নিউটন-ডারউইনের সমাধির মাঝখানে চিরঘুমে হকিং

স্যার আইজাক নিউটন ও চার্লস ডারউইনের কবরের মাঝখানে গত শুক্রবার সমাধিস্থ করা হয় হকিংকে। একই দিনে মহাকাশে পাঠানো হয়েছে তাঁর কণ্ঠের বিশেষ বার্তা। ছবি: রয়টার্স
স্যার আইজাক নিউটন ও চার্লস ডারউইনের কবরের মাঝখানে গত শুক্রবার সমাধিস্থ করা হয় হকিংকে। একই দিনে মহাকাশে পাঠানো হয়েছে তাঁর কণ্ঠের বিশেষ বার্তা। ছবি: রয়টার্স

বিজ্ঞানের দুই মহীরূহ পূর্বসূরির মাঝে স্থান পেলেন স্টিফেন হকিং। গত শুক্রবার স্যার আইজাক নিউটন ও চার্লস ডারউইনের কবরের মাঝখানে সমাধিস্থ করা হয়েছে বিশ্বখ্যাত পদার্থবিদ হকিংকে। একই দিনে মহাকাশে পাঠানো হয়েছে হকিংয়ের কণ্ঠের বিশেষ বার্তা।

দ্য টেলিগ্রাফের খবরে বলা হয়েছে, গত শুক্রবার যুক্তরাজ্যের স্থানীয় সময় বিকেলে হাজারো মানুষের উপস্থিতিতে স্টিফেন হকিংয়ের দেহভস্ম ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবেতে সমাধিস্থ দেওয়া হয়। গত ১৪ মার্চ মারা যান এই বিশ্বখ্যাত পদার্থবিদ। তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর।

ওই দিনই পৃথিবীর সবচেয়ে কাছের কৃষ্ণগহ্বরে পাঠানো হয়েছে স্টিফেন হকিংয়ের কণ্ঠে বিশেষ বার্তা। পৃথিবী থেকে কৃষ্ণগহ্বরটির দূরত্ব সাড়ে তিন হাজার আলোকবর্ষ। ইউরোপীয় স্পেস এজেন্সির বিজ্ঞানীরা হকিংয়ের স্মরণে এই পদক্ষেপ নেয়। হকিংয়ের পরিবারের সদস্যরা বলেছেন, এই অনুষ্ঠানটি ছিল ‘প্রতীকী’।

ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবে কর্তৃপক্ষ এক টুইট বার্তায় বলেছে, স্টিফেন হকিংয়ের দেহভস্ম বিজ্ঞানীদের জন্য নির্ধারিত স্থানে সমাহিত করা হয়েছে। এ সময় হকিংয়ের পরিবারের সদস্যরা ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।

গত ১৪ মার্চ মারা যান বিশ্বখ্যাত পদার্থবিদ স্টিফেন হকিং। তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর। ছবি: এএফপি
গত ১৪ মার্চ মারা যান বিশ্বখ্যাত পদার্থবিদ স্টিফেন হকিং। তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর। ছবি: এএফপি

২১ বছর বয়স থেকেই দুরারোগ্য মোটর নিউরন রোগে ভুগছিলেন হকিং। তবে এই অসুস্থতা তাঁর জ্ঞান অন্বেষণে বাধা হয় দাঁড়াতে পারেনি। হকিংয়ের সবচেয়ে বড় কৃতিত্ব হলো আইনস্টাইনের সাধারণ আপেক্ষিকতা এবং বোর-হাইজেনবার্গের কোয়ান্টামতত্ত্বকে মিলিয়ে দেওয়া। ব্ল্যাকহোল বা কৃষ্ণগহ্বর ও আপেক্ষিকতা নিয়ে গবেষণার জন্য বিখ্যাত ছিলেন ব্রিটিশ এই পদার্থবিদ। পদার্থবিদ্যার ইতিহাসে অন্যতম সেরা তাত্ত্বিক হিসেবে বিবেচনা করা হয় স্টিফেন হকিংকে।

ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবেতে স্টিফেন হকিংকে সমাহিত করার অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজনীতিক জেরেমি করবিন, অভিনেতা বেনেডিক্ট কাম্বারব্যাচ, সুরকার নাইল রজার্সসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষেরা। এ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রাখা বিজ্ঞানীরা।

১৯৮৮ সালে ‘আ ব্রিফ হিস্ট্রি অব টাইম’ বইয়ের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী বিখ্যাত হয়ে ওঠেন হকিং। বইটিতে তিনি মহাবিশ্বের সৃষ্টি রহস্য নিয়ে তত্ত্ব দেন। আন্তর্জাতিকভাবে বেস্ট সেলার হিসেবে বইটির এক কোটি কপি বিক্রি হয়। মহাবিশ্ব নিয়ে প্রকাশিত তাঁর সর্বশেষ বই ‘দ্য গ্র্যান্ড ডিজাইন’।