সিঙ্গাপুরে ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে যোগ দিতে টয়লেট নিয়ে গেলেন কিম

কিম জং-উনের পেছনে তাঁর ব্যক্তিগত ভ্রাম্যমাণ টয়লেট। ছবি: কোরিয়ান সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সির সৌজন্যে
কিম জং-উনের পেছনে তাঁর ব্যক্তিগত ভ্রাম্যমাণ টয়লেট। ছবি: কোরিয়ান সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সির সৌজন্যে

উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়, পারস্পরিক দ্বন্দ্ব ও সংঘাতসহ নানা চড়াই-উতরাই পাড়ি দিয়ে অবশেষে কাল মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্র ও উত্তর কোরিয়ার মধ্যে ঐতিহাসিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। বহুপ্রতীক্ষিত বৈঠকের দিকে সবাই চেয়ে আছেন। কেননা সেই বৈঠকের মাধ্যমে উত্তর কোরিয়ার শীর্ষ নেতা কিম জং-উন ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের রাজনীতি নতুন মেরুকরণ সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।

উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক অস্ত্র ও ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালানো কার্যক্রম ভবিষ্যতে কোন দিকে মোড় নেয়, সেটাও নির্ভর করছে এ বৈঠকের আলোচনার ওপর। সংগত কারণেই বৈঠকটি অনেক বেশি তাৎপর্যপূর্ণ। তাই বেশ গুরুত্বের সঙ্গে বহুল আলোচিত এ বৈঠক নিয়ে সংবাদ পরিবেশ করছে বিশ্ব গণমাধ্যম। পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বিশ্লেষণ করা হচ্ছে দুই দেশের সম্ভাবনা ও শঙ্কার নানা দিক। খুঁটিনাটি বিষয় নিয়েও প্রতিবেদন করা হচ্ছে। তেমনই একটি প্রতিবেদন করেছে বিজনেস ইনসাইডার ও দ্য ইন্ডিপেনডেন্টসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম।

বিজনেস ইনসাইডারের প্রতিবেদনে বলা হয়, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ঐতিহাসিক বৈঠক সামনে রেখে সিঙ্গাপুরে পৌঁছেছেন উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উন। ব্যাপক নিরাপত্তার সঙ্গে বৈঠকে যোগ দিতে উত্তর কোরিয়ার নেতা তাঁর ব্যক্তিগত টয়লেটও সঙ্গে নিয়েছেন।

এ বিষয়ে কিম জং-উন বলেন, ‘মার্সিডিজ গাড়িসহ তিনি সব সময় টয়লেট সঙ্গে নিয়ে ভ্রমণ করেন।’ কেন তিনি সব সময় টয়লেট সঙ্গে নিয়ে ভ্রমণ করেন—সাধারণ মানুষের মনে এ নিয়েও কৌতূহল দেখা দিয়েছে।

২০১৫ সালে দক্ষিণ কোরিয়ান সংবাদমাধ্যম ডেইলি এনকে এক প্রতিবেদনে জানায়, কিম জং-উনের ব্যক্তিগত ট্রেনে শুধু একাধিক বিশ্রামকক্ষ নয়, ছোট অথবা মাঝারি আকারে গাড়ি থাকে। পাহাড়ি ভূখণ্ড বা তুষারের মতো নকশা করা বিশেষ পরিবহনে তিনি ভ্রমণ করেন।

খবরে বলা হয়, টয়লেটটি ভ্রাম্যমাণ বা সহজে বহনযোগ্য। কিম জং-উনের স্বাস্থ্যগত বিষয়ে গোপনীয়তা রক্ষার জন্যই তিনি সঙ্গে নিয়ে যান টয়লেট।

উত্তর কোরিয়ার গার্ড কমান্ড ইউনিটের সাবেক সদস্য লি ইউন-কেওল ওয়াশিংটন পোস্টকে বলেন, উত্তর কোরিয়ার নেতা যখন কোথাও ভ্রমণ করেন, তখন পাবলিক টয়লেট ব্যবহারের পরিবর্তে তিনি তাঁর ব্যক্তিগত টয়লেট ব্যবহার করেন। তিনি বলেন, বর্জ্য পদার্থে তাঁর স্বাস্থ্যগত বিষয়ে তথ্য থাকে। তাই তাঁরা সেটা ফেলে রেখে আসতে পারেন না।

অসুস্থতা এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য বিষয়ে তথ্যের জন্য কিমের প্রস্রাব নির্দিষ্ট সময় অন্তর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। সেই সঙ্গে স্বাস্থ্যগত বিষয়ে গোপনীয়তা রক্ষার জন্যই কিম জং-উন পোর্টেবল টয়লেট বা সহজে বহনযোগ্য টয়লেট ব্যবহার করেন বলে খবরে বলা হয়।

প্রসঙ্গত, রোববার দেশ দুটির শীর্ষ দুই নেতা ট্রাম্প ও কিম সিঙ্গাপুরে পৌঁছান। দেশটির সান্তোসা দ্বীপে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ও উত্তর কোরিয়ার নেতা বৈঠক করবেন আগামীকাল মঙ্গলবার। এটাই হবে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার ক্ষমতাসীন কোনো নেতার প্রথম বৈঠক। এই বৈঠকের মাধ্যমে কিম পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা থেকে সরে আসবেন বলে আশা করছে যুক্তরাষ্ট্র। বৈঠকে কোরীয় উপদ্বীপকে পারমাণবিক অস্ত্রমুক্তকরণ, শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠা নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে।