কেজরিওয়ালদের ভর্ৎসনা আদালতের

অরবিন্দ কেজরিওয়াল
অরবিন্দ কেজরিওয়াল

দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল ও তাঁর মন্ত্রিসভার সদস্যদের ভর্ৎসনা করলেন দিল্লি হাইকোর্ট। দিল্লির উপরাজ্যপাল অনিল বাইজলের বাড়িতে ধরনা দেওয়ার জন্যই এ ভর্ৎসনা। আজ সোমবার উচ্চতর আদালত জানিয়ে দেন, এভাবে কারও বাড়ি বা অফিসে গিয়ে অবস্থান ধর্মঘট করা যায় না। 

প্রায় এক সপ্তাহ ধরে উপরাজ্যপাল নিবাসের অফিস ঘরে ধরনা দিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়ালসহ দিল্লির উপমুখ্যমন্ত্রী মনীশ সিসোদিয়া, গ্রামোন্নয়নমন্ত্রী গোপাল রাই ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী সত্যেন্দ্র জৈন। তাঁদের অভিযোগ, কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশ ও উপরাজ্যপালের মদদে রাজ্যের আইএএস অফিসাররা সরকারের সঙ্গে অসহযোগিতায় নেমেছেন। অঘোষিত ধর্মঘট করছেন। ওই ধর্মঘটের প্রতিবাদেই তাঁদের এই ধরনা। ধরনার জেরে অসুস্থ হয়ে পড়ায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী সত্যেন্দ্র জৈনকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়।
আজ সকালে দিল্লির বিজেপি নেতা বিজেন্দ্র গুপ্তা মুখ্যমন্ত্রী ও তাঁর সহকর্মীদের ধরনার বিরুদ্ধে আদালতে যান। ওই আবেদনের সূত্রেই দিল্লি হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ জানান, এভাবে কারও বাড়ি বা অফিসে গিয়ে অবস্থান করা যায় না।
মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দিল্লির সরকারি কর্তাদের সংঘাতের সূত্রপাত গত ফেব্রুয়ারি মাসের শেষাশেষি। মুখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়ালের সরকারি বাসভবনে রাতে এক বৈঠক ডাকা হয়। অভিযোগ, সেই বৈঠকে গেলে রাজ্যের মুখ্য সচিব অংশু প্রকাশকে মারধর করা হয়। সরকারিভাবে সেই অভিযোগ অস্বীকার করা হলেও বিষয়টি দিল্লি পুলিশের বিবেচনাধীন। রাজ্য সরকারের অভিযোগ, ওই ঘটনার পর থেকেই দিল্লির আইএএস অফিসাররা সরকারের সঙ্গে অসহযোগিতা করে চলেছেন। তাঁরা কোনো বৈঠকে উপস্থিত হচ্ছেন না। সরকারি নির্দেশ মানছেন না। কোনো ফাইল সই করছেন না। ফলে রাজ্যের উন্নয়ন থমকে রয়েছে। উপরাজ্যপাল নিবাসের অফিস ঘরে এরই প্রতিবাদে মুখ্যমন্ত্রীসহ অন্য মন্ত্রীদের ধরনা। গত রোববার আইএএস কর্তাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করে অবশ্য বলা হয়, তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগের কোনো সত্যতা নেই। তাঁরা কখনো রাজনৈতিক ভাবনায় প্রভাবিত হন না।
দিল্লি বিধানসভার মোট আসন ৭০। আম আদমি পার্টি ২০১৫ সালে ভোটে ৬৭ আসন পেয়ে সরকার গড়লেও কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে প্রতি পদে ঝগড়ায় জড়িয়ে পড়ে। সেই বিবাদ আজও অব্যাহত। নামে রাজ্য হলেও দিল্লি পূর্ণ রাজ্য নয়। রাজধানী হওয়ার কারণে দিল্লির পুলিশ ও জমি কেন্দ্রের অধীন। আমলারাও সরাসরি কেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণে। উপরাজ্যপালই দিল্লির সর্বেসর্বা। কর্তৃত্বের এই অধিকার নিয়েই উপরাজ্যপালের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়ালের সংঘাত—এই মুহূর্তে যা অবস্থান ধর্মঘটের রূপ নিয়েছে।