ত্রিপুরা, মিজোরাম ও আসামের বহু গ্রাম প্লাবিত, যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন

গৃহপালিত পশুসহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে ছুটছে বানভাসি মানুষ। সাবরুম, ত্রিপুরা, ১৪ জুন। ছবি: প্রথম আলো
গৃহপালিত পশুসহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে ছুটছে বানভাসি মানুষ। সাবরুম, ত্রিপুরা, ১৪ জুন। ছবি: প্রথম আলো

দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর আবির্ভাবেই পানিতে ভাসছে উত্তর-পূর্ব ভারতের বিস্তীর্ণ এলাকা। ত্রিপুরা, মিজোরাম ও আসামের পরিস্থিতি ইতিমধ্যেই ভয়াবহ। বহু গ্রাম প্লাবিত। ধসে যোগাযোগ-বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বহু এলাকায়। পরিস্থিতি সামাল দিতে সেনা ও আধা সেনা জওয়ানদের তলব করা হয়েছে।

ত্রিপুরায় বর্ষার শুরুতেই অন্তত চারজন প্রাণ হারিয়েছেন। বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী দক্ষিণ ত্রিপুরা ও ঊনকোটি জেলার বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ। বেশির ভাগ নদীই বিপৎসীমার ওপর দিয়ে বইছে।

গতকাল বুধবার রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতি আকাশপথে খতিয়ে দেখেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব। তিনি আগরতলায় সাংবাদিকদের জানান, রাজ্য সরকার বন্যার্তদের উদ্ধার ও ত্রাণের জন্য ভারতীয় বায়ুসেনার হেলিকপ্টার তলব করেছে।

ইতিমধ্যেই দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনীর জওয়ানেরা নেমে পড়েছেন উদ্ধারকাজে। রাজ্যের প্রায় ২০০টি ত্রাণশিবিরে ১৫ হাজার পরিবারের ৬ হাজার ৫০০ মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।

মিজোরাম সরকারের বিবৃতি থেকে জানা যায়, প্রবল বর্ষণে রাজ্যটির অবস্থাও ভয়াবহ। ধসে বহু গ্রাম যোগযোগ-বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ইম্ফলে রাজ্যের একমাত্র বিমানবন্দরটিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বহু মানুষ ত্রাণশিবিরে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছেন। ইতিমধ্যেই চলতি মৌসুমে বিভিন্ন দুর্ঘটনায় দুর্যোগে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ২৫ জন।

পাহাড় থেকে জল নামতে শুরু করায় ফুঁসছে আসামের ব্রহ্মপুত্র। বহু গ্রাম ভাসিয়ে দিয়েছে খরস্রোতা এই নদী। ব্রহ্মপুত্রের পাশাপাশি বরাক নদীতেও পানি বাড়ছে।

জাতীয় মহাসড়কে উঠে গেছে পানি। আগরতলা, ত্রিপুরা। ছবি: প্রথম আলো
জাতীয় মহাসড়কে উঠে গেছে পানি। আগরতলা, ত্রিপুরা। ছবি: প্রথম আলো

ইতিমধ্যেই রাজ্যের কাজিরাঙা অভয়ারণ্যে ঢুকে পড়েছে ব্রহ্মপুত্রের পানি। বন্য প্রাণীরা পড়েছে বিপাকে। বরাকের পানিতে ভাসছে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী করিমগঞ্জের বিভিন্ন গ্রামও।

উত্তর-পূর্ব ভারত এমনিতেই বর্ষাপ্রবণ এলাকা। দেশের ৩০ শতাংশ বৃষ্টিপাতই হয় এই এলাকায়। আর এই বৃষ্টির হাত ধরে বন্যা আর ভূমিধস লেগেই থাকে প্রতিবছর। এই বছর বর্ষার শুরুতেই ভেসে গিয়েছে বহু গ্রাম। তাই আগামী দিনে আরও বড় বিপদের আশঙ্কায় উত্তর-পূর্বাঞ্চলবাসী।

অন্যদিকে, আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে খবর, আগামী ২৪ ঘণ্টায় ত্রিপুরা ছাড়াও আসাম, মণিপুর, মেঘালয়, মিজোরাম ও নাগাল্যান্ডে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। জারি করা হয়েছে বাড়তি সতর্কতা।