আসাম, ত্রিপুরা, মণিপুর ও মিজোরাম বন্যায় ভাসছে

জলমগ্ন আগরতলা। ছবি: প্রথম আলো
জলমগ্ন আগরতলা। ছবি: প্রথম আলো

প্রবল বৃষ্টিতে ভারতের আসাম, ত্রিপুরা, মণিপুর ও মিজোরাম প্লাবিত। বেশির ভাগ নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে বইছে। চার লাখেরও বেশি মানুষ বন্যায় ঘরছাড়া। আবহাওয়া দপ্তর থেকে আরও ভারী বৃষ্টির সতর্কতা রয়েছে।
বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত আসাম। শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত আসাম রাজ্য দুর্যোগ মোকাবিলা কর্তৃপক্ষ (এএসডিএমএ)-এর হিসাব অনুযায়ী রাজ্যের সাতটি জেলার ৬৬৮টি গ্রামের ৩ লাখ ৮৬ হাজার ৫৭০ মানুষ বন্যা দুর্গত। বন্যার পানিতে ৩২৫টি বাড়ি ভেসে গিয়েছে।

বন্যায় হাবুডুবু খাচ্ছে ত্রিপুরার ঊনকোটি জেলা। ছবি: প্রথম আলো
বন্যায় হাবুডুবু খাচ্ছে ত্রিপুরার ঊনকোটি জেলা। ছবি: প্রথম আলো

সেই সঙ্গে রয়েছে ধস। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে রয়েছে ধসের খবর। রাজধানী গুয়াহাটির নীলাচল পাহাড়ে কামাখ্যা মন্দিরে ২২ জুন থেকে অম্বুবাচীর মেলা। প্রায় ৫ লাখ পুণ্যার্থী ভিড় করেন প্রতি বছর। শুক্রবার ধসের কবলে পড়েছে কামাখ্যা পাহাড়ে যাওয়ার রাস্তাও। ধসের কারণে রেল ও সড়ক পথেও বিপত্তি দেখা দিয়েছে।
শুধু আসাম নয়, ধসের ফলে মণিপুর, মিজোরাম ও ত্রিপুরারও যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। আজ ত্রিপুরার নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয় বলে জানা গিয়েছে। রাজধানী আগরতলার বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন। রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে আজ ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব বলেন, রাজ্যের পরিস্থিতি ভয়াবহ। গত ৩১ বছরে এত খারাপ অবস্থা হয়নি। তবে পরিস্থিতি মোকাবিলায় রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকার একযোগে কাজ করছে বলেও মুখ্যমন্ত্রী মন্তব্য করেন।

বন্যার্তদের উদ্ধারে এনডিআরএফ জওয়ানরা। ছবি: প্রথম আলো
বন্যার্তদের উদ্ধারে এনডিআরএফ জওয়ানরা। ছবি: প্রথম আলো

ত্রিপুরায় উদ্ধার কাজ চালানোর জন্য গাজিয়াবাদ থেকে উড়িয়ে আনা হয়েছে দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনীর জওয়ানদের। সেই সঙ্গে সেনাবাহিনীর নেতৃত্বাধীন আসাম রাইফেলসও উদ্ধার কাজে নেমেছে। এদিন মুখ্যমন্ত্রী হেলিকপ্টারে বন্যা বিধ্বস্ত এলাকা সফর করেন।

বন্যার্তদের সঙ্গে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব। ছবি: প্রথম আলো
বন্যার্তদের সঙ্গে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব। ছবি: প্রথম আলো

একই অবস্থা মণিপুর ও মিজোরামেও। মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন্দ্র সিং টুইট করে জানিয়েছেন, ধসে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে তাঁর রাজ্য। এ ছাড়া বন্যায় বহু এলাকা প্লাবিত। নামানো হয়েছে সেনাবাহিনী। ধসে বিপর্যস্ত মিজোরামও। বহু এলাকা জলমগ্ন। কয়েক হাজার মানুষ আশ্রয় শিবিরে এসে উঠেছেন।
গত ৪৮ ঘণ্টায় উত্তর পূর্বাঞ্চলে দুর্যোগে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ১৮। সব মিলিয়ে দক্ষিণ পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর শুরুতেই বিপর্যস্ত ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চল।