরে যাবেন তিনি।

শেখ হাসিনা ১৯ বছর আগে প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারি বাজপেয়ির আমলে নজরুল জন্মশতবর্ষ উৎসবে যোগ দিতে বর্ধমানের আসানসোলের চুরুলিয়ায় গিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় তাদের সর্বোচ্চ সম্মান ‘দেশিকোত্তম’ প্রদান করেছিল ১৯৯৯ সালের ২৮ জানুয়ারি।